কথায় আছে, ‘মাথা আছে যার, ব্যথা আছে তার’ অর্থাৎ মাথা আছে বলে ব্যথা করাটা মোটেও অস্বাভাবিক নয়। আর এ কথা মেনে নিয়েই আমরা সাধারণত জীবনযাপন করি। মাথাব্যথার বেশিরভাগ কারণ নিউরোলজি বা স্নায়ুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। নিউরোলজিক্যাল কারণ ছাড়াও কিন্তু মাথাব্যথা হতে পারে। তবে তার পরিমাণ খুবই কম। যেমন চোখ, দাঁত, সাইনাস, মুখের সমস্যার কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে।
চোখের বিভিন্ন সমস্যার কারণেও অসংখ্য মানুষ প্রচণ্ড মাথাব্যথা সমস্যায় ভুগে থাকেন। তবে এই ব্যথা বেশি হয়ে থাকে আই স্ট্রেইন বা চোখে চাপের কারণে। একটানা চোখকে বেশিক্ষণ ব্যবহার করলে চোখের ওপর ভীষণ প্রেসার বা চাপ পড়ে যায়। চোখের কারণে যত মাথাব্যথা হয়, তার বেশিরভাগ কিন্তু চোখের স্ট্রেইন। চোখের চাপের আরও কিছু উপসর্গ থাকে। যেমন চোখে ক্লান্তি, চোখে ব্যথা, চোখ দিয়ে পানি পড়া বা চোখ শুকিয়ে খচখচ করা, চোখে দেখার সমস্যা থেকেও মাথাব্যথা হতে পারে। বিশ্রামে থাকলে কিন্তু চোখের সমস্যা কমে যায়।
অনেকক্ষণ ধরে কম্পিউটার, ল্যাপটপে কাজ করলে বা বেশিক্ষণ ধরে মনোযোগের কাজ, যেমন পড়াশোনা, গাড়ি চালানো, দাবা খেলা, টিভি দেখা ইত্যাদিতেও মাথাব্যথা হতে পারে। এছাড়া চোখে ইনফেকশন হলে মাথাব্যথা হতে পারে। কন্টাক্ট লেন্স বেশি ব্যবহার করলে হতে পারে মাথাব্যথা। কম আলোয় পড়াশোনা করলে
বয়স্কদের চোখের গ্রন্থির (যাকে বলা হয়ে থাকে লেক্রিমাল গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থি) কার্যক্ষমতা কমে যায়। ফলে চোখ ভেজা ভেজা রাখতে পারে না। চোখ শুকিয়ে যায়, জ্বালাপোড়া করে। এ থেকেও হতে পারে মাথাব্যথা।
চোখের কারণে মাথাব্যথা দূর করতে হলে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন মেনে চলুন ২০-২০-২০ নিয়ম। ২০ মিনিট স্ক্রিনে কাজ করার পর ২০ মিটারের বেশি দুরত্বে ২০ সেকেন্ড তাকান। স্কিন ব্যবহার করার সময় ঘনঘন চোখের পাতা ফেলুন। কম আলোয় পড়াশোন বা অন্য কাজ করবেন না। যাদের কম্পিউটার বা ল্যাপটপে অনেকণ কাজ করতে হয়, তাদের স্ক্রিন চোখ থেকে কমপক্ষে ২৫ ইঞ্চি দূরে রাখুন। স্ক্রিন রাখুন চোখের লেভেলে খুব বেশি উপরেও না আবার বেশি নিচেও না। চোখে ব্যথা হলে বা বেশিক্ষণ কাজ করলে কিছু সময় চোখ বন্ধ করে থাকুন। সমস্যা না কমলে নিউরোলজিস্টের শরণাপন্ন হোন। নিউরোলজিস্ট আপনাকে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন চক্ষু বিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে কিনা। কারণ খুব অল্প সংখ্যক মানুষের চোখের জন্য মাথাব্যথা হয়।