ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংক। তাদের কাছে আটকে যাওয়া টাকা আদায়ে আইনগত ব্যবস্থাসহ অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফলে নানা সংকটের মধ্যেও এবি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ অর্ধেকে নেমে এসেছে। অন্যদিকে বেড়েছে আমানত সংগ্রহ ও ঋণ বিতরণ। ফলে গত ২০১৯ সালে মুনাফা বেড়েছে দেশের প্রথম এ বেসরকারি ব্যাংকের। এবি ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এবি ব্যাংক সূত্র জানায়, বিগত সময়ে লোকসানের ধারায় ছিল এবি ব্যাংক। হাতেগোনা কিছু ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। বারবার অর্থ চেয়ে ফেরত না দেওয়ায় এবি ব্যাংক তার এমন কিছু গ্রাহককে চিহ্নিত করে ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যাংকের পাওনা টাকা আদায়ে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করে। পাওনা আদায়ে এরশাদ ব্রাদার্স করপোরেশনের মালিক এরশাদ আলী, আমান ফিড, মেজেসটিকা হোল্ডিংস লিমিটেড এবং ধলেশ্বরী লিমিটেডের কর্ণধার লতিফ সিদ্দিকির পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করে। এ ছাড়া আশিয়ান এডুকেশন লিমিটেড ও আশিয়ান ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের কর্ণধার নজরুল ইসলাম মজুমদার, প্যারাডাইজ ক্যাবলস ও প্যারাডাইজ স্পিনিং মিলসের পরিচালকদের কাছ থেকে পাওনা আদায়ে সম্পত্তি নিলামসহ অন্য প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।
খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় ২০১৯ সালে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ৪১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। আগের বছর যা ছিল ৭ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। আমানতের পরিমাণ ২৩ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৭ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকা। আমানত বৃদ্ধির হার ১৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। মোট ঋণের পরিমাণ ২৪ হাজার ১০৭ কোটি টাকা থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২৫ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা। বছর শেষে ব্যাংকের পরিচালন
মুনাফা হয়েছে ৬৪৫ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় শতভাগেরও বেশি। গত বছর পরিচালন মুনাফা হয় ৩০৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া ব্যাংকটির ঋণ আমানত অনুপাত (এডিআর), তারল্য পরিমাপ-লিকুইডিটি কভারেজ রেশিও এবং নেট স্টাবল ফান্ডিং রেশিও সংরক্ষণও নির্ধারিত সীমার মধ্যে রয়েছে।
এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আফজাল বলেন, ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার। ব্যাংকের টাকা জনগণের। এই টাকা আত্মসাৎ করে বিলাসী জীবনযাপন করবে এটি হতে দেওয়া হবে না। ব্যাংকটিকে সুসংহত করার চেষ্টা করছি। করোনাকালীন সংকটেও যোগ্য কর্মীদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অদক্ষ কর্মীদের দক্ষ করে গড়ে তোলা এবং দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।