পিরোজপুরের কাউখালীতে ব্রিজ মেরামত করতে রডের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে সুপারি গাছ। ওই উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের (কাঠালিয়া) নূরুল ইসলামের বাড়ির সামনে ব্রিজ মেরামতের সময় সুপারি গাছ ব্যবহার করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই ব্রিজের তিনটি স্ল্যাব ভেঙে গেছে। প্রতিটি স্ল্যাব রডের পরিবর্তে পাঁচটি করে সুপারি গাছের চেরা (স্থানীয় লোকজন ‘সুপারির ডাব’ বলেন) দিয়ে ঢালাই করা হয়েছে। ব্রিজের প্রায় সবগুলো স্ল্যাবই ফেটে গেছে।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন এডিপির আওতায় কাউখালী ইউনিয়নে ছয়টি উন্নয়ন কাজের একটি ওই ব্রিজ মেরামত কাজ। মেসার্স হালিমা এন্টারপ্রাইজ, মালিক লাভলু খান ওই ব্রিজ মেরামত কাজ বাস্তবায়ন করেন। কার্যাদেশ মোতাবেক ২০২২ সালের ২০ জুন কাজ শেষ করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল লতিফ জানান, ঠিকাদার তার নিজের এলাকায় বসে স্ল্যাব তৈরি করে নিয়ে এসে ব্রিজে একদিনের মধ্যে বসিয়ে চলে গেছেন। কাজ করে যাওয়ার পর থেকেই স্ল্যাবগুলোতে ফাটল দেখা দেয়। তিনদিন আগে তিনটি স্ল্যাব ভেঙে পড়ে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউএনও সরেজমিন পরিদর্শন করেন।
এ বিষয়ে মেসার্স হালিমা এন্টারপ্রাইজ মালিক লাভলু খান বলেন, ‘এক দেড় বছর আগের ঘটনা, এখন কি বলব? এ কাজ আমি করিনি। কাজটি কাউখালীর এক ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলাম।’
প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘স্ল্যাব যখন ঢালাই দিয়েছিল তখন উপজেলা প্রকৌশলী বা তার প্রতিনিধিরা দেখেননি কেন? এখন সমস্যার কথা বললে হবে কিভাবে।’
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেনের মোবাইলে বার বার ফোন দিয়েও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্বজল মোল্লা বলেন, ‘খবর পেয়েই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থা দেখেছি এবং অবাক হয়েছি। উপজেলা চেয়ারম্যান সাহেবের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
উপজেলা চেযারম্যান আবু সাইদ মনু মিয়া বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে ইউএনওকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করেছি। ফিরে তাৎক্ষণিক সভা করেছি। প্রকৌশলী আসতে পারেন নি। তাকে আগামী ৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। বিষয়টি এলাকার সংসদ সদস্য মহোদয়কে, এলজিইডির চিফ ইঞ্জিনিয়ার, নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হবে। এতবড় দুর্নীতি করতে দেওয়া যায় না।’