আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী রিজার্ভ নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বুধবার (৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন শর্ত পূরণের অগ্রগতি, সফলতা ও ব্যর্থতা তুলে ধরা হয়। বৈঠকে রিজার্ভের শর্ত পূরণে ব্যর্থতার কথাও জানানো হয়।
আইএমএফ-এর কাছ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ। এই ঋণ পাওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত মানার প্রতিশ্রুতি ছিল। যার মধ্যে অন্যতম হলো গত জুনে প্রকৃত (নিট) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকতে হবে ২ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলার। শর্ত অনুযায়ী সেই পরিমাণ রিজার্ভ রাখতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।
এছাড়াও শর্তানুযায়ী সেপ্টেম্বরে ২ হাজার ৫৩০ ডলার এবং ডিসেম্বরে ২ হাজার ৬৮০ ডলার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাখতে হবে। এই শর্ত মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত জানুয়ারির শেষ দিকে আইএমএফ ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। এই ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার ইতোমধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে ছাড় করা হয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় করার কথা আগামী নভেম্বরে। কিন্তু আইএমএফ যেসব শর্ত দিয়েছিল তা পূরণ হয়েছে কিনা তা জানতে আইএমএফের প্রতিনিধিদল ইতোমধ্যে ঢাকায় এসেছে।
জানা যায়, আইএমএফ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সাথে বসে আলোচনা করবে। প্রথম তথ্য নিচ্ছে তারপর আবার বৈঠক করবে। আগামী ১৯ অক্টোবর শেষ মিটিং; সেখানে তাদের মতামত জানাবে, আমরাও আমাদের বিষয়গুলো জানাব।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানা যায়, আইএমএফের ঋণের যেসব শর্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের পূরণ করার কথা, তার মধ্যে বেশির ভাগ শর্তই পূরণ হয়েছে। তবে যে পরিমাণ নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাখার শর্ত দেয়া হয়েছিল, সেই পরিমাণ রিজার্ভ রাখতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো: মেজবাউল হক বলেন, ইতোমধ্যে আইএমএফের বেশকিছু শর্ত পূরণ করা হয়েছে। দুই একটি জায়গায় ব্যর্থতা আছে। রিজার্ভ কিছু কম আছে। রাজস্ব আহরণ কম হয়েছে। তবে অনেক কিছু বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
এখন রিজার্ভের তিন ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। যেমন মোট রিজার্ভ, বিপিএম ৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ও প্রকৃত রিজার্ভ। দুই ধরনের হিসাব (মোট রিজার্ভ, বিপিএম ৬) বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশ করলেও প্রকৃত রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে না। তবে প্রকৃত রিজার্ভের তথ্য নিয়মিত আইএমএফকে জানাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য বলছে, গত জুনে দেশের মোট (গ্রস) রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ১২০ কোটি ডলার। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম ৬ (ব্যাল্যান্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) অনুযায়ী জুনে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৪৭৫ কোটি ডলার।9 সর্বশেষ ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট রিজার্ভ আছে ২ হাজার ৭০৫ কোটি ডলার আর বিপিএম ৬ অনুযায়ী আছে ২ হাজার ১১৫ কোটি ডলার।