আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। বিদ্যুৎ খাতে ২৭ হাজার ৫৯৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ খাতে ৩ হাজার ১৩৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুতের সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় অগ্রাধিকার থাকবে। সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মোট বরাদ্দের ৭০ ভাগই থাকছে সঞ্চালন ও বিতরণ খাতে। আগামী ১১ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ৯৩ প্রকল্পের জন্য ২৭ হাজার ৫৯৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং জ্বালানি খাতে ২৪ প্রকল্পের জন্য ৩ হাজার ১৩৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকছে। জ্বালানি খাতের মোট বরাদ্দের মধ্যে ২৬০ কোটি ২৯ লাখ টাকা নেওয়া হবে গ্যাস উন্নয়ন তহবিল থেকে। ২০২০-২১ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে এডিপিতে ২৬ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছর সংশোধিত বরাদ্দ ছিল ২৪ হাজার ১৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
বাজেট প্রস্তাব নিয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল আলম আমাদের সময়কে বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে এত বাজেট দরকার নেই। যে পরিমাণ বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন অলস পড়ে আছে এগুলোর জন্য নতুন নতুন সঞ্চালন লাইন বৃদ্ধির বাজেট অপ্রয়োজনীয়। তিনি বলেন, বাজেট এত না বাড়িয়ে বরং দুর্নীতি ও অপব্যবহার কমানো উচিত। সাশ্রয়ী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। জ্বালানি খাতে সাশ্রয়ী ব্যবহার করতে পারলে অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা বছরে রক্ষা করা যেত।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ৭ হাজার ৭৬৫ কোটি ১১ লাখ টাকা। বিতরণে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হচ্ছে গ্রামে বিদ্যুতায়নে, অর্থাৎ বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) জন্য। আরইবি বিতরণের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে ৫ হাজার ৭০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) জন্য ২ হাজার ২০০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা; বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) জন্য ১ হাজার ৭০৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা; ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) জন্য ৭৩০ কোটি টাকা; নর্দান ইলেকট্রিসিটি পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) জন্য ৪৫০ কোটি টাকা এবং ঢাকা পাওয়ার সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) জন্য প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে ৩৪৬ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
সঞ্চালনে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) জন্য বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ৭ হাজার ৫৪৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা। উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড বাংলাদেশেন (সিপিজিসিবিএ) জন্য। এই কোম্পানির জন্য বরাদ্দ প্রস্তাব থাকছে ৪ হাজার ৩২ কোটি টাকা। পিডিবিকে দেওয়া হবে ২ হাজার ১৯৬ কোটি ১১ লাখ টাকা।
ইলেক্ট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশের (ইজিসিবি) জন্য ৩৫০ কোটি টাকা, রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিসিএল) জন্য ১৫০ কোটি টাকা এবং বি-আর পাওয়ারজেন কোম্পানি লিমিটেডের (বিআরপিএল) জন্য ১২৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হচ্ছে।