প্রথম কোন ব্যক্তি হিসেবে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফাউন্ডেশনকে দশ হাজার ডলারের অনুদান চেক তুলে দিলেন অধ্যাপক ড. ফায়জুল ইসলাম। গত ১৩ মে শনিবার কেএআইএফ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ডব্লিউইউএসটি’র ভার্জিনিয়াস্থ ক্যাম্পাসে চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপের হাতে এই চেক তুলে দেন তিনি। ড. ফয়জুল ইসলাম বলেন, এই ছোট অনুদানের মাধ্যমে কিছু মানুষের উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন যেমন পূরণ হবে, প্রকৃত কিছু মেধাবী শিক্ষার্থী তাদের জীবন গঠনে কাজে আসবে এবং এর মাধ্যমে তৈরি হবে সফলতার অনেক গল্প। তিনি আরও বলেন, তার দেখানো পথ ধরে সমাজের প্রতিষ্ঠিত আরও অনেকেই এগিয়ে আসবেন এটাই তার কামনা। এই দারুন কিছুর শুরুটা তার হাত ধরে হওয়ায় তিনি আনন্দিত। তারচেয়ে খুশি হবে যখন দেখতে পাবেন তার দেয়া এই অনুদানে কোন শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করেছেন।
ড. ফায়জুল ইসলাম ৪১ বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। তিনি অর্থনীতি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন ইউনির্ভাসিটি অব মেরিল্যান্ডের গ্লোবাল ক্যাম্পাসে। এর পাশাপাশি ২৬ বছর কাজ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল গর্ভামেন্টের হয়ে। ব্যস্ত কর্ম জীবনের পাশাপাশি তিনি বহু আগে থেকেই সামাজিক উন্নয়নে নানাভাবে কাজ করে এসেছেন। সম্প্রতি কেআইএএফ নামে একটি ফাউন্ডেশন চালু করেছেন। যে ফাউন্ডেশনের অধীনে এরই মধ্যে বাংলাদেশের নোয়াখালীতে একটি কম্পিউটার ল্যাব চালু হয়েছে। পিপলএনেটেক-এর সহযোগীতায় গড়া এই ল্যাবে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এবার ডব্লিউইউএসটি ফাউন্ডেশনকে তিনি প্রথম ব্যক্তি হিসেবে চেক তুলে দিলেন ড. ফায়জুল ইসলাম। তিনি জানান প্রতিবছর দশ হাজার ডলার করে পাবে ডব্লিউইউএসটি ফাউন্ডেশন। ছয় মাস অন্তর অন্তর দুই কিস্তিতে প্রদান করা হবে এই দশ হাজার ডলার। তার চাওয়া বাংলাদেশে কোন মেধাবী ছাত্রীকে এই স্কলারশীপ পাবার অগ্রাধিকার দেয়া হয়।
গত দেড় যুগের বেশি সময় ধরে ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ তার পিপলএনটেক-এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষের জীবন বদলে দেবার পেছনে সরাসরি ভূমিকা হিসেব কাজ করেছেন। এখন তিনি তার সেবা পৌছে দিচ্ছেন ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির মাধ্যমে। কিন্তু তার সাথে আরও অনেকেই যেন মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পূরণে ভালোবাসার হাত রাখতে পারেন তার জন্য খুলেছেন ডব্লিউইউএসটি ফাউন্ডেশন। সেখানে প্রথম ব্যাক্তি হিসেবে ড. ফয়জুল ইসলামের এমন মহতি পদক্ষেপের প্রশংসা করেন আবুবকর হানিপ। তিনি বলেন এই অনুদানকে টাকায় মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। আবুবকর হানিপ অনুরোধ জানান মানুষের জীবন বদলাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে।
ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির প্রেসিডেন্ট হাসান কারাবার্ক বলেন ড. হাসান কারাবার্ক বলেন অনেক ছাত্রছাত্রীর জন্য ভাগ্যের দরজা খুলে দিয়েছেন জন্য ড. ফায়জুল ইসলাম। পিপলএনটেক থেকে ডব্লিউইউএসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলায় পেছন থেকে যে মানুষটির অন্যতম অবদান তিনি ফারহানা হানিপ। সেই তিনি জানালেন ডব্লিউইউএসটি ফাউন্ডেশনের জন্য এ এক অনেক আনন্দের দিন। নতুন এক দিগন্তের উম্মোচন হলো এই অনুদানের মাধ্যমে।
সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব কবিতা দেলোয়ার বলেন ড. ফয়জুল ইসলাম তার সীমিত আয়ের মধ্যে মানুষের জন্য কিছু করার যে মহতি উদ্যোগ দেখিয়েছেন তার সবাইকে কিছু করার এক তারনা জাগিয়ে দিলো। এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবীদ, ব্যবসায়ী, আইটি বিশেযজ্ঞ, ব্যাংকার, কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ ও ডিএমভি এলাকার সফল ব্যক্তিবর্গ। তারা অধ্যাপক ড. ফয়জুল ইসলাম এই মহতি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। সেই সাথে পিপলএনটেক ও ডব্লিউইউএসটির মাধ্যমে ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ যেভাবে হাজার মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তার ভূয়সী প্রশংসা করেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। একই সাথে সকলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন ডব্লিউইউএসটি ফাইন্ডেশনের পাশে থাকার।
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন ডব্লিউইউএসটির মার্কেটিং ডিরেক্টর হোসে ওর্তেগা। মধ্যাহ্ন ভোজের মধ্য দিয়ে শেষ হয় আয়োজন।