ব্রিটেনে যৌন অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার পর অনেক দিনের ভোগান্তি ও আইনি লড়াই শেষে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন বাংলাদেশি সাইফুল ইসলাম। ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র দপ্তর ইতোমধ্যেই এই ভুলের জন্য সাইফুল ইসলামের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ৫ হাজার পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু ১৭ বছরের ব্রিটিশ জীবন মাটি হয়ে যাওয়া এ বাংলাদেশি শেফ ক্ষতিপূরণ চান না। তিনি চান তার অধিকার।
কারণ নির্দোষ প্রমাণিত হলেও তাকে ব্রিটেনে স্থায়ীভাবে থাকার অধিকার দেওয়া হচ্ছে না। তাই তিনি এখন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন যুক্তরাজ্য থেকে বহিষ্কার করার নির্দেশের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, স্বরাষ্ট্র দপ্তরে থাকা তার কাগজপত্র কোনোভাবে মিশে গিয়েছিল অন্য তিনজন লোকের কাগজপত্রের সঙ্গে। এর ফলে কোনো দোষ না করেও সাইফুল ইসলাম ফেঁসে যান যৌন অপরাধের অভিযোগে।
সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি হোম অফিস প্রদত্ত ৫ হাজার পাউন্ডের ক্ষতিপূরণ নিতে চাই না। আমি চাই আমার অধিকার, যথার্থ বিচার। গত ৩ আগস্ট সোমবার লন্ডন-বাংলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি তুলে ধরেন কীভাবে ব্রিটিশ হোম অফিসের চরম ভুলে/তিনি ক্রিমিনাল বনেছেন, সেক্স ওফেন্ডার হয়েছেন। ১৭ বছরের ইউকে জীবন মাটি হয়েছে তার। বলেন, ইতোমধ্যে কোর্টে প্রমাণ হয়েছে হোম অফিসের ভুল। জেসি ডব্লিউর মতো সংগঠন এবং বিবিসি ও গার্ডিয়ানসহ বড় বড় ব্রিটিশ মিডিয়া তার মানবিক দিকটি বিবেচনা করছে। কিন্তু হোম অফিস তাতে পাত্তা দিচ্ছে না।
সাইফুল ইসলামের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া থানায়। জীবিকার তাগিদে ২০০৩ সালে ব্রিটেনে পাড়ি জমান তিনি। এর আগে এক যুগ শেফ হিসেবে ঢাকার বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় কাজ করেছেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল ইসলাম বলেন, ব্রিটেনের হোম অফিসের অবহেলা, ভুল, দীর্ঘসূত্রতার কারণে বহু বাংলাদেশির পরিবার, সংসার বিপর্যস্ত হয়েছে। তারা সীমাহীন ভুক্তভোগী। তিনি আরও বলেন, মানুষ হাল ছেড়ে দেয়। কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি। গত ১৭ বছরে ১৮টি মামলা চালিয়ে মানসিকভাবে অনেকটাই বিপর্যস্ত সাইফুল ইসলাম এখন মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সহায়তা চান।
সাইফুল ইসলামের বিষয়ে হোম অফিসের জবাব জানতে চাওয়া হলে দ্য গার্ডিয়ানকে বলা হয়েছে, চলমান আইনি লড়াই নিয়ে হোম অফিস মন্তব্য করে না।