ভারতের সিকিমের নাথু লায় তুষারধসে কমপক্ষে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। একইসাথে বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে এই ধস নামে।
গ্যাংটক থেকে নাথু লা যাওয়ার পথে ১৫ মাইলে হঠাৎ পর্যটক বোঝাই একটি গাড়ির ওপর তুষারধস নামে। গাড়ির পর্যটকেরা খাদের দিকে ছিটকে যান।
জানা গেছে, গাড়িতে ১৫ জন পর্যটক ছিলেন। যাদের মধ্যে একাধিক পর্যটকের লাশ উদ্ধার হয়েছে। বাকি বহু পর্যটককে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের সেনার বেস ক্যাম্পে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে নিহতদের সঠিক সংখ্যা সিকিম সরকার বা সেনার তরফ থেকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জানানো হয়নি।
অন্য দিকে, ইতোমধ্যেই উদ্ধার কাজে শুরু করেছে সেনা। পাশাপাশি দু’দিকেই রাস্তা বন্ধ। এক প্রান্তে ৩৫০ অন্য প্রান্তে ৪৫০ জনের মতো পর্যটক আটকে রয়েছেন বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
দুপুর ১২টা ২০ মিনিট নাগাদ ধস নামে। উদ্ধারকাজে নেমেছে সিকিম পুলিশ, সিকিমের ট্র্যাভেল অ্যাসোসিয়েশন ও পর্যটন দফতর। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২২ জন পর্যটককে উদ্ধার করা হয়েছে।
পর্যটকদের জন্য সাঙ্গু লেক খুবই জনপ্রিয়। সেখানে যাওয়ার পথে ধস নামায় বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন বলে আশঙ্কা। নাথু লাকে কেন্দ্র করে অনেকগুলো পর্যটনস্থলে যাওয়া যায়। ফলে এই অঞ্চলে তুষারধস নামায় সামগ্রিকভাবে সিকিমের পর্যটন বিভাগ চিন্তিত।
পর্যটন কেন্দ্র তো বটেই, নাথু লা আন্তর্জাতিক ভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। নাথু লা দিয়ে চিন এবং ভারতের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য চলে। প্রাচীন সিল্ক রুটের অন্তর্গত ছিল এই অঞ্চল। ২০০৬ সাল থেকে নাথু লা ধরে ভারত এবং চিনের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য হয়ে আসছে।
২০১১ সালে সিকিমে ভূমিকম্প হওয়ার পর এবং ২০১৭ সালে ডোকলাম বিতর্কের সময় নাথু লা দিয়ে দু’দেশের আমদানি ও রফতানি বন্ধ ছিল। ডোকলাম সংঘর্ষের জেরে চিন বন্ধ করে দিয়েছিল কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রাও। সীমান্ত পরিস্থিতি উন্নত হওয়ার পরে ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের জন্য ফের নাথু লা খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় চিন। ১৯৬২ সালে চিনের আক্রমণের সময়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল নাথু লার।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা