প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রোববারকে বাবা দিবস ধরা হয়। সেই হিসাবে আজ ২০ জুন, বিশ্ব বাবা দিবস। বিশেষ এই দিনে বাবাকে নিয়ে তারকারা বলেছেন মনের কথা। বাবা দিবসে অভিনেত্রী শবনম ফারিয়াও প্রকাশ করেছেন তার অনুভূতি-
মা গল্প বলছিল, বাবা বাসার বাইরে থাকলে নাকি আমি খাওয়ার সময় খুব বিরক্ত করতাম। খেতে চাইতাম না! বাবা খুব সুন্দর আবৃত্তি করতেন, তাই বাবার কবিতার ক্যাসেটে রেকর্ড করা থাকতো। বাবা না থাকলে আমায় সেগুলো শুনিয়ে খাওয়ানো হতো। আর সেই আমি, আজ প্রায় চার বছর ধরে বাবার কণ্ঠটা শুনতে পাই না!
আমি জানি, সবাই চলে যাবে, এটাই নিয়ম। কিন্তু মাঝে মাঝে মনে হয় আল্লাহ্ কিছু নিয়ম না করলেও পারতো! বাবা-মা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় নেয়ামত, এত বড় নেয়ামত সরিয়ে না নিলেই কি হতো না?
আমার বাবার (ডা. মীর আবদুল্লাহ) কাছে আমরা তিন বোন (বড় বোন নাজিবা শবনম ও মেজ বোন সানিয়া শবনম) রাজকন্যা। সব বাবার কাছেই হয়তো তার কন্যারা তাই। তবে আমরা তার কাছে ছিলাম উদাহরণ।
কাউকে কেউ সুন্দর বললে, বাবা কম্পেয়ার করতো, তার মেয়েদের মতো সুন্দর কিনা? যেমন কেউ লম্বা হলে বাবা বলতেন, আমার মেয়েদের মতো উচ্চতা! আমি সব সময়ই বাবা-মার বাধ্য মেয়ে ছিলাম।
শুধু একটা জায়গায় তা হয়নি। বাবা চেয়েছিলেন, আমি তার মতো চিকিৎসক হই। আমার পেশার প্রতি বাবার ভালোলাগাটা শুধু নিজের মধ্যেই রাখতেন। একবার আমরা গোটা পরিবার মালয়েশিয়া যাচ্ছিলাম। ইমিগ্রেশন পুলিশ অফিসার বেশ আগ্রহসহকারে বাবার সঙ্গে কথা বললেন। জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি কি শবনম ফারিয়ার বাবা? তিনি কি শুটিংয়ের জন্য যাচ্ছেন?’ টের পেলাম, বাবার মনটা তখন অন্যরকম ভালোলাগায় ভরে গেল। তিনি খুব খুশি হয়েছিলেন যে, তার পরিচয়ে নয়, মেয়ের পরিচয়ে তাকে কেউ চিনল! বাবার এই খুশি হওয়াটা আমার অভিনয় জীবনের অন্যতম প্রাপ্তি।
মেয়েদের বাবা না থাকলে জীবনের হিসাবগুলো একটু কঠিন হয়ে যায়, যতই প্রতিষ্ঠিত হোক আর যত টাকাই ইমকাম করুক! আজ বাবা দিবস… আমার গত চার বছর ধরে বাবাকে কি দিবো ভাবতে হয় না! অদ্ভুত একটা ‘কি জানি নাই’ অনুভূতি সব সময় ঘিরে থাকে।