শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৮ অপরাহ্ন

নির্দেশনা অমান্য করায় ৯ ব্যাংককে জরিমানা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১১ মার্চ, ২০২০
  • ২৮২ বার

কোনো অপ্রচলনযোগ্য নোট বা ছেঁড়া নোট বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা দেয়া যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক গ্যারান্টিতে জমা দেয়া যাবে কেবল পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোট। কিন্তু কিছু কিছু ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের এ নির্দেশনা অমান্য করে নোটের বান্ডিলের ভেতরে ছেঁড়া-ফাটা বা অপ্রচলনযোগ্য নোট ঢুকিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টিতে জমা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এমন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংককে ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সাথে জরিমানার সাত দিনের মধ্যে এর অর্থ জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ যেন আর না হয় তার জন্য কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে। ব্যাংকগুলোর মধ্যে দু’টি সরকারি ও সাতটি বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

ব্যাংকগুলোর মধ্যে সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, আল আরাফা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংক রয়েছে। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংককে আড়াই লাখ টাকা এবং বাকি ব্যাংকগুলোকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

জানা গেছে, ব্যাংকগুলো তাদের ভল্টের উদ্বৃত্ত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টি ভল্টে জমা দিয়ে থাকে। একই সাথে তাদের প্রয়োজনে টাকা উত্তোলন করা হয়। কী ধরনের নোট বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টি ভল্টে জমা রাখা যাবে তার সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৫ সালের ২৪ নং সার্কুলারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টি ভল্টে পুনঃপ্রচলনযোগ্য, অপ্রচলনযোগ্য এবং ছেঁড়া-ফাটা অর্থাৎ মিউটিলেটেড নোট এ তিন ভাগে বিভক্ত করে জমা দিতে হবে। কোনোভাবেই পুনঃপ্রচলন নোটের সাথে অপ্রচলনযোগ্য নোট বা ছেঁড়া-ফাটা নোট মিশ্রিত না থাকে সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে নিশ্চিত করতে হবে। অত্যাধিক ময়লাযুক্ত নোট, নোটের ওপর একাধিক সিল, কোনো নোটের ওপর দু’টির অধিক অনুস্বাক্ষর বা স্বাক্ষর বা সংখ্যা, নোটের ওপর অপ্রয়োজনীয় লেখা বা দাগ, নোটের মরিচার চিহ্ন এবং নোটে অল্প রঙ লাগানো থাকলে সেসব নোট অপ্রচলনযোগ্য নোট হিসেবে বিবেচিত হবে। আর যেসব নোট টেপযুক্ত, দুই খণ্ডে খণ্ডিত এবং নোটের কোনো অংশ অনুপস্থিত থাকে তাহলে ওই সব নোট হলো মিউটিলেটেড নোট।

আর যেসব নোট দুইয়ের অধিক খণ্ডে খণ্ডিত থাকে, নোটের কোনো অংশ অনুপস্থিত এবং অনুপস্থিতির পরিমাণ নোটের আয়তনের ১০ শতাংশের বেশি হয়, কোনো নোট আগুনে পোড়া বা আগুনের আঁচ লাগানো থাকে, ড্যাম্প নোট ও নোটে বেশি রং লাগানো থাকলে ওই সব নোটকে দাবিযোগ্য নোট বলে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পুনঃপ্রচলন নোটের বান্ডিলের মধ্যে আলোচ্য তিন ধরনের নোট অর্থাৎ অপ্রচলনযোগ্য, মিউটিলেটেড ও দাবিযোগ্য নোট মিশ্রিত করা যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টিতে নোট জমাদানকালে আলোচ্য নির্দেশনা যথাযথভাবে পরিপালন না করলে ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ (সংশোধিত ২০১৩) মোতাবেক সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে দণ্ডিত করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আলোচ্য ব্যাংকগুলো পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোটের বান্ডিলের সাথে অপ্রচলনযোগ্য নোট মিশ্রিত করে দিয়েছে। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ব্যাংকগুলোকে বারবার সতর্ক করার পরেও একই কাজ বারবার করে আসছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা লঙ্ঘন করায় গত তিন মার্চ জরিমানা করে এ সংক্রান্ত চিঠি ব্যাংকগুলোকে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে সাত দিনের মধ্যে জরিমানার অর্থ পরিশোধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ঘটনা যেন আর না ঘটে সে জন্য ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে। এরপরেও ব্যাংকগুলো নির্দেশনা অমান্য করলে ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com