বেশির ভাগ মানুষ দাঁতের হলুদ দাগ নিয়ে চিন্তিত থাকে। খাদ্যাভ্যাসের কারণে কারও কারও দাঁত আরও একটু বেশি হলদে হয়ে যায়। সেই দাঁত পরিষ্কার করতে অনেকে প্রচুর খরচও করেন।
তবে দাঁতের হলদে ছাপ তোলা কঠিন কোনও কাজ নয়। বরং খুব সহজেই ঘরোয়া পদ্ধতিতে তুলে ফেলা যায় দাঁতের হলুদ ছোপ।
আয়ুর্বেদে এমন এক পদ্ধতি রয়েছে, যা দাঁতের হলদে ছোপ তোলা এবং মাড়ির যত্ন— দুটি কাজই অনায়াসে করে ফেলতে পারে। তেল দিয়ে কুলকুচি করার এই পদ্ধতি অন্যান্য দেশে ‘অয়েল পুলিং’ নামে পরিচিত।
এই পদ্ধতিতে পানি বা মাউথ ওয়াশের বদলে কুলকুচি করতে হয় তেল দিয়ে। পশ্চিমের দেশগুলিতে এই পদ্ধতিকে বলে অয়েল পুলিং। আয়ুর্বেদ অনুসারে, সকালে খালি পেটে বাসি মুখে এটি করতে হয়। তাহলে সুফল সবচেয়ে ভাল পাওয়া যায়।
এই পদ্ধতিতে মুখ ভর্তি তেল নিয়ে কুলকুচি করতে হয় তবে তেল যেনো গিলে ফেলা না হয় বা পেটে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
চলুন জেনে নেই কোন কোন তেল দিয়ে অয়েল পুলিং করা যায়?
চুল, ত্বক থেকে দাঁত— এক তেলেই ঝকঝকে হয়ে উঠতে পারে। মুখের দুর্গন্ধ দূর করা থেকে দাঁতের স্বাস্থ্য ভাল রাখা, সবই করতে পারে নারকেল তেল। নারকেল তেলের মধ্যে রয়েছে লরিক অ্যাসিড, যা আসলে মধ্যমানের এক ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড। এই অ্যাসিড মুখের মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বাড়তে দেয় না।
অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল যৌগ ছাড়াও তিলের তেলে রয়েছে ভিটামিন ই, লিনোলেইক অ্যাসিড এবং প্রয়োজনীয় বেশ কিছু ফ্যাটি অ্যাসিড। এই সমস্ত উপাদান মাড়ির যাবতীয় সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। মাড়ির স্নায়ু স্পর্শকাতর হয়ে পড়লেও তিলের তেল তা নিরাময়ে সাহায্য করে।
স্বাস্থ্য সচেতন মানুষেরা বিভিন্ন খাবারে, স্যালাডে অলিভ অয়েল ব্যবহার করে থাকেন। ওই একই তেল দিয়ে কুলকুচিও করা যায়। অলিভ অয়েলে রয়েছে পলিফেনল এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা প্রদাহ নাশ করতে সাহায্য করে।
নারকেল তেল, কিংবা তিলের তেল বাদ দিয়ে কুলকুচির কাজে সূর্যমুখীর তেল ব্যবহার করার রেওয়াজ খুব প্রচলিত নয়। তবে ভিটামিন ই এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডের গুণে ভরপুর এই তেল দাঁত এবং মাড়ির সমস্যা নিরাময়ে সাহায্য করে।
অয়েল পুলিং-এ ব্যবহৃত বহু পুরনো একটি উপাদান হল ঘি। ঘিয়ের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ, মুখের ভিতরের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। ক্ষয়ে যাওয়া দাঁত এবং মাড়ির যত্নে ব্যবহার করা যেতেই পারে ঘি। দাঁতের হলদে ছোপ এবং মাড়ির স্বাস্থ্য— দুই দিকই রক্ষা হবে এতে।