স্রষ্টার দয়া ছাড়া যেমন সৃষ্টিজীব এক মুহূর্ত বাঁচতে পারে না তেমনি সৃষ্টিজীবের প্রতি সৃষ্টিজীবের দয়া না থাকলে পৃথিবীর শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়। সৃষ্টির প্রতি মমতা একটি স্বর্গীয় গুণ। যে সৃষ্টির প্রতি সহানুভূতি করল সে যেন আল্লাহর গুণে গুণান্বিত করল নিজেকে। যুগে যুগে অনেক মহামানব সৃষ্টির সেবা করে স্রস্টার সান্নিধ্য অর্জন করেছেন।
হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন, এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। সে তার ওপর জুলুম করবে না এবং তাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে না। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজনে সাহায্য করবে আল্লাহ তার প্রয়োজনে সাহায্য করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দুঃখ কষ্ট দূর করবে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার বিপদ দূর করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখবে আল্লাহ তার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখবেন, (বুখারি)।
মুনিবের উচিত তার গোলামের প্রতি সদয় হওয়া। তার বিপদ-আপদে সাহায্য করা। সমাজের ধনী ব্যক্তিদের উচিত নিু আয়ের লোকদের খোঁজখবর রাখা। তাদের আর্থিক সাহায্য করা। তাহলেই আল্লাহ খুশি হবেন। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন, ‘আল্লাহ অনুগ্রহকারীদের ভালোবাসেন’ (বাকারা-১৯৫)।
অপর এক হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন, তুমি ইমানদারদের তাদের পারস্পরিক সহানুভূতিতে, বন্ধুত্ব ও দয়া অনুগ্রহের ক্ষেত্রে একটি দেহের মতো দেখবে। যখন দেহের কোনো অঙ্গ অসুস্থ হয় তখন পুুরো শরীর তার জন্য বিনিদ্র ও জ্বরে আক্রান্ত হয়, (বুখারি ও মুসলিম)।
কোনো মুসলমানকে আর্থিকভাবে সাহায্য করাই শুধু একজন মুমিনের কাজ নয়। তাকে আল্লাহমুখী করা, দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করা এবং কোনো অপরাধ থেকে তাকে বিরত রাখা, তাকে দয়া করার শামিল। হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন, তুমি তোমার ভাইকে সাহায্য কর। চাই সে অত্যাচারী হোক বা অত্যাচারিত হোক। তখন এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল অত্যাচারিতকে তো সাহায্য করব কিন্তু অত্যাচারীকে কীভাবে সাহায্য করব? তিনি বললেন, তাকে জুলুম করা থেকে বিরত রাখা এটাই হলো তার প্রতি তোমার সাহায্য, (বুখারি)।
আমাদের উচিত মানুষকে আর্থিক, শারীরিক, জ্ঞান বুদ্ধি ও দ্বীনের সঠিক বুঝ দ্বারা একে অপরের প্রতি দয়া প্রদর্শন করা। তাহলেই স্রষ্টার রহমত বর্ষিত হবে।
লেখক : পরিচালক, কিশোর কথা আইডিয়াল মাদ্রাসা