প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিশেষ করে কৃষকদের কাজে বেশি ব্যবহৃত হয় ডিজেল ও কেরোসিন। লিটারপ্রতি ১৫ টাকা করে দাম বেড়ে যাওয়ার পর দেশে ডিজেলের চাহিদা কমে গেছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্র বলছে, দাম বৃদ্ধির কারণেই ডিজেলে কৃষকের চাহিদা কমেছে।
বিপিসি সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে ডিজেলের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫০ লাখ টন। তবে সরকার ৪০ লাখ টন ডিজেল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। সেচকালীন ডিজেলের স্বাভাবিক চাহিদা ছিল গত বছরের নভেম্বরে প্রতিদিন গড়ে ১৩ হাজার ১৩৯ টন। চলতি নভেম্বরে সেটি দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৯১২ টন।
কৃষিকাজে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জমি চাষ, ফসল কাটা, পরিবহন, ধান মাড়াই, ঝাড়াই ও সেচের জন্য ডিজেলচালিত কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারে খরচ বেড়ে যাওয়ায় কৃষি উৎপাদন খরচ বেড়েছে। ডিজেলের বর্ধিত দাম ও বর্ধিত দামে জমিতে ডিজেল পরিবহনের জন্যও খরচ বেড়েছে। এদিকে কৃষি উৎপাদনে খরচ বাড়লেও অনেক ক্ষেত্রেই কৃষকরা ন্যায্য ফসলের মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে কৃষিকাজে ব্যবহৃত ডিজেলের ব্যবহার কমেছে।
বিএডিসির (বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন) সূত্রে জানা গেছে, দেশে মোট কৃষকের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। এর মধ্যে সেচযন্ত্রের আওতায় রয়েছে এক কোটি ৯৪ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭২ জন। শুধু ডিজেল সেচভুক্ত কৃষকের সংখ্যা হলো ১ কোটি ২৩ লাখ ৫৯ হাজার। বছরে সেচ বাবদ প্রায় ১০ লাখ টন ডিজেলের প্রয়োজন পড়ে। অর্থাৎ দেশে এখনো কৃষকরা প্রধানত ডিজেলনির্ভর।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, প্রতিবিঘা জমিতে সেচ ও চাষ দিতে দরকার পড়ে ২০ লিটার ডিজেল। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে কৃষকদের বিঘাপ্রতি ৩০০ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে। ফলে মুনাফাও প্রায় ৩ শতাংশ কমে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিপিসির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, লিটারপ্রতি ১৫ টাকা দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকের বিঘাপ্রতি খরচ বেড়েছে। তবে বিপিসিরও দাম বাড়ানোর কোনো বিকল্প ছিল না।