শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫১ পূর্বাহ্ন

দেশে কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে তীব্র হচ্ছে ধনী-গরিব বৈষম্য

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৬০ বার

অর্থনীতিতে নানা চাপ থাকলেও দেশে কোটি টাকার ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে, এমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা রয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৫৪টি। কোটি টাকার ওপরে এসব ব্যাংক হিসাবে মোট জমা আছে সাত লাখ ৩১ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক জানুয়ারি-মার্চে এক কোটি টাকার বেশি আমানতের ব্যাংক হিসাব ছিল এক লাখ ১০ হাজার ১৯২টি। ওই প্রান্তিকে এসব ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল ছয় লাখ ৯০ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে কোটি টাকার ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে তিন হাজার ৩৬২। একই সময়ে এসব হিসাবের বিপরীতে জমা টাকার পরিমাণ বেড়েছে ৪০ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। দেশের ব্যাংক খাতের মোট আমানতের ৪৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ জমা করেছেন কোটি টাকার হিসাবধারীরা।

কোটি টাকা জমা রাখা হিসাবের সংখ্যা শুধু বাড়েনি, এসব অ্যাকাউন্টে মজুদের পরিমাণও বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। তবে ব্যাংক হিসাব দিয়ে দেশে কোটিপতির সংখ্যা নিরূপণ করা যায় না। কারণ, কোটি টাকা জমা থাকা ব্যাংক হিসাব ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের নামে খোলা হয়। আবার এক নামে একাধিক হিসাব খোলা যায়। ফলে দেশে প্রকৃত কোটিপতির সঠিক হিসাব পাওয়া যায় না। এতে কত মানুষের কোটি টাকা রয়েছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান মেলে না। ব্যাংকে কোটি টাকার হিসাব সংখ্যা থেকে একটি ধারণা পাওয়া যায় মাত্র। কোটি টাকার ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা করোনা মহামারীর পর থেকে দ্রুত বাড়ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৩ সালের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত জুন পর্যন্ত ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীর অ্যাকাউন্ট রয়েছে ১৪ লাখ ৫৯ হাজার। এর বিপরীতে আমানত রয়েছে ১৬ লাখ ৮৭ হাজার কোটি টাকা। অন্য দিকে, এক হাজার টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত মোট আমানতকারীর অ্যাকাউন্টের সংখ্যা রয়েছে ১০ কোটি ৫১ লাখ। এসব আমানতের বিপরীতে অর্থ মজুদ রয়েছে ছয় হাজার ২৬১ কোটি টাকা। পাঁচ হাজার এক টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত অ্যাকাউন্ট রয়েছে ৫৬ লাখ ৬০ হাজার। এদের বিপরীতে অর্থ মজুদ রয়েছে চার হাজার ২৩ কোটি টাকা।

ক্ষুদ্র আমানতকারীদের আমানতের পরিমাণ কমার কারণ হিসেবে বিশ্লেষকদের বক্তব্য, তারা তাদের আয়ের সাথে ব্যয় সমন্বয় করতে পারছেন না। সব ধরনের পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। সেই সাথে বেড়েছে পরিবহন ব্যয়। পাশাপাশি বাসা ভাড়াসহ বিদ্যুতের দাম। সব মিলিয়ে জীবনযাত্রার ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়েছে। এর ফলে আগে একই আয় দিয়ে যে পরিমাণ পণ্য পাওয়া যেত, এখন তা দিয়ে কম পাওয়া যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো হচ্ছে কম ব্যয় করে। আয়ের সাথে ব্যয় সমন্বয় করতে না পারায় তারা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন। সঞ্চয় ভেঙে তাদের খেতে হচ্ছে। এতে গরির আরো গরিব হয়ে পড়ছে।
অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি বলে দিচ্ছে, একশ্রেণীর মানুষের হাতে অস্বাভাবিক হারে অর্থ চলে আসছে। ফলে কোটিপতিদের আমানত বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে। বিপরীতে অর্থাৎ ক্ষুদ্র আমানতকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি না পাওয়ার অর্থ- দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য বেড়েছে। সমাজে ধনী-গরিবের আয়বৈষম্য তীব্রতর হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com