ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে হত্যার উদ্দেশ্যেই ঢাকায় আসে সন্ত্রাসী শাকিল। প্লান অনুযায়ী রোগী সেজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ই ব্লকের চার তলার একটি কেবিন ভাড়া নেয় শাকিল। একই ব্লকের দোতলায় অবস্থান করছেন সম্রাট। শাকিলের এই প্লানের সাথে শাহরিয়ার সোহেলসহ অনেকেই জড়িত রয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে র্যাবের অভিযানে তাদের এই প্লান ভেস্তে গেছে। এ দিকে, সম্রাটের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে তার পরিবারের পক্ষ থেকে।
ঢাকার আন্ডার ওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সেকেন্ড ইন কমান্ড শাকিল হলেন শাহরিয়ার সোহেল ওরফে শর্টগান সোহেলের বোনজামাই। এই গ্রুপটির বিরুদ্ধে খুন-জখমসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও খালিদ মাহমুদ ভূঁইয়ার কারণে এই গ্রুপটি ছিল কোণঠাসা। তারা নির্বিঘ্নে ঢাকায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ অপরাধ কর্মকাণ্ডে সুবিধা করতে না পেরে দেশ ছেড়ে চলে যায়। আর জিসান মালিবাগে পুলিশ হত্যার পরপরই অনেক আগেই দেশ ছাড়ে।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে খালিদ মাহমুদ এবং পরে সম্রাট গ্রেফতার হওয়ার পরই দেশে আসে সোহেল শাহরিয়ার। সে থেকেই ঢাকার আন্ডার ওয়ার্ল্ডের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করে সে। অনুসারীদের দিয়ে সে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি এবং দখলবাণিজ্য শুরু করে। দেশে আসার আগে জিসানসহ বিদেশে পালিয়ে থাকা তাদের গ্রুপের সদস্যদের সাথে একাধিকবার বৈঠক করার খবরও পাওয়া গেছে।
গত শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে র্যাব সদস্যরা শাকিলকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে ২টি বিদেশী পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন ও ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে র্দীঘদিন যাবৎ শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের পক্ষে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি করে আসছে। ২০০৫ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ছাত্র রাজনীতি প্রবেশ করে। পরবর্তীতে ঢাকা মহানগরে ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত হয়। ২০০৯ সাল থেকে তারা যৌথভাবে টেটার কাজে জড়িত হয়ে পড়ে। রেলওয়েতে ছোট ছোট কাজের টেটার নিয়ে কাজ করত। এভাবে ২০১০-২০১২ সাল পর্যন্ত বই টেটার নিয়ে কাজ করে। ২০১৩ সালে গ্রামের বাড়ী ফেনীতে চলে যায় এবং পারিবারিক দোকানে কাজের পাশাপাশি গ্রাম্য রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে। ২০১৫ সালে পুনরায় ঢাকায় আসে।
২০১৬ সালের জুন মাসে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর যুবলীগের সহ-সম্পাদক রাজিব হত্যার এজাহারে নাম আসার ৪ দিন পর শাকিল চীনে চলে যায়। ২০১৭ সাল পর্যন্ত চীনে বসবাস করে কার্গো সার্ভিস এর কাজ করে। ২০১৮ সালে চীন থেকে দুবাই চলে যায় এবং চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত দুবাই ছিল। দুবাই থাকা অবস্থায় শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান এর সাথে পরিচিত হয় পরবর্তীতে জিসানের পরে লেবার বেঝাকার এর কাজ করত। দুবাইতে জিসান এর লেবার আবাসিক ভবন ছিল। সেই ভবনে থেকে তারা সন্ত্রাসী পরিকল্পনা এবং সেখান থেকেই তাদের বিভিনং সহযোগীর মাধ্যমে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করত।
শাকিল গত ১২ জানুয়ারিতে দেশে আসে। মূলত তার দেশে আসার উউেশ্য হল জিসান এর নির্দেশ ও সহযোগিতায় ঢাকায় তার সন্ত্রাসী কার্যক্রম নতুন করে প্রতিষ্ঠিত করে আটার-ওয়ার্ড এর নেতৃত? দেয়া। এ প্রেক্ষিতে শাকিল রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ভর্তির উউেশ্য ছিল হাসপাতালে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা সৃষ্টি করে জনমনে আতখ ছড়িয়ে দেওয়া।
একাধিক সূত্র বলেছে, সম্রাটকে হত্যার পৎ্যান করেই ঢাকায় আসে শাকিল। এরপর পৎ্যানের অংশ হিসেবে সে ব?বন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। কেবিন নেয় ই বৎকের ৪ তলায়। ওই তলাতেই সম্রাট অবস্থান করছিলেন। তবে সম্রাটের কার্ডিয়াক সমস্যা গুরপতর হওয়ায় কয়েকদিন আগে তাকে জোতলায় সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তাদের পরিকল্পনা ছিলো পাশাপাশি কেবিনে অবস্থান করে সুযোগ মতো তারা সম্রাটকে হত্যার চেষ্টা চালাবে।
এদিকে, সম্রাটের পরিবার রোববার তার জীবনের নিরাপত্তা বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বরাবর।