বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৬ অপরাহ্ন

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৪
  • ৫৬ বার

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ফাইরুজ অবন্তিকা আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে।

শুক্রবার রাত ১০টার দিকে আত্মহত্যা চেষ্টার আগে ফেসবুকে দেয়া দীর্ঘ এক পোস্টে তিনি জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে দায়ী করেন। এরপর কুমিল্লায় নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

ফাইরুজ অবন্তিকা কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকার বাসিন্দা। তিনি কুমিল্লা সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের মেয়ে।

অবন্তিকার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. এএনএম জোবায়ের।

আত্মহত্যার আগে ফেসবুক পোস্টে অবন্তিকা লিখেছেন, ‘আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই, তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী আর তার সহকারী হিসেবে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন অনলাইনে থ্রেটের ওপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেও আমার লাভ হয় নাই। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানানভাবে ভয় দেখায় আম্মানের হয়ে যে আমাকে বহিষ্কার করা ওনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার। আমি জানি এখানে কোনো জাস্টিস পাবো না।’

পোস্টে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘আমি ভিসি সাদেকা হালিম ম্যামের কাছে আপনি এই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে আপনার কাছে বিচার চাইলাম। আর আমি ফাঁসি দিয়ে মরতেসি। আমার ওপর দিয়ে কী গেলে আমার মতো নিজেকে এতো ভালোবাসে যে মানুষ সে মানুষ এমন কাজ করতে পারে।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র আম্মান সিদ্দিকীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।

তবে পোস্টে নাম উল্লেখ করা সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম বলেন, মেয়েটাকে দেখি ১ থেকে দেড় বছর আগে। তারা কয়েকজন সহপাঠী প্রক্টর অফিসে আসে। সে সময় তৎকালীন প্রক্টর মোস্তফা কামাল স্যার, আমিসহ আরও কয়েকজন সহকারী প্রক্টর অফিসে ছিলাম। মেয়েটা ফেক আইডি ব্যবহার করে তার বন্ধুদের এসএমএস দিত। এটা নিয়ে থানায় জিডি হয়েছে বলে আমাদেরকে জানানো হয়। পরে মেয়েটা স্বীকার করে। এরপর তার পরিবারের লোকজন অনুরোধ করে জিডি তুলে নেওয়ার জন্য। তখন সব প্রক্টরিয়াল টিম মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেয়, তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। কোনো ঝামেলা না হলে জিডি তুলে নেওয়া হবে। আমি কখনো মেয়েটার সাথে একা কথা বলিনি। সিসিটিভি ফুটেজ বা প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দেখলেও বুঝা যাবে। আপনারা ঘটনা তদন্ত করে দেখুন। আমি দোষী হলে শাস্তি দিন। কিন্তু আগেই আমাকে দোষী বানাবেন না দয়া করে। না হলে আমারও সুইসাইড করা লাগবে।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি। ছাত্রী তার মৃত্যুর জন্য দায়ী হিসেবে আমাদের প্রক্টরিয়াল টিমের একজন সদস্যদের নাম উল্লেখ করেছে। ভিসি ম্যাডাম সাময়িকভাবে তাকে অব্যহতি প্রদানের মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছেন। আইনগত প্রক্রিয়ায় তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে রাত ১২টার পর ফাইরুজ অবন্তীকার শুভাকাঙ্ক্ষী ও সহপাঠীরা ‘আমার বোন মরলো কেনো, বিচার চাই বিচার চাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে প্রক্টরকে ঘেরাও করে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, রাতের মধ্যেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com