শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন

করোনায় বেতন কমাল ৩ ব্যাংক

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৭ জুন, ২০২০
  • ২৬৯ বার

করোনাভাইরাস মহামারিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তিন ব্যাংক। আরও কিছু ব্যাংক তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কমাবে বলে জানা গেছে। বেতন কমানো তিন ব্যাংক হলো- সিটি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও এবি ব্যাংক।

এর মধ্যে সিটি ব্যাংক তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১৬ শতাংশ বেতন-ভাতা কমিয়েছে। চলতি মাসের ১ জুন থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। বেতন কমানোর এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

১৫ শতাংশ বেতন কমিয়েছে এক্সিম ব্যাংক । এ ব্যাংকটিও তাদের বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত ১ জুন থেকে কার্যকর করছে। এ ব্যাংকটির বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

আর এবি ব্যাংক মে ও জুন মাসের বেতন ৫ শতাংশ কমিয়েছে। আগামী মাসগুলোতে বেতন কমবে কি না, সে বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি তারা।

সিটি ব্যাংক

গত বৃহস্পতিবার সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন ব্যাংকের অর্ধশত জ্যেষ্ঠ কর্মীকে ডেকে বেতন কমানোর ঘোষণা দেন।

সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, চলমান পরিস্থিতিতে লোকসান ঠেকাতে কোনো কর্মীকে ছাঁটাই না করে বেতন-ভাতা কিছু কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বেতন কমে যাওয়া ১৬ শতাংশের মধ্যে ১০ শতাংশ বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ৬ শতাংশ। আগামী বছর পারফরমেন্স বোনাস ও ইনক্রিমেন্টও দেবে না সিটি ব্যাংক।

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পরিচালনা পর্ষদ এ সিদ্ধান্ত নিতে ‘‘বাধ্য হয়েছে’’। গত তিন মাস ধরে আমাদের সব ধরনের ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ রয়েছে। ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকরা বিল পরিশোধ করছেন না। ঋণের সুদ ৯ শতাংশ করা এবং করোনাভাইরাসের কারণে মুনাফা ২০২০ সালে অর্ধেকে নেমে আসবে।’

যাদের বেতন ৩০ হাজার টাকার বেশি, কেবল তাদের বেতন কমানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এক লাখ টাকা বেতনধারী কর্মকর্তার ১৫ হাজার টাকা বেতন কমলেও তিনি চলতে পারবেন। কিন্তু যদি চাকরি চলে যায় তাহলে পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে।’

তবে ব্যাংকটির অনেক কর্মকর্তাই এ সিদ্ধান্তে ক্ষুদ্ধ হয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিটি ব্যাংকের জানিয়েছেন, সিটি ব্যাংক ২০১৯ সালে ৮৪০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। ২০২০ সালে মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৫০ কোটি টাকা। গত ৫ মাসে (জানয়ারি-মে) ২৩৫ কোটি টাকার মুনাফা হয়েছে। প্রথম প্রান্তিকে কর পরবর্তী মুনাফার পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কোনো প্রতিষ্ঠান লোকসানে গেলে বেতন কমানোর প্রশ্ন আসতে পারে। আমাদের ব্যাংক তো লাভে আছে। তাহলে কেন বেতন কমবে?’

তিনি বলেন, ‘কর্মীদের স্বার্থ বিরোধী এ ধরনের সিদ্ধান্ত ব্যাংকের জন্য ক্ষতি ছাড়া ভালো বয়ে আনে না। বেতন-ভাতা কমানোর ফলে কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হবে; গ্রাহক মানসম্মত সেবা পাবে না।’

এক্সিম ব্যাংক

এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার জানান, বেতন কমানোর ব্যাপারে তাদের পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত কর্মকর্তারাও ‘মেনে নিয়েছেন’। যে সব কর্মকর্তার বেত ৪০ হাজার টাকার বেশি, কেবল তাদের বেতনই কমানো হয়েছে।

বেতন কমালে কর্মকর্তাদের সমস্যা হবে কিনা- এমন প্রশ্নে নজরুল মজুমদার বলেন, ‘যারা কম বেতন পান, তাদেরটা তো কমাতে বলিনি। সমস্যা হওয়ার কথা নয়। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, সঙ্কটের সময় তো সবাইকেই ছাড় দিতে হবে।’

এবি ব্যাংক

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এবি ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত মে ও চলতি জুন মাসের বেতন ৫ শতাংশ করে কম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ। আগামী দিনগুলোতে বেতন কম দেওয়া অব্যাহত থাকবে কি না, সে বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com