স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও গবেষণা শাখার পরিচালক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অধ্যাপক ডা. মো. ইকবাল কবিরকে। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় চলমান দুটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব (পার-২) শারমিন আক্তার জাহান স্বাক্ষরিত এই প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ইকবাল কবিরকে পরবর্তী পদায়নের জন্য পার-১ অধিশাখায় ন্যস্ত করা হয়েছে।
একই দিন রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব (পার-২) শারমিন আক্তার জাহান স্বাক্ষরিত আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। যেখানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক ইনসিটু সহকারী পরিচালক (গবেষণা) ডা. আফরিনা মাহমুদকে চলতি দায়িত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির পরিকল্পনা ও গবেষণা শাখার পরিচালক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।
চলমান করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলায় স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কিনতে এখন পর্যন্ত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় দুটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে একটি প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১১৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক ঋণ দিচ্ছে ৮৫০ কোটি টাকা। বাকি ২৭৭ কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে দেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কিনতে আরেকটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে এডিবির অর্থায়নে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে এডিবির ঋণ ৮৫০ কোটি টাকা। বাকি ৫১৫ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে। এরই মধ্যে দুটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পটিতে গগলস, পিপিইর দাম ধরা হয়েছে বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে দুই থেকে চার গুণ বেশি। স্বাস্থ্য সরঞ্জামের অস্বাভাবিক খরচ নিয়ে গত ৪ জুন দেশের একটি জাতীয় দৈনিকের প্রথম পাতায় ৫শ টাকার গগলস ৫০০০, ২ হাজারের পিপিই ৪৭০০’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়। এ ঘটনায় নড়েচড়ে বসে সরকারও। প্রতিবেদনের সূত্র ধরে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও গবেষণা শাখার পরিচালক পদ থেকে ইকবাল কবিরকে সরিয়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে প্রকল্প দুটি থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে।