সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩১ পূর্বাহ্ন

জালালাবাদ থেকে বদরুল খান-রুকন হাকিমকে বহিষ্কার

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৪ জুন, ২০২৩
  • ৫৬ বার

ভবন ক্রয়কে কেন্দ্র করে সৃষ্ট জটিলতায় জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার সহ সভাপতি শাহীন কামালী ও সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম আহুত এসোসিয়েশনের পাল্টা জরুরি সাধারণ সভায় সভাপতি বদরুল হোসেন খান ও সহ সাধারণ সম্পাদক রুকন হাকিমকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে শাহীন কামালীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও মইনুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

রোববার উডসাইডের কুইন্স প্যালেসে আয়োজিত সভায় বক্তারা ক্রয়কৃত ‘জালালাবাদ ভবন’ রক্ষার পাশাপাশি উদ্ভুত সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের প্রস্তাব করেন। উল্লেখ্য, গত ১১ জুন রোববার সভাপতি বদরুল হোসেন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এসোসিয়েশনের সাধারণ সভায় ইতিপূর্বে ইসি কমিটিতে বহিষ্কার করা সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে শাহীন-মইনুলের নেতৃত্বে জরুরি সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি শাহীন কামালী এবং সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মওলানা ছয়ফুল আলম সিদ্দিকী। এরপর এসোসিয়েনের যারা ইন্তেকাল করেছেন তাদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সভামঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন এসোসিয়েশনের সাবেক ট্রাষ্টি আব্দুল হাসিব, সাবেক সভাপতি সৈয়দ শওকত আলী, এম এ কাইয়ুম ও ওয়াহিদুর রহমান মুক্তা, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট আজিজুর রহমান সাবু ও এমাদ চৌধুরী, এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হেলিম উদ্দিন আহমদ, ডা. জুন্নন চৌধুরী ও কাতার জালালাবাদ সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম।

শুরুতে জরুরি সাধারণ সভা আহ্বানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সভার সভাপতি শহীন কামালী। এরপর সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট পেশ করেন মইনুল ইসলাম। তিনি তার রিপোর্টে বিস্তারিত তুলে ধরেন। পরবর্তীতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাবেক ছাত্রনেতা শাহাবুদ্দীন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন দেওয়ান শাহেদ চৌধুরী, পংকি মিয়া, রিয়াজ উদ্দিন কামরান, ইনিঞ্জনিয়ার সৈয়দ ফজলুর রহমান, সৈয়দ জুবায়ের আলী, শাহীন আজমল, মামুন আহমেদ, আতাউল গণি আসাদ, এবাদ চৌধুরী, দরুদ মিয়া রনেল, হুমায়ুন চৌধুরী, মোহাম্মদ মহসিন সেলিম, এম আলাউদ্দিন, মোশাহেদ চৌধুরী, এম করীম চৌধুরী, মিজানুর রহমান প্রমুখ।

সভায় বক্তারা ১১ জুনের সাধারণ সভা ও সভাপতি বদরুল হোসেন খানের কর্মকা-ের সমালোচনা করে বলেন, ওই সভায় সিকিউরিটি দিয়ে যেভাবে জালালাবাদবাসীকে নাজেহাল করা হয়েছে তার অত্যন্ত দু:খজনক, নিন্দনীয় এবং সভাপতি বদরুল হোসেন খান সাংগঠনিক নিয়ম-কানুন ও গঠনতন্ত্র লংঘন করেছেন।

বক্তারা বলেন, ‘জালালাবাদ ভবন’ সময়ের একমাত্র দাবী। এজন্য সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। বক্তারা ক্রয়কৃত ভবন রক্ষার ব্যাপারে এক্যমত পোষন করেন এবং আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভুত সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানান।

সভার শেষে শাহীন কামালী নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করা, বিভিন্ন অনিয়ম ও গঠনতন্ত্র লংঘনের অভিযোগ সহ ৮ দফা অভিযোগে সভাপতি বদরুল হোসেন খান ও সহ সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক) রুকন হাকিমকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের প্রস্তাব করলে সভায় উপস্থিত সকলে হাত তুলে তা সমর্থন করেন। এই সিদ্ধান্ত ২৫ জুন থেকে কার্যকর হবে। এরপর মইনুল ইসলামের প্রস্তাবে শাহীন কামালীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব প্রদানের প্রস্তাব করলে এই সিদ্ধান্তও উপস্থিত সকলে হাত তুলে তা সমর্থন করেন। সভায় বিপুল সংখ্যক প্রবাসী জালালাবাদবাসী উপস্থিত ছিলেন।

জালালাবাদ ভবন ঘিরে কার্যকরী পরিষদের পক্ষে বিপক্ষেও বেসামাল লজ্জাজনক পরিস্থিতির উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে কমিউনিটিতে। সিলেটবাসীর কয়েকটি সামাজিক আঞ্চলিক সংগঠনের নেতা-কর্মী পাশাপাশি সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তা চলমান সংকট উত্তরণে এগিয়ে আসলেও বদরুল হুসেন খানের একগুঁয়ে আচরণে সম্ভব হয়নি এমনকি তিনি আলোচনার স্থানে উপস্থিত হওয়ার সম্মতি জানালেও উপস্থিত হননি বলে অভিযোগ রয়েছে।

গঠনতন্ত্র উপেক্ষা কিংবা তোয়াক্কা না করে একতরফাভাবে সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামকে বহিষ্কার করে সহসাধারণ সম্পাদক রুকন হাকিমকে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক দায়িত্ব দিয়ে দীর্ঘ দশ মাস পর গেলো ১১ জুন সভাপতি বদরুল হুসেন খান ও সহ সাধারণ সম্পাদক রুকন হাকিম অবৈধ সাধারণ সভার আয়োজন করেন। কাঙ্কিত ভবন রক্ষার পাশাপাশি চলমান কঠিন সংকট উত্তরণে সহযোগিতায় দলমত নির্বিশেষে নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অংগরাজ্য থেকে সিলেট বিভাগের প্রতিটি অঞ্চলের সচেতন মহলের একাধিক কীর্তিমান মননশীল সৃজনশীল ব্যক্তি উপস্থিত হয়েছিলেন কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় জালালাবাদবাসীকে বন্দুক সিকিউরিটি গার্ড দিয়ে হলের ভিতর থেকে বের দেয়ার ঘৃণিত নেক্কারজনককা-ে উপস্থিত সুধীমহলে সাধারণ সভা আয়োজকদের প্রতি মারাত্মক ক্ষোভের উদ্রেক হয়। জালালাবাদবাসী সেদিন হলের বাহিরে অবস্থান নিয়ে মইনুল ইসলাম ও ভবনের পক্ষে বিভিন্ন সেøাগান দিতে দেখা যায় একপর্যায়ে জালালাবাদবাসী রাগে ক্ষোভে অপমানে লজ্জায় ভবন মিলনায়তনে সেদিন রাতেই উন্মুক্ত আলোচনা করে সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামকে অনতিবিলম্বে জরুরি সাধারণ সভা আহবান করার চূড়ান্ত পরামর্শ ও সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাধারণ সম্পাদক ১৮ জুন নিউইয়র্ক একই হলে উডসাইড কুইন্স প্যালেস জরুর সাধারণ সভার আয়োজন করেন।

সহ সভাপতি শাহীন কামালীর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রাচীন বৃহত্তর সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের অনুষ্ঠিত জরুরি সাধারণ সভায় সিলেট বিভাগের প্রত্যেক উপত্যকা থেকে জালালাবাদবাসীর উপস্থিতি ছিলো স্মরণ রাখার মতো। সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম সাধারণ সভায় উপস্থিত সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতার সহিত ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সারমর্ম ব্যাখ্যা করে বক্তব্য প্রদানকালে মূর্হঃমূহ করতালির মাধ্যমে তাঁকে সমর্থন জানান সাধারণ সভায় আগত উপস্থিত  জালালাবাদবাসী। সাবেক কর্মকর্তা মৌলানা সাইফুল আলম সিদ্দিকির কোরান তেলোয়ত ও সাবেক ছাত্রনেতা বিশিষ্ট সংগঠক সাহাব উদ্দিনের স্বাগতিক জোড়ালো বক্তব্য উপস্থাপন প্রাক্কালে মঞ্চে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জড়িত সংগঠনের সরকারিভাবে রেজিষ্ট্রেশনের তিনজনের মধ্যে একজন ওহিদুর রহমান মুক্তা, সংগঠনের অন্যতম প্রাণ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবু সুফিয়ান, সাবেক সভাপতি গঠনতন্ত্র প্রণেতা এম এ কাইয়ুম, সাবেক সভাপতি সৈয়দ শওকত আলী, মধ্যেপ্রাচ্যের কাতার জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সভাপতি নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট সংগঠক সাবেক কর্মকর্তা আজিজুর রহমান সাবু, বিশিষ্ট সমাজকর্মী ডাঃ জুন্নুন চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হেলিম উদ্দিন আহমেদ, সাবেক উপদেষ্টা আব্দুল হাসিম হাসনু তাছাড়া চলমান ক্রান্তিলগ্নের সংকট উত্তরণে অব্যাহত প্রচেষ্টায় বিশিষ্ট লেখক কলামিস্ট সুব্রত বিশ্বাস, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফকু চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা অকৃতিম সংগঠক শাহাব উদ্দিন, দেওয়ান শাহেদ চৌধুরী, আব্দুল মালিক খান লায়েক, দরুদ মিয়া রনেল, মামুনুর রশিদ, সাবেক কোষাধ্যক্ষ পংকি মিয়া, সাবেক কোষাধ্যক্ষ আতাউল গনি আসাদ, সাবেক কর্মকর্তা মখন মিয়া, মনির আহমদসহ অনেকের নাম বিশেষ অতিথির মর্যাদায় ঘোষণা করেন।

একে একে সকল বক্তা সমঝোতা বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামের সহযোগিতার প্রশংসা করে সভাপতি বদরুল হুসেন খানের অস্বাভাবিক আচরণ অসহযোগিতার বর্ণনা করেন। বিকেল হতে শুরু হয়ে একটানা মধ্যেরাত পর্যন্ত অনুষ্ঠান সমাপ্তির পূর্বে সহ সভাপতি শাহীন কামালীর মাধ্যমে সভাপতি বদরুল হুসেন খান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রোকন হাকিমের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র লংঘনসহ সংগঠন বিরোধী বিভিন্ন কর্মকা-ের অভিযোগ সাধারণ সভায় উপস্থাপন করে বহিষ্কারের আবেদন জানালে হলভর্তি সুধীমহল চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে উচ্চস্বরে বহিষ্কার আওয়াজে পুরো হলে কেঁপে উঠে। আনন্দ উল্লাসে মিষ্টি খেতে দেখা যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com