শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন

কৃপণতার পরিণাম

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৫১ বার

ইসলামে অপব্যয় যেমন নিন্দনীয় তেমনিভাবে কৃপণতাও একটি নিন্দনীয় বিষয়। কৃপণতা এমন মন্দ স্বভাব যা শয়তানের পছন্দ; আর তার অনুসারীরাই কৃপণতা করে। কৃপণতা মু’মিনের স্বভাব হতে পারে না। শরিয়ত নির্দেশিত ও প্রয়োজনীয় বিষয়ে ব্যয় না করা বা কম করাই হলো কৃপণতা।
কৃপণতা শরিয়তে নিষিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি সামাজিকভাবেও দৃষ্টিকটু বিষয়। সমাজের সবাই কৃপণ ব্যক্তিকে ঘৃণা করে। কৃপণতা জঘন্যতম বৈশিষ্ট্য ও আত্মিক ভয়ানক ব্যাধি । অতিরিক্ত লোভ-লালসা থেকেই এই ব্যাধির সৃষ্টি। রাসূলুল্লাহ সা: কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ আখ্যা দিয়েছেন।

রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘হে বনু সালামা! তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ্দ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ : ২৯৬)

কৃপণতার কারণে দুনিয়ার জীবনে সে সম্পদ উপভোগ করতে পারে না তেমনি পরকালেও তার সম্পদ মূল্যহীন হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যে কার্পণ্য করে ও নিজেকে স্বয়ংসম্পন্ন মনে করে, আর ভালো বিষয়কে মিথ্যাজ্ঞান করে, অচিরেই তার জন্য আমি সুগম করে দেবো (জাহান্নামের) কঠোর পরিণামের পথ। যখন সে ধ্বংস হবে, তখন তার সম্পদ তার কোনো কাজে আসবে না।’ (সূরা লাইল : ৮-১১)
আল্লাহ তায়ালা কৃপণতাকে অমঙ্গলজনক হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ইরশাদ করেন- আল্লাহ প্রদত্ত অনুগ্রহে (সম্পদে) যারা কৃপণতা করে, তারা যেন কিছুতেই মনে না করে, এটা তাদের জন্য ভালো কিছু। বরং এটা তাদের পক্ষে অতি মন্দ। যে সম্পদের ভেতর তারা কৃপণতা করে, কিয়ামতের দিন তাকে তাদের গলায় বেড়ি বানিয়ে দেয়া হবে। আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর মীরাছ কেবল আল্লাহরই জন্য। তোমরা যা কিছুই করো আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক অবগত। (সূরা ইমরান-১৮০)
কৃপণতা অত্যন্ত খারাপ স্বভাব। মুমিনের মাঝে এ স্বভাব থাকতে পারে না। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, মু’মিনের মধ্যে দু’টি স্বভাব একত্রে জমা হতে পারে না, কৃপণতা এবং অসদাচরণ। (তিরমিজি : ১৯৬২)

আবু হুরাইরা রা: থেকে বর্ণিত, আমি রাসূল সা:কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে সে খুবই নিকৃষ্ট। (আবু দাউদ :২৫১১)
রাসূল সা: মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (আবু দাউদ : ১৫৪০)
আল্লাহর দেয়া সম্পদ তার নির্দেশিত পন্থায় পরিচালিত করতে হবে। সময়মতো তার জাকাত আদায় করা, আল্লাহর রাস্তায় খরচ করা পরিবার-পরিজনের জন্যও খরচ করা ইত্যাদি কাজ করলে সফলতা অর্জন সম্ভব অন্যথায় আখেরাতে রয়েছে ভয়ানক শাস্তি।

লেখক :

  • মুফতি সফিউল্লাহ

শিক্ষক, জামিয়া মিফতাহুল উলূম নেত্রকোনা

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com