বিশ্বকাপের আগে সময়টা ভালো যায়নি, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সিরিজ হেরে খুব চাপেই ছিল টাইগাররা। তবে৷ কিছু বদলে দিতে একটা জয়ের অপেক্ষায় ছিল তারা। সেই আরাধ্য জয় মিলে গেছে লঙ্কানদের বিপক্ষেই, এবার তবে নিশ্চয়ই এগিয়ে যাবার পালা।
লঙ্কাকে হারানোর পর এবার আরো একটা রূপকথা লিখতে চায় বাংলাদেশ, লিখতে চায় প্রোটিয়া বধ গল্প। সেই লক্ষ্যেই আজ সোমবার মাঠে নামছে টাইগাররা। নিউইয়র্কের নাসাও কাউন্টি ক্রিকেট মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার মোকাবেলা করবে তারা। খেলা শুরু রাত সাড়ে ৮টায়।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূলপর্বে জয়, বাংলাদেশের কাছে সোনার ডিম পাড়া হাসের মতো। ২০০৭ বিশ্বকাপে প্রথমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছিল তারা৷ এরপর দীর্ঘ প্রায় ১৫ বর পর জয় পেয়েছিল গত আসরে, জিম্বাবুয়ে ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে।
মাঝে আরো ছয়টা বিশ্বকাপ গেলেও মূল পর্বে জয় আসেনি টাইগারদের। তবে এবার নবম আসরে এসে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো হারিয়ে দেয় শ্রীলঙ্কাকে। এবার সেই একই স্বাদ পেতে চায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও। করতে চায় আরাধ্য সাধন।
দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে হারানোর রসদ পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ে বেশ উজ্জীবিত টাইগাররা। ‘জয়টা’ যেন বদলে দিয়েছে সাকিব-শান্তদের৷ দলের মাঝে বইছে স্বস্তির সুবাতাস।
সামনে এবার প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা হলেও বেশ চনমনে বাংলাদেশ। ফুরফুরে মেজাজেই আছেন লিটন – তাসকিনরা। কে বলবে এই দলটার বিপক্ষেই আগের আট দেখায় প্রতিবারেই হেরেছে টাইগাররা! এমনকি কোনো প্রতিরোধও গড়ে তোলতে পারেনি সেই ম্যাচগুলোতে, হেরেছে বড় ব্যবধানে।
তবে যেকোনো মূল্যে আজ লঙ্কানদের হারাতে পারলেই ইতিহাস গড়বে বাংলাদেশ। অনেকটা নিশ্চিত করে ফেলবে সুপার এইট পর্বও৷ লঙ্কানদের হারিয়ে যেই পথ অনেকটা মসৃণ করে রেখেছেন সাকিব-শান্তরা।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও দারুণ কিছু করতে হবে বোলারদেরই। নিউইয়র্কে তারাই ভরসা। নাসাও কাউন্টি ক্রিকেট মাঠে সব দলই জিতছে বোলিং ব্যবহার করেই। বোলাররাই গড়ে দিচ্ছেন ম্যাচের ব্যবধান। ব্যাটাররা যেন বোনাস মাত্র!
ব্যাটিং নিয়ে দুশ্চিন্তা বাংলাদেশ দলের অবশ্য আগে থেকেই৷ শেষ কয়েক সিরিজ ধরেই ভোগাচ্ছেন ব্যাটাররা। যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ বা লঙ্কানদের বিপক্ষে ঐতিহাসিক এই জয়, সব জায়গাতেই পরিলক্ষিত ছিল দূর্বল ব্যাটিং। যার ফলে জয় আসছে তো বটে, তবে তা তৃপ্ত হবার মতো নয়।
বাংলাদেশ এবারের বিশ্বকাপে আছে ডি গ্রুপে। বলা যায় ডি ফর ডেথ! তা নয়তো কি, আসরের সবচেয়ে কঠিণ গ্রুপ বলা হচ্ছে এই গ্রুপকেই। যেখানে বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা ছাড়াও আছে নেপাল ও নেদারল্যান্ডস। বিশ্বকে চমকে দিতে জানেন তারাও।
ফলে কোনো ম্যাচকে হেলায় হাতছাড়া করার সুযোগ নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও তাই জয়ের লক্ষ্যই থাকবে টাইগারদের। যেখানে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত নাসাওয়ের স্লো পিচ। যেখানে প্রতিটি রান মানেই যুদ্ধ।
বাংলাদেশের জন্যে আজ দ্বিতীয় ম্যাচ হলেও দক্ষিণ আফ্রিকা খেলবে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দেয়ার পর কষ্টার্জিত জয় পেয়েছে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। ফলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে তারাই।