জিনগত বৈচিত্র্যের কারণে কোভিড নাইন্টিনে আক্রান্তদের মধ্যে আলাদা আলাদা প্রভাব দেখা যায় বলে নিশ্চিত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ইউরোপীয় বিজ্ঞানীদের এই গবেষণার কথা জানিয়েছে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। এতে বলা হয়েছে, এটাই প্রথম গবেষণা যাতে কোভিড নাইন্টিনের সঙ্গে জিনগত প্রভাবের সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন যে, রক্তের গ্রুপ যাদের ‘এ পজেটিভ’ বা ‘এ নেগেটিভ’ তাদের গুরুতর অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ব্যাপক। গবেষণা অনুযায়ী, রক্তের গ্রুপ ‘এ’ হলে তার ভ্যান্টিলেটর লাগার সম্ভাবনা অন্য গ্রুপগুলোর থেকে ৫০ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ, এই ধরণের রক্তের গ্রুপ যাদের রয়েছে তারা অনেক বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। এতো দিন শুধু ধারণা করা হয়েছে, কোভিড নাইন্টিনে আক্রান্ত হলে রোগির অবস্থা গুরুতর হবে কিনা তা নির্ভর করে তার বয়স ও স্বাস্থ্যের অবস্থার ওপর। তবে এবার জানা গেলো এতে জিনেটিক গঠনও গুরুত্বপূর্ন।
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, ডিএনএ গবেষণা করে তারা ঝুকিপূর্ন ব্যাক্তিদের আলাদা করতে পারবেন। এ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ১৬১০ জন কোভিড আক্রান্ত রোগির দেহ থেকে রক্ত সংগ্রহ করেছেন। তাদের সবারই অক্সিজেন সাপ্লাই বা ভ্যান্টিলেটর লেগেছিলো। এরপর তাদের সবার ডিএনএর তথ্য বের করে আনা হয় সেখান থেকে। এরসঙ্গে সুস্থ ২২০৫ জনের ডিএনএর পার্থক্য নির্নয় করেন তারা। এর আগে চীনা বিজ্ঞানীরাও জানিয়েছিলেন যে, রক্তের গ্রুপ ‘এ’ হলে তার অবস্থা সংকটানাপন্ন হওয়ার আশঙ্কা প্রচুর। তবে এখনো প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে যে, রক্তের গ্রুপ কেনো এমন রোগের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারবে! এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এখনো গবেষণা করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। কোভিড আক্রান্ত হলে কিছু কিছু শরীরের ইমিউন সিস্টেম অত্যাধিক প্রতিক্রিয়া দেখায়। আর এর কারণে তার শ্বাসযন্ত্র কাজ করতে বন্ধ করে দেয়। আপাতত বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, যেহেতু ইমিউন সিস্টেমের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক আছে তাই এই কারনেই রক্তের গ্রুপের ভিন্নতার কারণে আলাদা আলাদা প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় একেক দেহে। এ নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা চলছে। বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার বিজ্ঞানীরা আক্রান্ত ব্যক্তির ডিএনএ সংগ্রহ করে এর তথ্য একটি ওয়েবসাইটে আপলোড করতে শুরু করেছেন। এটিকে বলা হচ্ছে গবেষণার পরের ধাপ। ইতিমধ্যে এ থেকে ডিএনএর প্রভাব প্রমাণিত হয়েছে।