ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেছেন, ক্রেতার কাছ থেকে ডিমের দাম ১২ টাকার বেশি রাখা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী ১৬ আগস্ট বুধবার থেকে ডিম উৎপাদনকারী করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও ফার্ম এবং পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের ডিম কেনাবেচার সময় পাকা রশিদ ব্যবহারের নির্দেশ দেন তিনি।
সোমবার অধিদপ্তরের সভাকক্ষে ডিমের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে ডিম উৎপাদনকারী, এজেন্ট, ডিলার ও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্বকালে মহাপরিচালক এ কথা বলেন।
ভোক্তার মহাপরিচালক বলেন, আমরা শুধু পাকা রশিদ নিশ্চিত করতে চাই। আগামী ১৬ আগস্ট থেকে যেখানে পাকা রশিদ পাওয়া যাবে না, সেখানে আমরা কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেব।
তিনি আরও বলেন, খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১২ টাকায় ডিম বিক্রি হচ্ছে কিনা, সেটি তদারকিতে ওই দিন থেকে আমরা মাঠে আরও জোরদারভাবে কাজ করব। এছাড়া ডিম উৎপাদনকারী বড় যে ৫ থেকে ৬টি করপোরেট প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলোকে আগামী ১৬ আগস্ট থেকে প্রতিদিন সকাল বেলা ডিম বিক্রির তথ্য ভোক্তা অধিদপ্তরকে দিতে হবে।
সফিকুজ্জামান বলেন, ডিম উৎপাদক থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রিতারা যদি পাকা রশিদ ব্যবহার করেন, তাহলে তদারকির সময় ডিম কত টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে তা জানতে পারব। কোনপর্যায় থেকে ডিমের দাম বাড়াচ্ছে সেটা জানতে পারব; কিন্তু কেউ পাকা রশিদ দিচ্ছেন না। এজন্য ব্যবসায়ীরা একে অন্যকে দোষারোপ করছেন।
বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়লে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নিরবচ্ছিন্ন তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, জনবলের সীমাবদ্ধতায় আমরা সত্যিকার অর্থে ডিমের ক্ষেত্রে সেই ফোকাসটি দিতে পারিনি।
তিনি বলেন, আমাদের আমিষের প্রধান চাহিদা পূরণ করছে ডিম এবং বয়লার মুরগি; কিন্তু এই খাতেও অস্থিরতা বিরাজ করছে। হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাচ্ছে, কমে যাচ্ছে। এজন্য ক্ষুদ্র খামারিদের ১৫ শতাংশের ফার্ম বন্ধ হয়ে গেছে। তাই এই খাতে শৃঙ্খলা আসা প্রয়োজন।
ভোক্তার মহাপরিচালক বলেন, ডিম আমদানির সুযোগ রয়েছে। এখন আমরা যদি বর্ডার খুলে দেই এবং ভারত থেকে ৬ রুপিতে ডিম আসে, তাহলে দেশে একটি পোলট্রিও টিকতে পারবে না। একটি করপোরেট গ্রুপও কম্পিটিশন করতে পারবে না। আমরা আপনাদের (ব্যবসায়ী) ততক্ষণ প্রোটেকশন দেব, যতক্ষণ আপনারা বাজার অস্থির করবেন না।
এ সময় অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. শহীদুল আলম, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রোগ্রাম কর্ডিনেটর আহমেদ ইকরামুল্লাহ, এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র অতিরিক্ত মহাসচিব শাহ মোহাম্মদ আব্দুল খালেক, তেঁজগাও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আমান উল্লাহ, পিপলস পোল্ট্রি ফার্ম অ্যান্ড হ্যাচারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুল রহমান, বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।