মরণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা কমে যেতে পারে, এমনকি বন্ধ্যাত্বের পরিণতিও বরণ করতে হতে পারে। গত বৃহস্পতিবার চীনের হুবেই প্রদেশের সরকারি একটি ওয়েবসাইটে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়।
হুবেইয়ের রাজধানী উহানের টংজি হাসপাতালের রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিন সেন্টারের গবেষকরা জানান, যেসব পুরুষ কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে আবার সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাদের প্রজনন ক্ষমতায় কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে কি না, সে বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তাত্ত্বিকভাবে এর যথেষ্ট সম্ভবনা রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নভেল করোনাভাইরাস ও সার্স (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম) একই গোত্রভুক্ত। দুটি ভাইরাসই এইস২ নামে একটি এনজাইমের সঙ্গে মিশে শরীরের কোষে আক্রমণ করে। এইস২ সাধারণত অণ্ডকোষ, কিডনি ও হৃদযন্ত্রেই বেশি থাকে। এ ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণে পুরুষদের অর্কাইটিস (অণ্ডকোষে প্রদাহ) হতে পারে, যার ফলে শরীরে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে গিয়ে বন্ধ্যাত্বও সৃষ্টি হতে পারে।
যদিও হুবেই সরকারের ওয়েবসাইটে ওই প্রতিবেদন প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা পর সেটি সরিয়ে ফেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে কী কারণে তা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি।
ওই প্রতিবেদনের সঙ্গে একমত অন্য বিশেষজ্ঞরাও। সাংহাইয়ের ইউয়েইয়াং হাসপাতলের পুরুষরোগ বিশেষজ্ঞ কি গুয়াংচং বলেন, ভাইরাসজনিত সংক্রমণে পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা কমে যাওয়া নতুন কিছু নয়। হেপাটাইটিস বি, মাম্পসের মতো রোগে অনেকেরই এ ধরনের সমস্যা হয়। মাম্পসের এক তৃতীয়ংশ রোগীই অর্কাইটিসে ভোগেন। এ কারণে যেসব পুরুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের প্রজনন ক্ষমতা ঠিক আছে কি না, সে বিষয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরার্মশ নেওয়া উচিত।
এই ভাইরাসে বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৩৮ হাজার ২৭১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন ৫ হাজার ৮২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৭০ হাজার ৭১৯ জন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ ছাড়া ৬২ হাজার ৪৭০ জন বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।