করোনায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের লক্ষ্যে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। এ কারণে সকল মিষ্টি বিক্রির দোকানসহ হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন দুগ্ধ খামারিরা। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় অন্য এলাকার ক্রেতাও পাওয়া যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে দুধের চাহিদা একেবারেই নেই। এদিকে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে লোকসান গুনতে হচ্ছে খামারিদের।
হিসাব বিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেও কোনো চাকরি না করে নিজ উদ্যোগে শায়েস্তাগঞ্জ এগ্রোফার্ম ও এগ্রিটেক্ট ফার্ম লিমিটেড নামে দুটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার সৌরভ পাল চৌধুরী। তার এই ডেয়ারী ফার্মে দৈনিক প্রায় ২০০ লিটার দুধ উৎপন্ন হয়। এসব দুধ মিষ্টির দোকানসহ হোটেল-রেস্তোরাঁ ও বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে তিনি স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু করোনায় দোকানপাট বন্ধ থাকায় উৎপাদিত দুধ নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছেন তিনি।
শুধু সৌরভ পাল নয় শায়েস্তাগঞ্জে তার মতো আরো ৩২টি দুগ্ধ খামারের মালিকরা একই সমস্যায় পড়েছেন। এসব খামারিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মিষ্টির দোকানে কাঁচামাল হিসেবে গরুর দুধের চাহিদা ছিল প্রচুর। বর্তমানে এক লিটার দুধও তারা কিনছে না। এদিকে গরুর খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণে প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে।
সৌরভ পাল বলেন, আমার ফার্মে পাঁচজন শ্রমিক কাজ করে। দুধ বিক্রি করে তাদের পারিশ্রমিক দিয়ে নিজের পরিবারের খরচ চলত। বর্তমানে চাহিদা না থাকায় উৎপাদিত দুধ গাভীর বাছুরকে খাওয়াতে হচ্ছে। এদিকে ব্যাংক ঋণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে পথে বসতে হবে।
মায়া ডেইরি ফার্মের মালিক মিজানুর রহমান রাসেল বলেন, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার খামারগুলোতে দৈনিক প্রায় ২ হাজার লিটার দুধ হয়। খামারিরা দুধের দাম কমালেও বিক্রি করতে পারছেন না।
মহিলা খামারি সালমা বেগম বলেন, দ্রুত পরিস্থিতি পরিবর্তন না হলে খামার ব্যবসা ধ্বংস হয়ে যাবে। আর লোকসান গুনতে পারছি না।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রমা পদ দে বলেন, শায়েস্তাগঞ্জে বড়-ছোটো মিলে ৩২টি দুগ্ধ খামার রয়েছে। সরকারিভাবে দুগ্ধ খামারিদের তালিকা করা হচ্ছে। দুগ্ধ খামারিদের বিষয়টি সরকারের নজরে আছে।