শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩২ পূর্বাহ্ন

‘সমুদ্র বিলাস’ নামে হচ্ছে টাইটানিক-টু

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৯
  • ৭২৩ বার

সিনেমায় টাইটানিক চরিত্র ক্যাল বলেছিলেন, ‘এমনকি ঈশ্বরও এই জাহাজ ডুবাতে পারবে না।’ কিন্তু ১৯১২ সালে প্রথম যাত্রায়ই নির্মম পরিণতি বরণ করেছিল টাইটানিক। নির্মাতা জেমস ক্যামরনের পরিচালিত সিনেমার মধ্য দিয়ে টাইটানিকের অনেক অজানা কাহিনী এখন মানুষের জানা। ইতিহাসের এই সমুদ্র বিলাস আবারও ফিরে আসছে বাস্তবে। নির্মিত হচ্ছে টাইটানিক-টু।
যাত্রা শুরুতে ভিন্নতা: ১৯১২ সালে ১০ এপ্রিল ইতিহাস বিখ্যাত টাইটানিক জাহাজের যাত্রা শুরু হয়েছিল ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন বন্দরে থেকে। গন্তব্য ছিল আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহর। সে সময়ের প্রেক্ষাপটে এটি ছিল এক সপ্তাহের একটি যাত্রা। অর্ধেকেরও বেশি রাস্তা পাড়ি দেওয়ার পর ১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল একটি বিরাট বরফ খন্ডের সঙ্গে ধাক্কায় ফুটো হয়ে যায় জাহাজটি। এই ধাক্কার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আটলান্টিক মহাসাগরের হিমশীতল পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল টাইটানিক। যাত্রা শুরুর ক্ষেত্রে নতুন টাইটানিকে থাকছে ভিন্নতা। টাইটানিক টু-এর যাত্রা শুরু হবে আরব আমিরাতের দুবাই থেকে। তবে, প্রথম টাইটানিকের মতো এর গন্তব্য একই অর্থাৎ আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহর। মজার ব্যপার হলো নতুন টাইটানিক তার প্রথম যাত্রায় সেই এলাকাটির ওপর দিয়েই যাবে যেখানে আগের টাইটানিক ডুবে গিয়েছিল।
জানা গেছে, প্রথম যাত্রায় দুবাই থেকে নিউ ইয়র্ক যাওয়ার পর টাইটানিক-টু যাত্রা করবে সেই গন্তব্যে যেখান থেকে প্রথম টাইটানিক যাত্রা শুরু করেছিল। অর্থাৎ টাইটানিক-টুয়ের দ্বিতীয় যাত্রাটি হবে নিউ ইয়র্ক থেকে ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন বন্দর। পরে এটি প্রথম টাইটানিকের রুট নিউ ইয়র্ক এবং সাউদাম্পটনের মধ্যে নিয়মিত যাত্রী আনা-নেওয়া করবে।
মালিকানা এবং পরিচালনা: আসল টাইটানিকের মালিকানাধীন কোম্পানিটি ছিল ‘হোয়াইট স্টার লাইন’। আর নতুন টাইটানিকের পরিচালক ও মালিক পক্ষ হলো-‘ব্লু স্টার লাইন’। অস্ট্রেলিয়ার জাহাজ ব্যবসায়ী ও সংসদ সদস্য ক্লিভ পালমার নতুন টাইটানিকের মালিক। ১৯১১ সালে ব্রিটিশ কোম্পানি ব্লু স্টার লাইন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন উইলিয়াম ও এডমুন্ড ভেস্টি নামে দুই ব্রিটিশ ভাই।আসল টাইটানিককে নকল করে দ্বিতীয় টাইটানিক নির্মাণ করলেও এর শক্তির উৎস হবে ভিন্ন। আসল টাইটানিক ছিল বাষ্পচালিত। কয়লা পুড়িয়ে এর শক্তি পাওয়া যেত। এক্ষেত্রে, নতুন জাহাজটির শক্তি উৎপাদনে কাজ করবে ডিজেল-ইলেক্ট্রিক সিস্টেম। এর জন্য আলাদা চারটি ডিজেল জেনারেটিং সেট থাকবে। পুরনো টাইটানিকে যেখানে কয়লা পুড়ানো ইঞ্জিন ছিল নতুনটিতে সেই জায়গায় থাকবে জাহাজের ক্রুদের কোয়ার্টার।
নতুন টাইটানিকের মালিক ক্লিভ পালমার একজন ক্ষেপাটে বিলিয়নিয়ার হিসেবে খ্যাত। জনপ্রিয়তার জন্য তিনি মাঝেমাঝেই বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এর আগে তিনি নিজের গলফ মাঠে জুরাসিক পার্কের মতো একটি ডাইনোসর থিম পার্ক নির্মাণের প্রয়াস চালিয়েছিলেন। ২০১২ সালে তিনি যখন টাইটানিক টু নির্মাণের ঘোষণা দেন সে সময়টিতে তিনি অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় রাজনীতিতেও সক্রিয় হয়েছিলেন। ইতিপূর্বে তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, সিআইএ, রকফেলার ফাউন্ডেশন এবং গ্রিনপিসের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছিলেন। ব্রেক্সিটের কারণে নির্মাণকাজ কিছুটা ব্যাহত হলেও ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর পালমার ঘোষণা করেন, ‘প্রত্যাশা অনুযায়ী ২০২২ সালের মধ্যেই যাত্রা শুরু করবে টাইটানিক-টু।’ তুমুল জনপ্রিয়তা পেলেও অতীতের জাহাজ নকল করার জন্য অনেকে পালমারকে বিদ্রুপও করেছেন। পুরনো টাইটানিকের পরিচালক কোম্পানি হোয়াইট স্টার লাইনের উত্তরাধিকারী কুনার্ড লাইন দাবি করেছেন, অতীতের বিয়োগান্ত ঘটনাটিকে তারা এখনো শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তাই ওই জাহাজের নকল আরেকটি জাহাজকে তারা যথার্থ মনে করেন না।
প্রত্যেক যাত্রীর জন্য লাইফবোট: যেহেতু আসল টাইটানিক ডুবে যাওয়ার ঘটনায় বিপুল পরিমাণ প্রাণহানি ঘটেছিল তাই দ্বিতীয় টাইটানিকের ক্ষেত্রে যাত্রীদের সুরক্ষা ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আসল টাইটানিক ডুবে যেতে পারে সেই সময়ে এটি কারও ভাবনাতেই ছিল না। তাই এতে যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ নৌকা এবং লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থাও ছিল না। এর ফলে টাইটানিক ডুবে যাওয়ার পর দেড় হাজারেরও বেশি নারী-পুরুষ এবং শিশুর প্রাণহানি ঘটেছিল। ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার আলোকে নতুন টাইটানিকে থাকবে পর্যাপ্ত যাত্রী সুরক্ষা ব্যবস্থা। নিরাপত্তাই হবে এই জাহাজের প্রধান ব্যবস্থাপনা। জানা গেছে, ২ হাজার ৭০০ যাত্রীর এই জাহাজে যে পরিমাণ লাইফবোট থাকবে তা সাড়ে তিন হাজার যাত্রীর জন্য যথেষ্ট। আসল টাইটানিকের মাত্র ১৬টি কাঠের নৌকা ছিল, যা দিয়ে ১ হাজার ১৭৮ জনের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছিল। প্রয়োজনের তুলনায় এই সংখ্যাটি ছিল তিন ভাগের এক ভাগ মাত্র। নতুন টাইটানিকে নিরাপত্তার জন্য ‘সেফটি ডেক’ নামে আলাদা একটি অংশ থাকবে। আসল টাইটানিকে এমনটি ছিল না।
খরচ: ১৯১২ সালে আসল টাইটানিক যখন যাত্রা শুরু করে তখন এটিই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল বাষ্পচালিত জাহাজ। সে সময়ে অন্যান্য জাহাজের তুলনায় এতে চড়ে বসা ছিল অনেক খরচের ব্যাপার। ওই জাহাজটির প্রথম শ্রেণির একটি কেবিনের ভাড়া ছিল ৮৭০ পাউন্ড, বর্তমান বাজার মূল্যে যা ১ লাখ মার্কিন ডলারের সমান। অর্থাৎ কোনো বাংলাদেশি যদি এই কেবিনে চড়ে বসেন তবে এক ট্রিপেই তার ৮০ লাখ টাকারও বেশি খরচ হয়ে যাবে। হলিউড অভিনেতা লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও যার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন, অর্থাৎ টাইটানিক জাহাজের সেই হতভাগ্য প্রেমিক যুবক জ্যাক ডসন যে শ্রেণিতে চড়ে বসেছিলেন তার টিকিটের মূল্য ছিল ১৫ থেকে ৪০ ডলারের মধ্যে। সেই হিসাবে, আজকের দিনে ওই টিকিটের মূল্যমান হবে ৩৫০ থেকে থেকে ৯০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২৮ হাজার থেকে ৭২ হাজার টাকার মধ্যে। নতুন টাইটানিকের টিকিটের মূল্য কত হবে তা এখনো প্রকাশ না করা হলেও পুরনো দিনের অনুপাতে বর্তমানে যে মূল্যমান পাওয়া যায় তার চেয়ে কোনো অংশেই কম হবে না।
শ্রেণি বৈষম্য: টাইটানিক জাহাজের সেই প্রেমিক-প্রেমিকা জ্যাক আর রোজ ছিলেন দুই জগতের বাসিন্দা। কারণ রোজ ছিলেন অভিজাত শ্রেণির এক নারী। আর জ্যাক ছিলেন সহায়-সম্বলহীন ভবঘুরে এক যুবক, টাইটানিকে চড়ার খরচ জোগাতে যাকে নানা উপায় অবলম্বন করতে হয়েছিল। জাহাজে তাদের দুজনের অবস্থানও ছিল ভিন্ন শ্রেণিতে। জ্যাক ছিলেন তৃতীয় শ্রেণির যাত্রী আর রোজ ছিলেন প্রথম শ্রেণিতে। তাদের মাঝখানে ছিল দ্বিতীয় শ্রেণি। যদিও ঘটনাচক্রে তাদের মধ্যে দেখা হয়ে যায় এবং মাত্র তিন দিনের প্রেম এক করুণ পরিণতির শিকার হয়। নতুন টাইটানিকের শ্রেণিবিন্যাসও আসল টাইটানিকের পুরোপুরি নকল। অর্থাৎ এই জাহাজটিতে তৃতীয় শ্রেণির যাত্রীদের জন্য থাকবে কমমূল্যের ছোট ছোট কামরা। আর প্রথম শ্রেণি বা অভিজাত ব্যক্তিবর্গের জন্য থাকবে অত্যধিক বিলাসবহুল বড় কামরা। অনেকেই মজা করে বলছেন, জ্যাক আর রোজের মতো আধুনিক প্রেমিক-প্রেমিকারাও হয়তো কয়েকদিনের সামুদ্রিক শ্রেণিবৈষম্য ভেঙে দিতে চাইবেন। ২০১৩ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টাইটানিক টু-এর মালিক ক্লিভ পালমার দাবি করেন, জাহাজটির অভিষেক যাত্রায় তিনি তৃতীয় শ্রেণিতে চড়ে ভ্রমণ করবেন। সামাজিক মাধ্যমে এর প্রতিক্রিয়ায় অনেকেই বলেন, পুরো ভ্রমণে তিনি হয়তো প্রথম শ্রেণিতে থাকা একজন রোজকে খুঁজে বেড়াবেন।
নির্মাণ ব্যয় ও নকশা: ১৯১২ সালে আসল টাইটানিক নির্মাণ করতে খরচ হয়েছিল মাত্র সাড়ে সাত মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ বর্তমান মূল্যমান অনুযায়ী, আসল টাইটানিকের নির্মাণ ব্যয় ছিল প্রায় ১৮০ মিলিয়ন ডলারের সমান। তবে, টাইটানিক-টু নির্মাণ করতে ব্লু স্টার লাইন কোম্পানির প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছে। আগের জাহাজের চেয়ে নতুন টাইটানিকের সাজসজ্জা হবে আরও সুচারুরূপে। আধুনিক সুবিধাসহ এতে থাকবে সুইমিং পুল, জিম এবং আরও অনেক কিছু। তবে, এসব কিছু এমনভাবে সাজানো হবে যা যাত্রীদের আসল টাইটানিকে চড়ার অনুভূতি দেবে। আসল টাইটানিকে একটি উষ্ণ জলের জলাধার ছিল। টাইটানিক-টু’তে একই ধরনের একটি জলাধার থাকবে। তবে, অবশ্যই সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে না এই পুকুর। জিমের ব্যবস্থা ছিল আসল টাইটানিকেও। সেটিতে ছিল একটি বৈদ্যুতিক উট, একটি বৈদ্যুতিক ঘোড়া, বেশ কিছু সাইকেল চালনা যন্ত্র এবং শারীরিক কসরতের কিছু সরঞ্জাম। নতুন টাইটানিকেও একই ব্যবস্থা থাকবে। পুরনোটির মতো আরও থাকবে একটি স্কোয়াশ কোর্ট। তখনকার সময়ে এই কোর্টে খেলতে যাত্রীদের প্রতি ঘণ্টার জন্য ৫০ সেন্ট বা হাফ ডলার খরচ করতে হতো। বর্তমান সময়ে এর মূল্যমান দাঁড়ায় প্রায় ১৩ মার্কিন ডলার।
১৯১২ সালের টাইটানিকে প্রথম শ্রেণির পুরুষ যাত্রীদের জন্য একটি ধূমপান কক্ষও ছিল। নিশ্চিতভাবেই দ্বিতীয় টাইটানিকে ওই কক্ষটি রাখা হবে। তবে, এবার হয়তো পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সেখানে প্রবেশের সুযোগ পাবেন। পুরনো টাইটানিকের নকশাকারী থমাস এন্ড্রুজ নাকি জাহাজটি ডুবে যাওয়ার আগ মুহূর্তে ধূমপান কক্ষেই বসেছিলেন। অন্তত টাইটানিক সিনেমায় এমনটিই দেখা গেছে। ব্যতিক্রম হিসেবে নতুন টাইটানিকে থাকবে এয়ারকন্ডিশনের ব্যবহার, পুরনোটির সময়ে যা ছিল অকল্পনীয়। থাকবে টেলিভিশন এবং ইন্টারনেট ব্যবস্থাও। এছাড়া নতুন টাইটানিকের অন্দরমহলগুলো যতটুকু সম্ভব আসল টাইটানিকের মতো করেই রাখা হবে। সুইডেনের টিলবার্গ ডিজাইন পুরনো টাইটানিকের নকশাগুলোকে ইতিহাসের পাতা থেকে তুলে এনে বাস্তব রূপ দিতে যাচ্ছে।
আয়তন কি একই থাকবে?: আসল টাইটানিকের বিশাল আয়তনই ছিল এর সবচেয়ে বড় পরিচয়। সে সময় এটি ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাহাজ। পরে অবশ্য এর চেয়েও বড় জাহাজ নির্মিত হয়েছে। এক্ষেত্রে নতুন টাইটানিকের আয়তন কত বড় হবে তা নিয়ে অনেকেই জানতে উৎসুক। জানা গেছে, আয়তনের দিক থেকে আসল টাইটানিকের চেয়ে নতুন টাইটানিক কিছুটা বড় হতে পারে। তবে, দেখতে তা পুরনোটির মতোই হবে। আসল টাইটানিকে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ছিল ২ হাজার ২৪০ জনের। সেই জায়গায় নতুন টাইটানিকে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা হবে ২ হাজার ৪০০ জনের মতো। এছাড়া এই জাহাজে আরও ৯০০ জন ক্রুয়ের জন্য আবাসন ব্যবস্থা থাকবে। ১০ তলা বিশিষ্ট এই জাহাজটি প্রায় ৮৮৩ ফুট দীর্ঘ হবে, আর উচ্চতা হবে ১৭৫ ফুট। আসল টাইটানিকে যেসব রেস্তোরাঁ এবং ডাইনিং রুম ছিল, নতুন টাইটানিকেরগুলোও দেখতে ঠিক একই রকম হবে। নতুন টাইটানিকের কয়েকটি ফাঁস হওয়া স্থিরচিত্রে পুরনোটির মতো পার্সিয়ান ক্যাফের অস্তিত্ব দেখা গেছে। পুরনোটির তুলনায় নতুন জাহাজটির বাহ্যিক অংশে কিছু ভিন্নতা দেখা যাবে। এর মূল ডেকের সামনের অংশটি ধনুকের মতো বাঁকা হবে। আধুনিক জাহাজে এমন গঠনের মধ্য দিয়ে জ্বালানি সাশ্রয় করা যায়। জাহাজের প্রবেশপথটি থাকবে পুরনোটির মতোই। এছাড়াও মন্দ আবহাওয়াকে মোকাবিলা করার জন্য থাকবে প্রযুক্তির ব্যবহার। আসল টাইটানিকের মতো যেন বরফের ধাক্কা খেতে না হয় সে জন্যও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকবে টাইটানিক-টু’তে। ব্যতিক্রম হিসেবে নতুনটিতে একটি হেলিপ্যাডও থাকছে। এর গতিবেগও হবে পুরনো জাহাজটির সমান। অর্থাৎ ঘণ্টায় এটি প্রায় ৪৫ কিলোমিটার বেগে চলবে। ফলে সাউদাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্ক পৌঁছাতে অন্তত এক সপ্তাহের একটি রাজসিক ভ্রমণ উপভোগ করবেন যাত্রীরা।
যেখানে নির্মিত হচ্ছে: টাইটানিক-টু নির্মাণ করা হচ্ছে চীনে। এই ধরনের বড় জাহাজ প্রথমবারের মতো চীনে নির্মিত হলেও এর আগে দেশটির বড় বড় কার্গো জাহাজ নির্মাণের অভিজ্ঞতা রয়েছে। টাইটানিক-টু নির্মাণের মধ্য দিয়ে বড় ধরনের যাত্রীবাহী জাহাজ নির্মাণশিল্পে পদার্পণ করতে যাচ্ছে চীন। জানা গেছে, জাহাজটি নির্মাণ করছে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন শিপইয়ার্ড কোম্পানি ‘সিজেসি জিংলিং’। আধুনিক সময়েও টাইটানিক টু-এর মতো বিরাট জাহাজ বিশাল বরফখ-ের কাছ থেকে মুক্ত নয়। কারণ, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অতীতের তুলনায় আরও বিপুল হারে বরফ গলছে। ফলে পানিতে ভাসমান বরফের পরিমাণও বেড়ে গেছে। চীনারা এই বরফের কাছ থেকে জাহাজটিকে বাঁচাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে বলে জানা গেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com