দিনাজপুরের ফুলবাড়ীসহ পাশের বিভিন্ন এলাকায় গুজব ছড়িয়েছে যে, সদ্যোজাত এক শিশু বলেছে, ‘তোমরা আদা, গোলমরিচ, কালোজিরা আর লবঙ্গ একত্রে খাও। এতে করোনাভাইরাস সংক্রামণ হবে না।’ এই কয়েকটি কথা উচ্চারণ করেই ওই শিশু মারা গেছে।
গত শনিবার রাত থেকে নানা মাধ্যমে ওই গুজব ছড়িয়ে পড়লে ঘুম থেকে উঠে আদা, গোলমরিচ কালোজিরা ও লবঙ্গ সংগ্রহ করে খাওয়ার হিড়িক পড়ে।
গতকাল রোববার রাতে স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মী জানান, হঠাৎ করে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি তাকে বলে, বিরল উপজেলায় একটি শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর কথা বলেছে। সে জানায়, ‘তোমরা আদা, গোলমরিচ, কালোজিরা আর লবঙ্গ একত্রে খাও। এতে করোনাভাইরাস সংক্রামণ হবে না।’ এই কথা বলার পরই ওই শিশু মারা যায়। এরপর থেকে অনেকে এসব খাওয়া শুরু করেন।
উত্তর রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক মহিদুল ইসলাম মাজু জানান, ওই রাতে সেখানেও একই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে সেখানকার মানুষ আদা, গোলমরিচ, কালোজিরা ও লবঙ্গ সংগ্রহ শুরু করে এবং খেতে থাকে।
আলাদিপুর গ্রামের কালীপদ রায় জানান, আজ সোমবার বীরগঞ্জ থেকে তার এক নিকট আত্মীয় একই কথা জানান। তিনি আদা, গোলমরিচ, কালোজিরা ও লবঙ্গ একত্রে খাওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু তিনি খাননি।
পৌর এলাকার কাঁটাবাড়ী গ্রামের সঞ্চয় কুমার জানান, ঘটনাটি জানার পর কষ্ট করে আদা, গোলমরিচ, কালোজিরা ও লবঙ্গ সংগ্রহ করে তিনিও খেয়েছেন এবং পরিবারের লোকজনকেও খাইয়েছেন। তার ধারণা, এতে কোনো উপকার হলে হতেও পারে, না হলে তো কোনো ক্ষতি নেই।’
একই গুজব ছড়িয়ে পড়ে পাশের জেলা রংপুরের মিঠাপুকুরে। উপজেলা খড়মপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক নূর আলম বলেন, ‘রোববার রাতে মাদিলাহাট এলাকায় ওই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তে আদা, হলুদ, গোলমরিচ, কালোজিরা সংগ্রহে ধুম পড়ে যায়।’
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এমন গুজবের কথা কানে এসেছে। বিষয়টি গুজব। এই গুজবে কান না দেওয়ার জন্য জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে।’
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএও) মো. আবদুস সালাম চৌধুরী বলেন, ‘এটি গুজব। থানার ওসি সাহেবকে বলা হয়েছে, গুজব রটনাকারীদের ধরে আইনের আওতায় আনতে। সেনাবাহিনীও মাঠে কাজ করছে।’