ঘন কুয়াশা একেবারে ঢেকে ফেলেছে ঢাকাকে। মঙ্গলবার সকাল আটটার সময়েও সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা যাচ্ছিল যানবাহনগুলোকে। একটু দূরের কোনো কিছুও দৃশ্যমান হচ্ছিল না। বহুতল ভবনগুলোকে মনে হচ্ছিল মেঘে ঢাকা আবছা কোনো বস্তু।
ভোর থেকে বাংলাদেশের প্রধান বিমানবন্দর হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
ভোর পাঁচটা থেকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এই বিমানবন্দরটি থেকে কোন বিমান ছেড়ে যায়নি, নামেওনি বিদেশ থেকে আসা কোনো বিমান।
অথচ ভোরবেলায় বেশ কটি বড় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এসে ঢাকায় নামে যেগুলোতে থাকে ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে আসা যাত্রীরা।
শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ উল-আহসান বিবিসিকে জানিয়েছেন, কুয়াশার কারণে ভোর থেকে ‘ভিজিবিলিটি’ শূন্য হওয়ায় বিমান ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়েছে।
“‘ভিজিবিলিটি’ শূন্য হওয়ায় বিমান ওঠানামা বন্ধ রাখতে হয়েছে আমাদের। ডোমেস্টিক বা ইন্টারন্যাশনাল রুটে কোন ফ্লাইট ছেড়ে যায়নি ভোর থেকে। ভোর পাঁচটা থেকে ভিজিবিলিটি একেবারে জিরো, এ অবস্থায় ওঠানামা করতে পারে না বিমান।”
রানওয়েতে সাধারণত দৃষ্টিসীমা ৬০০ থেকে ৮০০ মিটার থাকলে উড়োজাহাজ ওঠানামা করে। সাধারণত ভিজিবিলিটি বা দৃষ্টিসীমা তিন হাজার মিটার বা তার নিচে নামলেই আবহাওয়া অধিদপ্তর এভিয়েশন ওয়ার্নিং দেয়, সেটি দুই হাজার বা তার নিচে এলে তখন বিমান নামতেও পারে না।
আহসান বলেছেন “ভোর থেকে এ পর্যন্ত পাঁচটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট নামার কথা ছিল শাহজালালে, কিন্তু কুয়াশার কারণে সেগুলো অন্য এয়ারপোর্টে ডাইভারশন করে দিতে হয়েছে’। এ ফ্লাইটগুলোকে ব্যাংকক, মান্ডালা এবং কলকাতায় নামানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
কুয়াশা কাটলে বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল আগের শিডিউল অনুযায়ী চলবে বলে জানাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
তবে বিলম্বিত হওয়া ফ্লাইটগুলোর সময় দ্রুতই নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
সোমবারও কুয়াশার কারণে একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। এদিন অন্তত ছয় ঘন্টা বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রীরা, বিশেষ করে দূরের গন্তব্য থেকে যারা দীর্ঘ যাত্রা করে ঢাকায় আসছিলেন, তারা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সোমবার সকালে বাংলাদেশে দৃষ্টিসীমা ১০০ মিটারে নেমে এসেছিল।
সূত্র : বিবিসি