মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৫ অপরাহ্ন

বোরকা পরেই সাংবাদিক হিসেবে বিখ্যাত হচ্ছেন সাবিহা ও লতিফা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৯
  • ৩৩০ বার

ছোটো বেলা থেকে ইচ্ছে ছিল সাংবাদিক হবেন। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বাসিন্দা সাবিহা শেখ সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে। সব বাধা অতিক্রম করে সফল সাংবাদিক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে যখন পাকিস্তানের ডেরা ইসমাইল খানের গোমাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হন তিনি। কিন্তু ক্লাস করতে গিয়ে আচমকাই কতগুলো প্রশ্ন তার সামনে উদয় হয়ে ছিল।

অধ্যাপকরা বলে ছিলেন, ‘বোরকা পরা মেয়েরা ভালো সাংবাদিক হতে পারে না, তুমি রোরকা পরে কিভাবে সাংবাদিকতা করবে? পশ্চিমারা রোরকাকে ঠিকভাবে মেনে নিতে পারে না। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করতে তোমাকে মানুষের কথা শুনতে হবে।’

এমন প্রশ্নের মুখে সাবিহা কোনো দিন পড়েননি। অবাক হলেও সেই সময় সাহসিকতার সঙ্গে উত্তর দিয়ে ছিলেন তিনি। বলেছিলেন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, শুধু একজন ভালো সাংবাদিকই হবো না, বোরকা পরা মেয়েদের রোল মডেল হবো। বোরকা পরা মেয়ে পেশাদার সাংবাদিক হওয়ার জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করব।

যেমন কথা তেমন কাজ। আজ সত্যি সাবিহা বোরকা পরা মেয়েদের দিশারি হয়ে উঠেছেন। তিনি বন্ধু সামিরা লতিফাকে নিয়ে গড়ে তুলেছেন বোরকা জার্নালিস্ট সংগঠন। ২০১৮ সালে তারা এই সংগঠন তৈরি করেন।

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশটি আফগানিস্তান সীমান্ত ঘেঁষা। সেখানে বেশিরভাগ মুসলিম নারীদের মধ্যে বোরকা নিকাব পরার চল রয়েছে।
এখানে মেয়ে শিক্ষা নিয়ে কাজ করে চলেছেন সাবিহা ও লতিফা। তারা সেখান মেয়েদের কথা তুলে ধরছেন। জানা গেছে, ওই এলাকায় মেয়েদের তেমন কোনো স্কুল কলেজ নেই। পরিবার থেকে দূরে গিয়ে পড়াশোনা চালানো অনেক সময় মেয়ের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে তাকে আশা-আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরাই সাবিহা ও লতিফার একমাত্র লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। এই কাজে করতে গিয়ে এখন যথেষ্ট পরিচিত হয়ে উঠেছেন সাবিহা।

সাবিহা জানিয়েছেন, আমরা বোরকা পরিধান করে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। আমাদের মতো মেয়েদের জন্য সাংবাদিকতায় জায়গা তৈরি করতে চাই। যেখানে মুসলিম মহিলারা কোনো সমস্যা ছাড়া কাজ করতে পারবেন।বোরকা বা নিকাব কোনো দিন কোনো পেশায় আসার জন্য বাধা হতে পারে না।

গোমাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান ওয়াসিম আকবর শেখ বিশ্বাস করেন, সরকারের সহযোগিতা না পেলে তারা এই জাতীয় কাজ করে বেশি দূর এগোন যায় না। তাই সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে।

লতিফা বলেন, আমাদের বোরকা জার্নালিস্ট নামের যে প্রকল্পটি মুসলিম মেয়ের জন্য চালু করেছি, তা প্রসারিত করতে আরো বেশি মহিলারা এগিয়ে আসার প্রয়োজন। পাশাপাশি সংগঠন চালাতে অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। সরকার সাহায্য করলে আমরা লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব।

সাবিহা বলেন, এ কাজে নামি আমার মা আমাকে সমর্থন করেন। কিন্তু আমাকে এখন মানুষ সম্মান করেন। আমি চাই জার্নালিজমেও ইসলামের আদর্শ মেনে চলুক মুসলিম নারীরা।
সূত্র : পূবের কলম

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com