অন্যায় অপচেষ্টার বিরুদ্ধে কথা বলার, রুখে দাঁড়ানোর অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার বিকেলে সন্ত্রাস বিরোধী ছাত্র ঐক্য-এর ব্যানারে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি একথা বলেন।
গত রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)র ভিপি নূর হোসেন নুর ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।
অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের নাম দিয়ে যারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে তাদের অনেকেই হত্যা মামলায় অভিযুক্ত। চাঁদাবাজিতে অভিযুক্ত। পত্রিকায় দেখলাম তাদের অনেকে বিকৃত যৌনাচারেও অভিযুক্ত। সমাবেশে আসিফ নজরুল বলেন, হামলায় যারা জড়িত ছিল তাদের অনেকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। হামলায় জড়িতরা ভিডিও ফুটেজ গায়েব করেছে। তিনি বলেন, এর আগেও ভিসির বাসভবনে হামলা করা হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা যখন ভিডিও ফুটেজ প্রকাশের দাবি করে তা করা হয়নি। বরং ছাত্র সংগঠনের নেতাদের মামলা দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আমি আশা করব রোববারের ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমার বক্তব্য ভুল প্রমাণিত করবেন।
তিনি বলেন, আজকে অনেকে ভিপি নুরকে এইভাবে কথা বলা যাবে ওইভাবে কথা বলা যাবে না, এসব নসিহত দিচ্ছেন। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে এসব নেতাদের মধ্যে অনেক বড় বড় সাবেক ছাত্র নেতাও রয়েছেন। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, তারা যদি ওই সময় অধিকার ও সংগ্রামের বিষয়ে কথা না বলতেন আজকে কি মুক্তিযুদ্ধ হত । তারা যদি জনগণের অধিকার নিয়ে কথা না বলতেন তাহলে কি মুক্তিযুদ্ধ হতো। তাহলে কি এরশাদের পতন হত। ওয়ান-ইলেভেনের সময় যদি তারা কথা না বলতেন আমরা কথা না বলতাম তাহলে কি দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসতো। তাহলে কি তারা আজকের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে পারতেন?
আসিফ নজরুল বলেন, ভারতের লক্ষ লক্ষ মুসলমানকে যদি বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয় তাহলে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের অধিকার রয়েছে তার প্রতিবাদ করার। আমাদের শিক্ষকদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে, দলাদলি আছে, তবে সবকিছুর একটা সীমা আছে। আপনারা সীমালংঘন করে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের উপর যখন হামলা হয় আপনাদেরকে বলা হয়েছিল। সাহায্য চাওয়া হয়েছিল কিন্তু আপনারা উল্টো তাদেরকে পুলিশে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। এর চেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনা আর কি হতে পারে। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, জুনায়েদ সাকি, অধ্যাপক সায়ীদ ফেরদৌসী, অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, খ্যাতিমান ফটোগ্রাফার শহিদুল আলমসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা।