নিউইয়র্ক স্টেট সিনেট ও অ্যাসেম্বলিতে উদযাপিত হয়েছে ‘বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী’ এবং ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’। নিউইয়র্কের রাজধানী আলবেনিতে ৭ মে (মঙ্গলবার) স্টেট সিনেটে এবং এর আগে ২৫ মার্চ স্টেট অ্যাসেম্বলিতে এ উপলক্ষে দুটি রেজ্যুলেশন পাস হয়।
রেজ্যুলেশন দু’টিতে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস স্থান পায়। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার দিনটি ছিল স্টেট পার্লামেন্টে বাঙালিদের জন্যে বিশেষ একটি দিন। নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা, ডেপুটি কন্সাল জেনারেল নাজমুল হাসানসহ কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ পুরো ভবনকে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে মুখরিত রেখেছিলেন। বাংলাদেশ ডে উপলক্ষে গত ১২ বছরের অনেক সময়ে এই ভবনে কিছু কার্যক্রম পালিত হলেও এবারের আমেজ ছিল একেবারেই ভিন্ন। অংশগ্রহণকারী সকলেই ছিলেন উচ্ছ্বসিত।
নিউইয়র্ক অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট ৮৭ (ব্রঙ্কস) থেকে নির্বাচিত অ্যাসেম্বলিওমেন কারিনা রাইস অ্যাসেম্বলি হাউসে এবং সিনেট ডিস্ট্রিক্ট ৩২ (ব্রঙ্কস) থেকে নির্বাচিত সিনেটর লুইস সেপুলভেদা (লুইস ভাই হিসেবে সমধিক পরিচিত) স্টেট সিনেটে এ সংক্রান্ত বিল উত্থাপন করেন। স্টেট অ্যাসেম্বলি ও সিনেট অধিবেশনে গৃহীত পৃথক রেজ্যুলেশনে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট, দেশ স্বাধীনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদানের কথা উল্লেখ করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার অবদান স্বীকার করে তাদেরও কৃতিত্ব দেওয়া হয়।
সেখানে বাংলাদেশিদের অবদানসহ তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশের বেশ কিছু তথ্য। এতে বলা হয়েছে, নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাসরত বাংলাদেশিরা অনেক ভালো কাজ করছেন এবং নানাভাবে অবদান রাখছেন। আমেরিকার অর্থনীতি বিনির্মাণে তাদের অনন্য ভূমিকার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এসময় উভয়কক্ষের জনপ্রতিনিধিরা বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও যথাযথ সম্মান নিবেদন করেন। স্টেট সিনেটর ও অ্যাসেম্বলিমেনরা এসময় তাদের বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নে বাংলাদেশি কমিউনিটির অবদানেরও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
এই গুরুত্বপূর্ণ রেজ্যুলেশনের সমন্বয়কের কাজ করেছে ‘আমেরিকান-বাংলাদেশি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন ইউএসএ ইনক’ এবং ‘যুক্তরাষ্ট্র মুজিব শতবর্ষ উদযাপন পরিষদ ইউএসএ’ নামে দু’টি সংগঠন। ৭ মে বিকেলে স্টেট সিনেটের অধিবেশনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সামনে সিনেটর লুইস সিপুলভিদা বিলটি পাঠ করে শোনানোর পর স্টেট সিনেটর ন্যাথালিয়া ফার্নান্দেজ, জন ল্যু, জেসিকা গঞ্জালেস রোজাস, জামাল টি বেইলিসহ বেশ ক’জন সিনেটর রেজ্যুলেশনের সমর্থনে জোরালে বক্তব্য রাখেন। পরে সিনেট হাইজে রেজ্যুলেশনটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।
এসময় সিনেট ফ্লোরে ছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হুদা, ডেপুটি কনসাল জেনারেল নাজমুল হাসান, যুক্তরাষ্ট্র সম্মিলিত মুজিববর্ষ উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক আবদুর রহিম বাদশা, আমেরিকান-বাংলাদেশি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সভাপতি আবদুস শহীদ ও সেক্রেটারি শেখ জামাল হুসেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান, যুক্তরাষ্ট্র জাসদের নেতা নূরে আলম জিকো, মূলধারার রাজনীতিক সাখাওয়াত আলী, কমিউনিটি লিডার সিরাজউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। এরপরই প্রবাসীরা জয়-বাংলা স্লোগান আর বিপুল করতালির মধ্য দিয়ে আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন।