শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন

গণতন্ত্র রক্ষায় রাজনৈতিক দলের ভূমিকাই মুখ্য

সুরঞ্জন ঘোষ
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১০ জুন, ২০২২
  • ১২০ বার

আগামী নির্বাচন কোন পথে হবে, এই মুহূর্তে সেটিই গুরুত্বপূর্ণ ভাবনা। কেউ বলে নির্বাচন পিছিয়ে যাবে। আবার কেউ বলে ঠিক সময়েই হবে। নির্বাচন ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য করণীয় রাজনৈতিক দলগুলো নির্ধারণ করবে। কিন্তু অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান তা পারবে বলে মনে করি না।

রাজনৈতিক দলকে বলা হয় গণতন্ত্রের মূল চালিকাশক্তি। দলে গণতান্ত্রিক ইস্যুটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্রের চর্চা না থাকলে জাতি সেই দলের মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা প্রত্যাশা করতে পারে না। কোনো দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার বিকাশের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই সে দেশের দল ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়াসমূহের চরিত্র বিশ্লেষণে অন্যতম কেন্দ্রীয় প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে নির্বাচন।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলের ভূমিকা কেবল নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং সরকারি দল বা বিরোধী দল হিসেবে দায়িত্ব পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। এটা দেশ পরিচালনায় আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সাথে জড়িত।

প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্ব হলো নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাবদিহি ও সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতিমালার মধ্যে সমন্বয় সাধন করা। সংসদ প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে সব দলের সমন্বয়ে। সংসদে যদি শুধু স্বতন্ত্র সদস্য কিংবা কতিপয় ক্ষুদ্র দল থাকে তাহলে তারা রাজনৈতিক পালাবদলের আকাক্সক্ষা অনুযায়ী তাদের পরিকল্পনা এবং স্বার্থসিদ্ধির অনুকূলে কোনো উপযুক্ত কর্মসূচি উপস্থাপন করতে পারে না।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে রাজনীতি আবর্তিত হয় রাজনৈতিক দলের প্রধান নেতৃত্বকে কেন্দ্র করেই। রাজনৈতিক দলে নেতৃত্বের পদ্ধতি ও ধরন বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রায়ই গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ওপর প্রভাব বিস্তার করে। যখনই এ রকম নেতৃত্ব দেশ পরিচালনায় আসেন তখন তার মধ্যে বিরোধী দলকে দমন করে রাখার একটা প্রবণতা দেখা দেয়।

কোনো দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা এর যথাযথ কার্যক্রমের জন্য রাজনৈতিক দলের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও রাজনৈতিক সামাজিকীকরণের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল দেশে রাজনৈতিক ব্যবস্থা সচল রাখে। রাজনৈতিক দল একাত্মবোধ তৈরি করে যা জাতি, ধর্ম, ভৌগোলিক অবস্থান ইত্যাদি কারণে বিভক্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর আনুগত্যের মাধ্যমে আনুগত্য তৈরি করে। সামাজিকীকরণ অংশীদারি মূল্যবোধের মাধ্যমে ঐক্যের ভিত্তি প্রদান করে। রাজনৈতিক সংহতি ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণ এ প্রক্রিয়ার চাবিকাঠি এবং রাজনৈতিক দল হচ্ছে সেই শক্তি যা এটা চালনা করে।

বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ধাপে ধাপে গণতান্ত্রিক ধ্যানধারণা বিকশিত হয়েছে। ঔপনিবেশিক শাসনামল থেকেই বাংলাদেশ এক ধরনের নামমাত্র গণতন্ত্রের সাথে পরিচিতি লাভ করে তা হলো কর্তৃত্ববাদী গণতন্ত্র। ব্রিটিশ শাসনামলে সীমিত আকারে গণতান্ত্রিক অধিকারবোধের জ্ঞান পরবর্তীতে জনগণকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করেছিল। এ গণতান্ত্রিক চেতনা ভারতবর্ষে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে প্ররোচিত করে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা গণতন্ত্রকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। গণতন্ত্রে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিকগুলো সংজ্ঞাগুলোতে প্রতিফলিত হয়েছে। তবে গণতন্ত্রের এ মাত্রাগুলো সবসময় গণতন্ত্র চর্চায় ফোকাস করে না। যদিও গণতন্ত্রকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, তথাপি গণতন্ত্রের মূল বিষয়টি হলো জনগণের দ্বারা শাসন।

বাংলাদেশে গণতন্ত্রচর্চা সমস্যার সম্মুখীন হয়। কেননা তৎকালীন পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি প্রায় অনুপস্থিত ছিল। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের জনগণের স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রাম গণতান্ত্রিক সংগ্রামের সাথে জড়িয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ পাকিস্তানি শাসকদের ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল মেনে না নেয়ারই ফলাফল।

নির্বাচন ও নির্বাচনী রাজনীতি হচ্ছে জনগণের রাজনৈতিক সামাজিকীকরণ ও অংশগ্রহণের অন্যতম প্রকৃষ্ট উপায়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নিয়মিত প্রতিযোগিতামূলক বহুদলীয় নির্বাচন মূলত রাষ্ট্র ও সমাজে বিদ্যমান জন ইস্যুগুলোর ওপর আলাপ-আলোচনা এবং বিতর্কের ফোরাম হিসেবে কাজ করে, জনমত ও পছন্দের প্রকাশ ঘটায়। রাজনৈতিক দল, সরকার ও জনগণের মাঝে যোগাযোগের সূত্র হলো নির্বাচনী প্রক্রিয়া, যা সংশ্লিষ্ট দল ও শাসকগোষ্ঠীর জবাবদিহি, অঙ্গীকার ও জন-ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটায়। রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি তার প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান করে। সব রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার শাসনের মূলেই রয়েছে রাজনৈতিক ব্যবস্থা। রাজনৈতিক দলের গঠন, কাঠামো ও কার্যাবলি নির্ধারণে যেসব উপাদান কাজ করে তা কেবল সেই সব উপাদানের সমষ্টি যা আমাদের রাজনৈতিক দল কিভাবে কাজ করে তা নির্ধারণে দিকনির্দেশনা প্রদান করে। একটি রাজনৈতিক দল দলীয় ব্যবস্থার নিয়মেই পরিচালিত হয় এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিভিন্ন ধরন দলীয় ব্যবস্থার ওপর গভীর প্রভাব বিস্তার করে। কিন্তু কোনো একক মানদণ্ড অনুযায়ী দলীয় ব্যবস্থাকে শ্রেণীবিন্যাস করা কঠিন। রাজনৈতিক দল মূলত তাদের সাধারণ বৈশিষ্ট্য ও লক্ষ্য অনুযায়ী ভোটার তথা জনগণের সাধারণ স্বার্থ বাস্তবায়ন করে।

দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর এশিয়া, আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকার উন্নয়নশীল দেশগুলোর উদ্ভব, রাজনৈতিক বিশ্লেষণে নতুন দিগন্তের সূচনা করে। কোনো দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার বিকাশের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই সে দেশের দল ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ পাশাপাশি দীর্ঘদিন ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে ছিল।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলের প্রাণ হচ্ছে দলে গণতন্ত্রের চর্চা। এই ব্যবস্থায় তৃণমূল পর্যায় থেকে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত সব রাজনৈতিক নেতা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হন। দলের সাধারণ সদস্যরা চাইলেই যেকোনো পর্যায়ে নেতা পরিবর্তন করতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোতে পারিবারিক নেতৃত্ব বিদ্যমান। দলের প্রধান দলের কোন পদের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেরাই সেটা নির্ধারণ করেন। এখানে দলের সাধারণ ভোটারদের তেমন কোনো ভূমিকা থাকে না।

বাংলাদেশের রাজনীতি প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। কিন্তু তাদের মধ্যে আদর্শিক দ্বন্দ্ব ভয়াবহ। প্রাথমিকভাবে তাদের মধ্যকার দূরত্ব গড়ে উঠেছে নেতৃত্বের প্রশ্ন ঘিরে। বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলো কার্যকলাপ বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যকার অব্যাহত বিরোধ ও মতানৈক্য ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক পরিবেশকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে। রাজনৈতিক দলে যদি গণতন্ত্রের চর্চা না থাকে তাহলে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। বাংলাদেশে প্রতিটি রাজনৈতিক নেতা কিংবা দল, জনপ্রিয় কিংবা অজনপ্রিয়, বৃহৎ কিংবা ক্ষুদ্র, ক্ষমতাসীন কিংবা ক্ষমতার বাইরের দল গণতন্ত্র সম্পর্কে অনবরত বক্তৃতা দেন। বাস্তবে গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণের জন্য ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দলগুলো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ উৎসাহিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।

বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্রের গুরুত্বের বিষয়টি অনুধাবন করে। কিন্তু প্রকৃত পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে, দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্র চর্চার ঘাটতি দেখা যায়।

আধুনিক জাতিরাষ্ট্রে জন্য রাজনৈতিক দলগুলো তাদের পরিচালিত কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে টিকে থাকে। রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারকারী রাজনৈতিক এলিটদের বৃহৎ জনগোষ্ঠী অংশগ্রহণের মাধ্যমে সাংবিধানিক উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্র অনেক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়ে ও বিভিন্নভাবে কার্যসম্পাদন ক্ষমতার চর্চা করে নিজেকে বিকশিত করে থাকে যা তকে অন্যান্য সংগঠন থেকে আলাদা করে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ব্যক্তিমানুষের ভূমিকা, নেতৃত্বের ভূমিকা আর্থসামাজিক পূর্বশর্তের চেয়ে কম নয়। একই সঙ্গে জনগণ ও ব্যক্তিকে সংগঠিত করে যে রাজনৈতিক দল তার ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। গণতন্ত্রে অনেক সময় এলিট শ্রেণী ও জনগণের মধ্যে এক ধরনের ঠাণ্ডা লড়াই দেখা যায় যাকে টাগ অব ওয়ার বলা যায়।

এলিট শ্রেণী স্বেচ্ছায় গণতন্ত্রের পক্ষশক্তি হয় না। গণতান্ত্রিক অধিকার আদায় করে নিতে হয় এবং সেখানে জনগণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। জনগণের ভূমিকা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তার অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে তাত্ত্বিক বিতর্ক আছে। এক দিকে জোসেফ সুম্পিটার বা রবার্ট ডালের মতো তাত্ত্বিকরা জনগণের ভূমিকা সীমিত রাখার পক্ষে মত দেন, অন্য দিকে ধ্রুপদি তত্ত্ব থেকে শিক্ষা নিয়ে অনেকে জনগণের ভূমিকাকে গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হিসেবে ভাবেন। বাংলাদেশের ব্যক্তি বা দলীয় নেতৃত্বের ভূমিকায় মিশ্র সাফল্য লক্ষণীয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে রাজনৈতিক দল। রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া, ক্ষমতার চর্চা, ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতা ইত্যাদির মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ক্রিয়াশীল থাকে।

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৭২-১৯৭৫, ১৯৯৬-২০০১, ২০০৯-২০১৪, ২০১৪-২০১৯ এবং ২০১৯ থেকে বর্তমান মেয়াদে ক্ষমতায় আছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ১৯৭৯-১৯৮৩, ১৯৯১-১৯৯৫ এবং ২০০১-২০০৬ মেয়াদে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল।

নব্বই-পরবর্তী সময় বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল জনগণকে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনে নিয়ে আসা। সেজন্য তাদের দলীয় নীতি ও কর্মসূচিতে উন্নয়নমুখী অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানাদির গণতন্ত্রায়ন, জনগণের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিতকরণ বহির্বিশ্বের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি প্রধান বিবেচ্য বিষয় হিসেবে গৃহীত হয়। দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বাস্তবতার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রাজনীতির নানা ফ্যাক্টর প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের নীতি, আদর্শ ও কর্মসূচি নির্ধারণের প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হচ্ছে রাজনৈতিক দল। দলগুলোর পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া, ক্ষমতা চর্চা, ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতা ইত্যাদির মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ক্রিয়াশীল থাকে। গণতান্ত্রিক রীতি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় অন্তর রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে জনগণের সমর্থন আদায়ে সচেষ্ট হয়।

দেশের রাজনৈতিক ইস্যুর বাইরে অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, ভূ-রাজনৈতিক ইস্যু, দেশের অভ্যন্তরে ছাত্র, শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর সমস্যা, সাধারণ জনগণের বিভিন্ন সমস্যা, তেল গ্যাস, শেয়ারবাজার, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ইত্যাকার বিভিন্ন সমস্যা সঙ্কট নিয়ে বিএনপির আরো জোরালো হওয়ার দরকার ছিল। বিএনপি যেহেতু ক্ষমতার রাজনীতি করে সে জন্যই তাদের এগুলো উপলব্ধিতে আনতে হবে। বর্তমানে রাজনীতিতে বিএনপি অনেকটা সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।

দক্ষিণ এশিয়াসহ এ অঞ্চলে ভূ-রাজনৈতিক যে সমীকরণ ও মেরুকরণ হচ্ছে তা বিএনপিকে উপলব্ধি করতে হবে। ক্ষমতার ভরকেন্দ্রে যে খেলোয়াড়রা কলকাঠি নাড়ে তাদেরও বুঝতে হবে ও জানতে হবে। অন্য দিকে, পরিবর্তিত অবস্থায় দেশের জনগণের মনমানসিকতার ও চিন্তাচেতনার পরিবর্তনকেও বিএনপির আমলে নিতে হবে।

বাংলাদেশে বিএনপি একটি বড় ও জনগণের সংগঠন সেটা মাথায় নিয়েই সে অনুযায়ী চিন্তা, পরিকল্পনা ও কাজ করতে হবে। আধুনিক বিশ্বের একবিংশ শতাব্দীতে রাজনীতি করতে হলে বিএনপিকে আরো গতিশীল হতে হবে।

সর্বোপরি বিএনপিকে একবিংশ শতাব্দীর প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক পরিসরে দলের সংযোগ স্থাপনের পাশাপাশি দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাতে হবে।

লেখক : নব্বইয়ের সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতা ও সভাপতি, সাংবিধানিক অধিকার ফোরাম

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com