ক্ষমা এমন একটি মহান গুণ যা মানুষের সম্মান বৃদ্ধি ও সওয়াব সঞ্চয় করে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন,’ (সূরা ইমরান আয়াত : ১৩৪)।ক্ষমা এমন একটি মহান গুণ যা মানুষের সম্মান বৃদ্ধি ও সওয়াব সঞ্চয় করে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন,’ (সূরা ইমরান আয়াত : ১৩৪)।
উদারতা ও পরম সহিষ্ণুতা মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ক্ষমা প্রদর্শন ও কোমলতায় মুমিনের মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্য বৃদ্ধি পায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা.) বলেছেন, সদকা করলে সম্পদের ঘাটতি হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে, আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনীত হলে, তিনি তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন, (সহিহ মুসলিম : ২৫৮৮)।
বর্তমান সমাজে মনের ক্ষোভের আগুন নিভানোর চেয়ে আগুনের উত্তাপ বৃদ্ধি করতে মরিয়া বেশি মানুষ। তাই মানুষের জীবন বিষাদময়, অধিক মানসিক চাপের ফলে উচ্চরক্তচাপসহ নানা জটিল রোগে ভোগেন। পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কে অবনতি ঘটে, ঘুমের ব্যত্যয় ঘটায়।
কিন্তু মুমিনরা রাগ-ক্ষোভের বিষ নষ্ট করে, সুসম্পর্ক গড়ার প্রাণান্তকর চেষ্টা করে। আর তারা জানে, ক্ষমা মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয়, অন্তরে নিয়ে আসে অনাবিল আনন্দ আর চোখে আনে প্রশান্তির ঘুম। শারীরিক সুস্থতা ও হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক গতি আনয়ন করে। আর আল্লাহতায়ালা মীমাংসাকারীদের জন্য সুসংবাদ দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ।
অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় এবং আপস নিষ্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ জালিমদের পছন্দ করেন না,’ (সূরা আশ-শুরা আয়াত : ৪০)।
ক্ষমা প্রদর্শন একটি স্বর্গীয় গুণ। কিন্তু আজকাল মানুষের মনে প্রতিহিংসার আধিপত্য এতটাই বেশি যে, ক্ষমা প্রদর্শনের ইচ্ছা অন্তর থেকে নির্বাসিত হয়ে গেছে। সব কিছুতে প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাব পোষণ মানুষের চরিত্রকে কোথায় নামিয়েছে, চিন্তা করলেও আতঙ্কে গা ছমছম করে। প্রতিযোগিতা নয়, ক্ষমা আর সহযোগিতাই মুমিনের গুণ।
আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর যদি তোমরা মার্জনা কর, এড়িয়ে যাও এবং মাফ করে দাও তবে নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু,’ (সূরা তাগাবুন আয়াত : ১৪)।
যে সুযোগ নেই বলে মন্দ কাজে নিজে জড়ায় না আর যে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও মন্দ কাজে নিজেকে জড়ায় না, তারা কখনোই সমান নয়। প্রতিশোধ গ্রহণের শক্তি ও সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ক্ষমা করা আর প্রতিশোধ গ্রহণের সুযোগ না থাকায় ক্ষমা করা এক নয়। প্রকৃত আত্মতৃপ্তি সেই ক্ষমাকারী পায়, যিনি সুযোগ পেয়েও ক্ষমা করে। তবে এটা বড়ই হিম্মতের কাজ। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর যে ধৈর্যধারণ করে এবং ক্ষমা করে, তা নিশ্চয় দৃঢ় সংকল্পেরই কাজ,’ (সূরা আশ-শুরা আয়াত : ৪৩)।
লেখক : কবি ও প্রাবন্ধিক।