ক্যাসিনোকাণ্ড ও টেন্ডারবাজির ঘটনায় গ্রেফতার ঠিকাদার জি কে শামীমের জামিন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যেখানে একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসী-দুর্বৃত্ত আসামিকে জামিন দেয়া হয়, অথচ খালেদা জিয়া জামিন পান না।
এতেই প্রমাণিত হয়, দেশে আইনের শাসন বলতে কিছু নেই। এটা এখন একনায়কতন্ত্র ও স্বৈরাচারের একটি দেশে পরিণত হয়েছে। দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর রোববার তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, কুখ্যাত আসামির জামিন হয় অথচ রাষ্ট্র জানে না। এতে প্রমাণিত হয়েছে, এই রাষ্ট্র একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠানে এখন শৃঙ্খলা-জবাবদিহিতার জায়গা নেই।
গাজীপুর জেলার নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের নিয়ে জিয়ার মাজারে যান ফখরুল।
এ সময় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলন, সদস্য সচিব কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, হুমায়ুন কবির খান, ওমর ফারুক শাফিন, গাজীপুরের মজিবুর রহমান, সাখাওয়াত হোসেন সবুজ, সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, ভিপি ইবরাহিম, শাহ রেজাউল হান্নান, রাশেদুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিন দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে থেকে নারী দিবসে মহিলা দলের র্যালি উদ্বোধন করেন মির্জা ফখরুল।
এ সময় তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র না থাকলে নারীদের অধিকার থাকবে না এবং এখন নেই। সেটার প্রমাণ আজকের বাংলাদেশ। গণতন্ত্র না ফিরলে নারীদের অধিকার ফিরে পাওয়া যাবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে যখন আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হচ্ছে, তখন এই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা, দেশের নারীদের জন্য বহু উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন, তাদের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করেছেন, সেই নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তাকে মুক্ত করতে না পারলে গণতন্ত্র মুক্ত হবে না। আসুন মা-বোনেরা, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করি এবং দেশনেত্রীকে মুক্ত করার জন্য সংগ্রাম করি- এটাই হোক আজকে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে শপথ।
র্যালি উপলক্ষে সকাল থেকে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহিলা দলের নেতাকর্মীরা সমবেত হন। তাদের হাতে ছিল খালেদা জিয়ার মুক্তি ও জিয়াউর রহমানের প্রতিকৃতি সংবলিত প্ল্যাকার্ড। পরে বর্ণাঢ্য র্যালিটি নাইটিঙ্গেল রেস্তোরাঁ মোড় ঘুরে নয়া পল্টনে কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।
সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহিলা দল টাঙ্গাইলের সভাপতি মমতাজ করীম ও খিলক্ষেতের সভাপতি সূচনা আখতার।
সংগঠনের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা নুরী আরা সাফা, নুর জাহান ইয়াসমীন, হেলেন জেরিন খান, রাশেদা বেগম হীরা, জেবা খান, ইয়াসমীন আরা হক, নেওয়াজ হালিমা আরলী, ফাহিমা হোসেন জুবলী, শামসুন্নাহার ভুঁইয়াসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা র্যালিতে অংশ নেন।
এদিকে মহিলা দলের র্যালি শুরু হওয়ার কথা ছিল বেলা সাড়ে ১১টায়। কিন্তু ১১টা ২০ মিনিটে নয়া পল্টনে কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরু হওয়া দেখে প্রতিবাদ জানান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ।
তিনি বলেন, প্রধান অতিথি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর না আসা পর্যন্ত সমাবেশের কার্যক্রম বন্ধ থাকতে হবে। একপর্যায়ে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়। পরে কার্যালয়ের ভেতরে তৃতীয় তলায় বিএনপি মহাসচিব মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদককে ঢেকে পাঠান।
বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে মির্জা ফখরুল র্যালিপূর্ব সমাবেশে আসেন। র্যালি উপলক্ষে সকাল ১০টা থেকে কার্যালয়ের সামনে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশও অবস্থান নেয়।