আহলে সুন্নাত আল জমাতের উদ্যোগে সৈয়দ আনসারুল করিমের সভাপতিত্বে গত বুধবার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে আগত পীরজাদা শফিকুল ইসলাম প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশনের সভাপতি গিয়াস আহমেদ । অতিথী হিসেবে অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনা করেন মুফতি আবদুল মালেক, মওলানা জোবায়ের আর রশিদ, মওলানা ফায়েক উদ্দিন , সাংবাদিক মোহাম্মদ শহিদুললাহ, আবদুল ওহিদ তুপন প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মওলানা ওলিউল্লাহ আতিকুর রহমান। বক্তারা বলেন, কোরআন হাদিসে আহলে বাইতকে (নবী পরিবারকে) শক্ত করে ধরে রাখবার এবং তাদেরকে অনুসরন করবার নির্দেশ থাকলেও আমরা তা পালন করছি না। নবী সাঃ বলেছেন, “ আমি তোমাদের জন্য দুটি ভারি বস্তু রেখে যাচ্ছি যাতে তোমরা পথভ্রষ্ট না হয়ে যাও। প্রথমটি হলো আল কোরআন এবং দ্বিতীয়টি হলো আমার আহলে বাইত। এই দুটি বস্তু কখনো বিচ্ছিন্ন হবে না। “—- সহি মুসলিম। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে আহলে বাইতকে শক্ত করে ধরে রাখবার নির্দেশনা থাকলেও তা পালন না করে তাদেরকে বরং হত্যা করা হয়েছে। আলী, ইমাম হাসান এবং ইমাম হোসেইন আঃকে মুসলমান নামধারীরাই হত্যা করেছে। আহলে বাইত তথা নবী পরিবারারকে হত্যা করে মুয়াবিয়া- ইয়াজিদ- মারওয়ান গংরা জোর করে ক্ষমতা দখল করে। সেই উমাইেযা রাজদরবারে দরবারী আলেম ওলামা দিয়ে আহলে বাইত বিরোধী প্রচারনা চালানো হয়। এই দরবারী আলেম ওলামা আহলে বাইতের শত্রুদের পক্ষে অনেক ভুয়া হাদিস বরননা করে এবং আহলে বাইতের পক্ষের হাদিস গুলোকে অবজ্ঞা করে। সেই ধারাবাহিকতা এখনো মাদরাসা গুলোতে পড়ানো হয়। নবী সাঃ আরো বলেছেন, “ আমি যার মওলা আলীও তার মওলা।”— সহি মুসলিম। নবী সাঃ আরো বলেছেন, “ আমি যদি জ্ঞানের শহর হই তবে সেই শহরের দরজা হলো আলী।”—- তাই সত্যিকার জ্ঞান অর্জন করতে হলে মওলা আলীর মাধ্যমেই পেতে হবে। শুধু তাই নয়, আললাহ আহলে বাইতদের কে বেহেসতরে সরদার বানিয়েছেন। অথচ সেই বেহেসতর সরদারদের কেই হত্যা করে তারা আবার বেহেসতে যেতে চায়। গিয়াস আহমেদ দুঃখ করে বলেন, বর্তমান সমাজের বিখ্যাত আলেম ওলামাগনও আহলে বাইতের হাদিস গুলো জানে না। আবার যারা জানে তারা শিয়া তকমা গায়ে লাগবে বলে ভয়ে প্রচার করে না। বর্তমান মাদরাসা গুলোতেও আহলে বাইতের হাদিস পড়ানো হয় না। বরং আহলে বাইতের শত্রুদের হাদিস বেশী করে পড়ানো হয়। গিয়াস আহমেদ বলেন, পৃথিবীতে কোটি কোটি আলেম ওলামা হাফেজ মুফতি আললামা এবং মওলানা থাকলেও মুসলমনাদের উপর আল্লাহর রহমত নেই। আগের দিনে আহলে বাইতের কদর সমমান ছিল , মিলাদ কেয়াম দরুদ ছিল, ওলি আওলিয়াদের সমমান ছিল। ফলে মুসলমনাদের উপর আল্লাহর রহমত ছিল। অর্ধেক দুনিয়া মুসলমানরা দাপটের সাথে শবাসন করেছে। আর এখন গরু খাওয়ার সন্দেহে মুসলমান হত্যা করা হচ্ছে। কোন বিচার নেই। ইসলামের শত্রুদের আক্রম এবং নিজেদের মধ্যে গৃহযুদধে আজ আরব বিশ্ব ধংসযজ্ঞে পরিনত হয়েছে। পেলেষটাইনে প্রতি দিন মুসলমান হত্যা করা হচ্ছে। সেই দিকে আলেম ওলামা এবং বিশ্ব নেতৃবৃনদের কোন প্রতিবাদ নেই। আলেম ওলামাগন নিজেরদের মধ্যেই বিভিন্ন ফেৎনা ফেসাদে লিপ্ত। তিনি বলেন ওহাবী ফেৎনা আজ চরম আকার ধারন করেছে। গিয়াস আহমেদ বলেন, আললাহ রহমত পেতে হলে কোরআন এবং আহলে বাইতকে শক্ত করে ধরে রেখে বিভিন্ন ফেৎনা ফেসাদ থেকে দুরে থেকে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ হবার কোন বিকল্প নেই। প্রতি বছর আহলে বাইতের সম্মেলন হবে বলে গিয়াস আহমেদ ঘোষনা দেন। অন্যান্যদের মধ্যে অথিতি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন আলআমিন মসজিদের সভাপতি জয়নুল আবেদীন, আহলে বাইত মসজিদের সহ সভাপতি সৈয়দ আশরাফ আলী, সাধারন সম্পাদক শওকাত আনোয়ার, মওলানা মাহমুদ প্রমুখ ।