দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। রাতের ঘন কুয়াশা আর ভোরে ঘাসের ডগায় শিশির বিন্দু জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। শিবচর উপজেলায় রাত থেকে সকাল পর্যন্ত অনুভূত হতে শুরু করেছে শীতের পরশ। ভোর ৫টা থেকে সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার দেখা মিলছে। ফসলের মাঠে উঁকি দিচ্ছে নতুন বীজের প্রস্ফুটিত চারা। তাতে শিশির বিন্দু ছড়িয়ে দিচ্ছে মৃদু শীতলতা।
শীতের আগমন শুরু হয়েছে মাদারীপুর শিবচরে। গত কয়েকদিন ধরেই দিনের বেলায় কিছুটা গরম অনুভূত হলেও সন্ধ্যা নামার পর একটু একটু করে কুয়াশা জড়িয়ে ধরছে প্রকৃতিকে। সকালেও দেখা মিলছে সেই কুয়াশার, যা হালকা শীতের অনুভূতি জাগিয়ে দেয়।
স্থানীয়রা জানান, দিনে কিছুটা গরমভাব থাকে। আবার মাঝরাতের দিকে বেশ ঠাণ্ডা পড়ে। ভোর থেকে আবার কুয়াশাও দেখা যাচ্ছে। এমন আবহাওয়ায় ঠাণ্ডা-কাঁশির প্রকোপ বাড়তে পারে।
সরেজমিন দেখা গেছে, শিবচর উপজেলায় শীতকালের ফসল গম, আলু, টমেটো, গাজর, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মরিচ, সরিষাসহ নানা রকমের রবিশস্য চাষাবাদের ব্যাপক প্রস্তুতি। শিবচরে ও আশপাশের এলাকার কৃষিনির্ভর পরিবারের কৃষকরা জমিতে গিয়ে দিনরাত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মৌসুমি ফসল চাষের জন্য। কুয়াশার মধ্যেই দেখা যাচ্ছে আবহমান বাংলার চিরচেনা এসব দৃশ্য।
এ সময়ে কুয়াশার কারণে এবার শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। তারা বলছেন, এখন আর রাতে ফ্যান চালানো যাচ্ছে না। শেষ রাতে কাঁথা বা পাতলা কম্বল জড়াতে হচ্ছে শরীরে। তবে ঘন কুয়াশা এবং তীব্র শীত আসতে দেরি আছে।
এদিকে শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউ, টমেটো, লাল শাকসহ বিভিন্ন ধরনের আগাম শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে।
বন্দরখোলা ইউনিয়নের বাসিন্দা সজিব মিয়া বলেন, আমাদের ওয়ার্ডটি যেন একবারেই প্রত্যন্ত গ্রামের প্রতিচ্ছবি। খোলা জায়গা বেশি থাকার কারণে এখানে কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে প্রতিদিন। এখানকার অনেক পরিবার এখনো কৃষিনির্ভর। ইতোমধ্যে শীতের আগমনী বার্তায় প্রস্তুতিও শুরু করেছেন এলাকার মানুষ। বস্তাবন্দি রাখা গরম কাপড় বের করতে শুরু করেছেন।
পাঁচ্চর এলাকার ভ্যান চালক রুবেল মিয়া বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সন্ধ্যার পর রাস্তায় কুয়াশা ও শীত অনুভব হয়। রাত যত বাড়ে শীতের অনুভূতিও তত বেশি দেখা যায়। শীতের কারণে ঠাণ্ডা লাগায় রাত সাড়ে ১০টার পর আর বাইরে থাকি না। বাড়িতে চলে আসি।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোছাঃ সেলিনা আক্তার বলেন, শীত আসতে শুরু করেছে। শীতের সময় রোগ বালাইয়ের প্রকোপ দেখা দেয়। তাই এ সময় রোগীসহ সবাইকেই বেশি সতর্ক থাকতে হবে।