মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ প্রবাসীদের স্বজনদের জন্য বিভিন্ন উপহার ও মালামাল নিজ দেশে পাঠাতে কুয়ালালামপুরস্থ মাইডিনে আসরি বিন হামিদ এন্টারপ্রাইজ নামে বিমানের কার্গোর এজেন্টকে প্রায় তিনটি কন্টেইনারে কোটি কোটি টাকার মালামাল বুকিং দেন কয়েক শ’ প্রবাসী। দীর্ঘ ছয় মাস অতিবাহিত হলেও তাদের প্রেরিত মালামালের কোন হদিস নেই।
এরই মধ্যে আসরি বিন হামিদ এন্টারপ্রাইজের অফিসসহ মালয়েশিয়ান মালিক ও বাংলাদেশী মালিক বাবলু আত্নগোপনে চলে গেছেন। মালামাল ফেরত পেতে গতকাল বিকেলে কুয়ালালামপুর বুকিতবিনতাং এর পিঠাঘরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন শতাধিক প্রবাসী। সংবাদ সম্মেলনে ওই এজেন্টের মালিকসহ চালান কপি নিয়ে প্রবাসীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তাদের মালামাল ফেরত পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মালামাল হারিয়ে প্রবাসীরা ইতোমধ্যে আলাদা আলাদা করে শতাধিক মামলা করেছে স্থানীয় বালাই পুলিশের থানায়। এ বিষয়ে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনেও অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
এ সময় ভুক্তভোগীদের পক্ষে মালয়েশিয়া প্রবাসী জাহাঙ্গীর হাওলাদার ‘আসরি বিন হামিদ এন্টারপ্রাইজ’-এর পাশা খানের প্রতারণার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
তিনি বলেন, আমরা প্রবাসীরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্থ উপার্জন করে দেশে থাকা মা-বাবা ও স্বজনদের জন্য মালামাল পাঠিয়েছি। আমি নিজেই পাঁচ লাখ টাকার মালামাল পাঠিয়েছি, আমি পাঁচ বছর ধরে দেশে যেতে পারি না, আমার মতো কয়েক শ’ প্রবাসী আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকার মালামাল উক্ত কার্গো এজেন্টের মাধ্যমে মালামাল পাঠানো হয়েছে। আমরা ছয় মাস ধরে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমরা কোনো সমাধান পাচ্ছি না। আমাদের বাংলাদেশ সরকারের কাছে আকুল আবেদন, আমাদের মালামাল ফেরত পাওয়ার জন্য দয়া করে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো: পাশা খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার আসরি বিন হামিদ এন্টারপ্রাইজ-এ ১০ ভাগ শেয়ার আছে। এই কার্গো এজেন্টের মূল মালিক মালয়েশিয়ান নাগরিক হামিদ, বাংলাদেশী প্রবাসী মো: বাবলু ও মো: সাব্বির।
প্রবাসীদের মালামালের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দু’টি কন্টেইনারে প্রবাসীদের মালামাল দেশে পাঠানো হয়েছে। এ কথা সত্য। কিন্তু এসব কন্টেইনারে বৈধ মালামালের সাথে অবৈধ মালামাল থাকায় বাংলাদেশ কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এগুলো আটক করে মামলা করেছে।
পাশা খান বলেন, আমাকে মালয়েশিয়ান হামিদ ও বাংলাদেশী বাবলু অনুরোধ করেন যে টিকটকে প্রচার করার জন্য, কম খরচে দেশে মালামাল পাঠানো যায়। তাই প্রচার করায় প্রবাসীরা আমাকে চাপ দিচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, আমি আত্মাগোপনে নই। সবার সাথে যোগাযোগ করছি। কাস্টমসে যে মামলা হয়েছেম এ ব্যাপারে লোক নিয়োগ করা হয়েছে। মামলা সমাধান করে সব প্রবাসীদের মালামাল তাদের ঠিকানায় পৌছে দেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শতাধিক প্রবাসীসহ মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়ার সাংবাদিকরা।