বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য একজন নতুন এক উপদেষ্টার খোঁজা করা হচ্ছে। এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয়ার জন্য ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে অনানুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। একই সাথে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছিলেন এমন একজন সাবেক সচিবকেও মন্ত্রণালেয়ের দায়িত্ব দেয়ার জন্য লিস্টে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয়ার জন্য দু’টি বড় শিল্পগোষ্ঠীর কর্ণধারদের অনুরোধ করা হয়েছে। এর একজন জানিয়েছেন, তার পক্ষে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলানো সম্ভব হবে না। অন্যজন তার মতামত এখন পর্যন্ত জানাননি। অপর দিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক এক সচিবের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি এই দায়িত্ব নেয়ার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন। তবে এর বাইরেও আরো দু’জন সাবেক আমলার নামও এই মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসের মধ্যেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য একজন নতুন উপদেষ্টার দেখা মিলতে পারে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব রয়েছেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি একাধারে আরো দু’টি মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে রয়েছেন। এর একটি হচ্ছে অর্থমন্ত্রণালয় এবং অপরটি হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। ২০২৪ সালের ১৬ আগস্ট পর্যন্ত তিনি অর্থের পাশাপাশি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৬ আগস্ট পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে তাকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব দেয় হয়। এরপর ২৭ আগস্ট আরো একটি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবেও সালেহউদ্দিনকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সামলানোর পর অন্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করা কোনো মন্ত্রী বা উপদেষ্টার জন্য কঠিন। এর মধ্যে বাণিজ্যের মতো একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সামলানো বেশ কঠিন। এই মন্ত্রণালয়েরর দায়িত্ব পাওয়ার দেড় মাসের মধ্যে ড. সালেহউদ্দিন সাকুল্য তিন থেকে চার দিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অফিস করতে পেরেছেন। কাজের চাপে সপ্তাহের পাঁচ দিন তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অফিসে বসতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কাজের বিষয়ে তার মনোযোগ দেয়া অনেকটা অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এই মন্ত্রণালয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। কিন্তু এখন অনেকটা কাণ্ডারিহীন চলছে এটি। বাজার নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের দাম যখন বেড়ে যায় তখন সবাই এই মন্ত্রণালয়কে দোষারোপ করে। বর্তমান বাজারে বেশ কয়েকটি পণ্যর দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ডিমের কথাই ধরা যাক, এই পণ্যটি এখন পুরোপুরি সিন্ডিকেটের কবলে চলে গেছে। কিন্তু সিন্ডিকেট ভাঙ্গার জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ আমরা নিতে পারছি না। যদি ভোক্তা অধিদফতরের মাধ্যমে কিছু বাজার তদারকি করা হচ্ছে। কিন্তু সেটিও বাজারে কোনো প্রভাব রাখতে পারছে না। এখানে বাজার তদারকির অভাব রয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের সাথে বৈঠক করার প্রয়োজন, কিন্তু সেটিও করা যাচ্ছে না। ফলে পুরো বাজারব্যবস্থা এখন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে।
তাই এই মন্ত্রণালয়ের জন্য একজন নতুন উপদেষ্টা দেয়া হলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।