ঘূর্ণিঝড় মোখা চলে গেছে; কিন্তু কক্সবাজার অঞ্চলে রেখে গেছে কিছু কষ্টের স্মৃতি। বড় কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়ে গেছে। টিনের ঘরবাড়িও অক্ষত নেই। ঝড়ের পর সেন্টমার্টিন দ্বীপের চার পাশে টিন, কাঠ, বাঁশ ও অন্যান্য ব্যবহৃত জিনিস ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেখানে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের অস্থায়ী স্থাপনাগুলোর কোনোটাই অক্ষত ছিল না। যদিও পূর্বাভাস অনুযায়ী সেখানে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়নি অথবা ২০০ কিলোমিটারের উপরে ঝড়ের গতিও ছিল না।
আবহাওয়া দফতর বলেছে, ঘূর্ণিঝড় মোখার মূল কেন্দ্রটি গেছে প্রতিবেশী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উপর দিয়ে। সম্পূর্ণ ঘূর্ণিঝড়টি গতকাল রোববার সন্ধ্যা নাগাদ উপকূল অতিক্রম শেষ করেছে। পরে রাতের কোনো একসময় তা ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। মোখার মূল কেন্দ্র মিয়ানমারের উপর দিয়ে গেলেও কক্সবাজার জেলার উপর দিয়ে গেছে মূল কেন্দ্রের বাম পাশের কিছু অংশ। ফলে বাংলাদেশে মোখার আঘাতে খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ঝড়ের গতি কেন কম হয়েছে : এ ব্যাপারে আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্র যখন টেকনাফের সেন্টমার্টিন ও মিয়ানমারের মংডু জেলা অতিক্রম করছিল ঠিক তখনই বঙ্গোপসাগরে ভাটার টান শুরু হয়। ভাটার টানের কারণে ঘূর্ণিঝড়টি সমুদ্রের মধ্যেই দুর্বল হয়ে পড়েছিল। এরপর সাগর থেকে স্থলভাগে ওঠার সময় এই ভাটার টানই ঘূর্ণিঝড়টির শক্তি কমিয়ে দিয়েছে। ফলে আগের পূর্বাভাসে যে শক্তি নিয়ে আঘাত হানার কথা বলা হয়েছিল, প্রকৃতপক্ষে মোখা আর সে শক্তি অর্জন করে স্থলভাগে আসতে পারেনি। উপকূলীয় এলাকায় অথবা সেন্টমার্টিন দ্বীপে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে। আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, পূর্বাভাস অনুযায়ী মোখা তেমন শক্তি নিয়ে আঘাত করেনি এবং ভাটার টানের কারণেই এটা হয়েছে। সমুদ্রের ভাটাই শেষ পর্যন্ত কক্সবাজারের মানুষের জন্য রহমত বা ব্লেসিং হয়ে দেখা দিয়েছে। তবে বঙ্গোপসাগরে থাকা অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য মোখা সুপার সাইক্লোনে পরিণত হলেও পরে তা সাগরেই অপেক্ষাকৃত দুর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু বেলা ১টার পর থেকে আবারো জোয়ার শুরু হলে কিছুটা জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হয়। পরে বিকেল ৫টার আগেই মোখার প্রভাব সেন্টমার্টিন থেকে কমে যায় এবং সেন্টমার্টিন এলাকায় সাগর শান্ত হয়ে যায়।
আবহাওয়া দফতরের সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখা গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যেই উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে এবং মিয়ানমারের সিট্যুয়ে এলাকায় দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে গেছে। এটি স্থলভাগের অভ্যন্তরে আরো উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়বে।
আবহাওয়া দফতর বলেছে, উপকূল অতিক্রমের সময় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে রাত সাড়ে ৮টায় দেয়া (ইস্যুর সময় সন্ধ্যা ৬টা) পর্যন্ত ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। অপর দিকে চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং মংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সঙ্কেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলবর্তী সব জেলার দ্বীপ ও চরগুলোর জন্যও ৮ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হলেও সর্বশেষ বুলেটিনে সঙ্কেত উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলার দ্বীপ ও চরের উপর পাঁচ থেকে সাত ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার কথা বলেছে আবহাওয়া অফিস।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস অথবা আন্তর্জাতিক আবহাওয়া কেন্দ্র অথবা আবহাওয়া গবেষকদের পূর্বাভাস অনুযায়ী ২১০ কিলোমিটার বেগে মোখা আঘাত করেনি এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপে অথবা কক্সবাজারে ১৫ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসও হয়নি।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ লণ্ডভণ্ড : টেকনাফে ব্যাপক ক্ষতি : কক্সবাজার থেকে গোলাম আজম খান জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে সেন্টমার্টিন দ্বীপসহ উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক য়তি হয়েছে। সকাল ১০টার দিকে এটি কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে। ক্রমান্বয়ে বাতাসের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। দুপুরের দিকে মোখা সেন্টমার্টিন্স ও টেকনাফ উপকূলে তাণ্ডব চালায়। বাতাসের তীব্রতা সন্ধ্যা নাগাদ চলে। তবে সাগরে মরা কাটাল থাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়নি।
সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান এক ব্রিফিংয়ে জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখায় জেলায় ১০ হাজার কাঁচা বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। শুধু সেন্টমার্টিন্স দ্বীপের ১২০০ কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হয়। এ ছাড়া ঝড়ো হাওয়ায় সেন্টমার্টিন্স দ্বীপ টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং এলাকায় গাছপালা উপড়ে যায়। তবে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। জেলা প্রশাসক আরো জানান, এটি একেবারেই প্রাথমিক হিসাব।
মোখার তাণ্ডবে সেন্টমার্টিন ছাড়াও শাহপরীর দ্বীপ, টেকনাফ সদর, পৌর এলাকা, সাবরাং, ডেইলপাড়া, জাদিমুড়া এলাকা লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। সেন্টমার্টিনের বড় বড় গাছ উপড়ে পড়েছে। দোকানপাট ও কাঁচা ঘরবাড়ি, হোটেল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভেঙ্গেচুরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা ১টার পর থেকে তীব্র বেগে ঝড়ো হাওয়ার পাশাপাশি মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত বহু গাছপালা ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেন্টমার্টিনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানের দাবি, ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সেন্টমার্টিন। এখানের ৯৯ শতাংশ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক ঘরের চাল উড়ে গেছে। কিছু দুমড়েমুচড়ে গেছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানায়, রোববার সন্ধ্যার পর থেকে মোখার প্রভাব কমতে শুরু করবে। আবহাওয়া কার্যালয়ের প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম করার পর বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে। এদিকে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, উপকূলের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন হোটেল এবং আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আরো ৫০ থেকে ৬০ হাজার মানুষ আশ্রয় নেয়।
গ্যাসসঙ্কটে বিপর্যস্ত চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে চট্টগ্রামে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর মিলেনি। তবে মোখার প্রভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে জনজীবন। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখায় একদিকে রান্নাবান্না বন্ধ, অন্য দিকে সড়ক ছিল যানবাহনশূন্য। মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকলেও এতদিন সরবরাহ লাইনে গ্যাসক্ষেত্রের গ্যাসের যে জোগান ছিল তা কোথায় গেল সে প্রশ্নও দেখা দিয়েছে জনমনে। যদিও পেট্রোবাংলা গতকাল চট্টগ্রামে ৬৩.৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের কথা জানিয়েছে, কিন্তু কোথাও রান্নার চুলা জ্বলেনি, সিএনজি পাম্পগুলো ছিল গ্যাসশূন্য। ফলে হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও বেকারিগুলোতে খাবারের জন্য কাড়াকাড়ি লেগে যায়।
এ দিকে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে নানা শঙ্কা কাজ করলেও শেষ পর্যন্ত বন্দরনগরী চট্টগ্রাম কার্যত ছিল স্বাভাবিক। সকালে কিছুটা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, তারপর রোদ, বিকেলের দিকে আবার কিছুটা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ৯ দশমিক ৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস।
এদিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও পাহাড় ধসের আশঙ্কায় নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোর বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয় জেলা প্রশাসন। গতকাল দুপুর পর্যন্ত মতিঝর্ণার পাহাড়গুলো থেকে শতাধিক পরিবারকে সরানো হয়েছে।
এর আগে মোখা ধেয়ে আসার খবরে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে গত শনিবার সকালে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের জেটিগুলো জাহাজশূন্য করার পাশাপাশি বিকেল থেকে বন্ধ রাখা হয় সব ধরনের অপারেশনাল কর্মকাণ্ড। নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে কয়েক শ’ লাইটার জাহাজসহ ফিশিং ট্রলার ও মাছ ধরার নৌকা। একই সাথে বন্ধ রাখা হয় চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ফ্লাইট অপারেশন।
মংলায় পড়েনি মোখার প্রভাব
মংলা (বাগেরহাট) সংবাদদাতা জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার-উত্তর মায়ানমার উপকূল অতিক্রম করলেও মাংলায় তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। মংলা সমুদ্র বন্দরকে ৪নং সতর্ক সঙ্কেত জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। তবে এতে আতঙ্কের ছিটেফোঁটাও নেই সুন্দরবন উপকূলীয় মংলার জনপদে। গতকাল সকাল থেকে এ উপজেলায় মাঝে মাঝে হালকা বাতাস বইছিল। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মোখার কোনো প্রভাব লক্ষ করা যায়নি। তবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১০৩টি আশ্রয়কেন্দ্র। মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ বলেন, বন্দরে অবস্থানরত জাহাজে পণ্য খালাস ও বোঝাই চলছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের মাত্রা বাড়লে জাহাজের কাজ বন্ধ রাখা হবে।
ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচল ভোলা
ভোলা প্রতিনিধি জানান, মোখার কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে দ্বীপজেলা ভোলা। গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত জেলার কোথাও কোনো ধরনের বিপদ ঘটেনি। মানুষের জানমালের তেমন ক্ষয়ক্ষতিও হয়নি। সেই সাথে ভারী বর্ষণও হয়নি। বাতাসের তীব্রতাও ছিল স্বাভাবিক। বেলা ৩টার পর রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়া দেখা গেছে।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিস বলছে, মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর পানি তিন থেকে চার ফুট বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে এতে জলোচ্ছ্বাসের কোনো আশঙ্কা নেই। আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো: মাহবুবুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে আজ সোমবার থেকে জেলায় কিছুটা বৃষ্টিপাত হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, এতে মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর পানি তিন থেকে চার ফুট বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে জলোচ্ছ্বাস হবে না। এ দিকে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: আল-আমীন জানিয়েছেন, ‘মোখা’র প্রভাবে জেলার কোথাও বেড়িবাঁধের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। অন্য দিকে বিআইডব্লিউটিসি ভোলার সহকারী পরিচালক মো: শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন, সোমবার সকালে নৌযান চলাচলের অনুমতি দেয়া হবে।
সার্বিক বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রিপন কুমার সাহা জানিয়েছেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে চরাঞ্চলের যেসব বাসিন্দারা এসেছিলেন, রোববার সন্ধ্যার আগেই তারা বসতভিটায় ফিরে গেছেন। ভোলায় ঘূর্ণিঝড়ের যে প্রভাব থাকার আশঙ্কা করা হয়েছিল তা হয়নি।
বরিশালে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
বরিশাল ব্যুরো জানায়, গত দুই দিন ধরে বরিশালের আকাশ মেঘলা ও গুমোটভাব বিরাজ করলেও গতকাল বেলা ১টার দিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। মোখার প্রভাবে বরিশাল বিভাগে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ উচ্চ পর্যবেক্ষক মাসুদ রানা রুবেল। তিনি জানান, মোখার প্রভাবে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বরিশাল শহরে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সেই ধারণা মোতাবেক সোয়া ১২টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়। এদিকে বরিশাল থেকে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।
পায়রা বন্দরে কাজ বন্ধ
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা জানান, পায়রা বন্দরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া বন্দরের চ্যানেল থেকে তিন বিদেশী জাহাজসহ সব লাইটারেজ জাহাজ সরিয়ে নেয়া হয়েছে। নতুন খনন করা চ্যানেল সুরক্ষিত রাখতে জাহাজগুলো সরিয়ে নেয়া হয়। এমভি আর্ক রাফায়েল, এমভি ওয়াইএম অ্যাডভান্স ও এমভি প্লাজিকা নামের তিন মাদার ভ্যাসেলসহ সব লাইটারেজ জাহাজগুলো ইনার অ্যানক্রোজ থেকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে চ্যানেলের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়ে, সেটিও নজরদারি করছে বেলজিয়ামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জানডিনুল।
এ দিকে কুয়াকাটা সৈকত থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে সব দোকানপাট। সৈকত এলাকায় পর্যটকেরা যাতে না নামেন সেজন্য এভাবে লাল নিশানা উড়িয়েছে মহিপুর থানা পুলিশ। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, সমুদ্রের ভেতর থেকে উঠে আসা তিন থেকে চার ফুট উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়ছে কিনারায়।