ইতিহাস গড়েই জিতল পাকিস্তান। বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড গড়ল বাবর আজমের দল। শ্রীলঙ্কার দেয়া ৩৪৫ রানের লক্ষ্য ১০ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখেই পেরিয়ে যায় তারা। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।
প্রবাদ আছে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলতে হয়। পাকিস্তানও যেন মেনে নিল সেই রীতি। হায়দ্রাবাদে মঙ্গলবার(১০ অক্টোবর) জোড়া শতক দিয়েই প্রায়শ্চিত্ত করলো জোড়া শতকের। আবদুল্লাহ ও রিজওয়ানের শতকে বিফলে গেল কুশল মেন্ডিস ও সামারাবিক্রমার জোড়া শতক।
অবশ্য শুরুটা ভালো ছিল না পাকিস্তানের। ৮ ওভারে মাত্র ৩৭ রানে হারিয়ে ফেলে ২ উইকেট। নিজেদের শীর্ষ দুই ব্যাটারকে হারিয়ে ফেলে তারা। ইমাম উল হক ১২ বলে ১২ ও বাবর আজম আউট হন ১৫ বলে ১০ রানে। দুটি উইকেটই নেন মাদুশাঙ্কা।
শুরুতেই জোড়া উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় পাকিস্তান। তবুও কি তাড়া করতে হবে রেকর্ড রান! এমতাবস্থায় এগিয়ে আসেন মোহাম্মদ রিজওয়ান, আব্দুল্লাহ শফিককে নিয়ে ধরেন ইনিংসের হাল। ধূসর হয়ে যাওয়া স্বপ্ন ফের রঙিন করে তুলেন দু’জনে।
১৬০ বল থেকে গড়ে তোলেন দু’জনে ১৭৬ রানের জুটি৷ প্রথমে শতক তুলে নেন আব্দুল্লাহ শফিক। তবে এরপর ইনিংসটা আর টানতে পারেননি, ১০৩ বলে ১১৩ রানে আউট হন তিনি। পাথিরানার বলে দূর্দান্ত ক্যাচ নেন হেমান্থ। ৩৩.১ ওভারে ২১৩ রানে আউট হন আব্দুল্লাহ।
তখনো জয়ের জন্য ১০১ বলে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৩২ রান। হাতে ৭ উইকেট। ম্যাচে ফেরা সম্ভাবনা ছিল লঙ্কানদের৷ তবে সুযোগ দেননি রিজওয়ান। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেই জয় নিশ্চিত করেন দলের। তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় ও বিশ্বকাপে নিজের প্রথম শতক।
তবে চোখে পড়ার মতো ছিল রিজওয়ানের লড়াই। বারবার চোটে অস্বস্তিবোধ করার পরও দলের জন্য লড়ে যান। যাহোক, সৌদ শাকিল ৩০ বলে ৩১ ও ইফতেখারের ব্যাটে ১০ বলে ২২ রান। রিজওয়ান অপরাজিত থাকেন ১২১ বলে ১৩৪ রান।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৫ রানে প্রথম উইকেট হারালেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় শ্রীলঙ্কা। ৯৯ বলে ১০২ রানের জুটি গড়েন পাথুম নিশানকা ও কুশল মেন্ডিস। ৬১ বলে ৫১ করে নিশানকা আউট হলে ভাঙে জুটি।
নিশানকা আউট হলেও শতক তুলে নেন কুশল মেন্ডিস। সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ছন্দে থাকা এই ব্যাটার বিধ্বংসী হয়ে উঠেন আজ। আউট হন ৭৭ বলে ১২২ রান করে। তবে ততক্ষণে সামারাবিক্রমার সাথে গড়ে তুলেন ৭০ বলে ১১১ রানের ঝড়ো যুগলবন্দী। ২৮.২ ওভারে লঙ্কানদের সংগ্রহ তখন ৩ উইকেটে ২১৮ রান।
কুশল ফিরলে একা হয়ে পড়েন সামারাবিক্রমা, তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি সতীর্থদের কেউ৷ তবে তিনি বসে থাকেননি, খেলতে থাকেন নিজের মতো। তুলে নেন ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম শতক৷ ৪৮তম ওভারে আউট হবার আগে করেন ৮৯ বলে ১০৮ রান। পাকিস্তানের সংগ্রহ তখন ৭ উইকেটে ৩৩৫।
শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৪৪ রান করে শ্রীলঙ্কা। এই তিনজন বাদে বাকি ৭ ব্যাটার মিলে করেন মোটে ৪৯ রান, বল খেলেন ৮৪টি! বুঝাই যাচ্ছে লঙ্কানরা আরো বড় সংগ্রহ থেকে বঞ্চিত হয়েছে নিজেদের ব্যর্থতাতেই!
পাকিস্তানের হয়ে ৪ উইকেট নেন হাসান আলি। হারিস রউফ পান ২ উইকেট।