মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৮ পূর্বাহ্ন

উন্নয়নের যাত্রাপথে সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা চাই

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৯
  • ৩৬৯ বার

দেশে বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। দেশের বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় ধরনের আন্দোলন দিয়েই এটি শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন জনসমর্থন পেয়েছিল। তার পর অস্থিরতা তৈরি হয়েছে নিত্যব্যবহার্য ভোগ্যপণ্যের বাজারে। পেঁয়াজের দাম অবিশ্বাস্যভাবে প্রায় ১০ গুণ বেড়ে আড়াইশ টাকা ছুয়েছিল। সপ্তাহখানেক এই ধারা অব্যাহত থাকার পর সরকার পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক উঠিয়ে দিয়ে এবং নিজেরা আমদানি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। এত চেষ্টা এবং বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আসায় দাম কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক ওপরে রয়েছে পাইকারি ও খুচরা মূল্য। পেঁয়াজের সঙ্গে আদা-রসুনের দাম আগেই বেড়েছে। তার পর বাড়তে শুরু করেছে চালের দাম। হঠাৎ করে লবণের বাজারেও অস্থিরতার ঢেউ লেগেছিল। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সবজির দাম। অবশ্য নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ক্রেতাদের ভোগান্তির কারণ হলেও সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার মতো পদক্ষেপ নেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সৃষ্ট ক্ষোভ তারা অন্য ক্ষেত্রে ঝাড়তে চাইলে এর তাপ সরকারের গায়েই লাগবে।

এদিকে আশঙ্কার কারণ হয়ে উঠতে পারে নতুন গড়া আইন নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের প্রতিবাদ ও আন্দোলন। দুটি বিভাগে শুরু হয়ে এ আন্দোলন এখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা তাদের চিরাচরিত পথেই এগোচ্ছেন। অর্থাৎ সামনে শ্রমিক সংগঠনগুলো আন্দোলনে থাকবে, মালিকপক্ষ আড়ালে তাদের সমর্থন দেবে ও প্রকাশ্যে সরকারের সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করবে। পরিবহন খাতের আন্দোলনে একদিকে সারাদেশের যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন আর অন্যদিকে পণ্য পরিবহন ব্যাহত হওয়ায় বাজারে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। মনে হয়, সরকারকে নতুনভাবে আলোচনায় বাধ্য করার জন্যই পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা কৌশলে এগোচ্ছেন।

এই নতুন সড়ক আইন জনগণের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফসল। এটি প্রণয়নে একাধিক কমিটি হয়েছিল, বহু বৈঠক হয়েছে, খসড়া ও মার্জনাও বহুবার হয়েছে। ফলে পুরো প্রক্রিয়াকে বিকল করা সঠিক হবে না। সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে কেউ কেউ যাবতীয় অস্থিরতার পেছনে ষড়যন্ত্রের কথা বলেছেন। পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রতি বিএনপির দায়িত্বশীল নেতার পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই সমর্থনের কথা এসেছে। সরকারকে বিব্রত করার জন্য যে আন্দোলন, সেটিকেই সমর্থন দিয়ে নাগরিক সমাজের দীর্ঘদিনের দাবি উপেক্ষা করা কি সৎ রাজনীতি হবে?

সড়কে নৈরাজ্য চলতে পারে না, এত দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি মানা যায় না, পেঁয়াজ এবং অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের দামও এভাবে বাড়তে পারে না, বিশ্ববিদালয়ে দাবি আদায়ে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে আন্দোলন একমাত্র পথ হতে পারে না। সবকিছু সচল রাখতে সরকারের চেষ্টার কমতি নেই। নাগরিকদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে, আইন মানতে হবে, সেবার মান বাড়াতে হবে, নিজের কাজের দায় নিতে হবে, জবাবদিহি করতে হবে। নয়তো উন্নয়নের যাত্রাপথে বারবার হোঁচট খেতে থাকবে দেশ।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com