মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আসরে নেমে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেই ফের সংবাদ শিরোনামে বিল ক্লিনটন। ইতিহাসের পাতা খুঁড়ে আবার বিলকে জড়িয়ে নারী কেলেঙ্কারির খবর তুলে আনল ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল। প্রকাশ করল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক তরুণীর একাধিক ছবি। ডেইলি মেইল বলছে, এসব ছবি এর আগে কোনোদিন জনসমক্ষে আসেনি। এটাই প্রথম।
এবার ৭২ বছরের বিলের সঙ্গে নাম জড়াল এক লাস্যময়ী ম্যাসাজ থেরাপিস্টের সঙ্গে। ঘটনা যখন ঘটে, বিলের বয়স ৫৬। ডেইলি মেইল-এর ছবিতে প্রকাশ, সেই সময়ে ২২ বছরের ওই লাস্যময়ী ম্যাসাজ থেরাপিস্ট চান্তে ডেভিস ক্লিনটনের ঘাড় ম্যাসাজ করে দিচ্ছেন। আর সাবেক প্রেসিডেন্ট আয়েশি ভঙ্গিতে তা উপভোগ করছেন। এই তরুণী আবার যৌন হয়রানিরও শিকার হয়েছিলেন। অভিযুক্ত আবার বিল ক্লিনটন ঘনিষ্ঠ মার্কিন বিনিয়োগকারী প্রয়াত জেফরি এপস্টেইন। ডেইলি মেইল জানাচ্ছে, একটা সময় এপস্টেইনের ব্যক্তিগত ম্যাসাজ থেরাপিস্ট হিসেবে কাজ করতেন এই মহিলা। ছবিটি ক্লিনটনের সঙ্গে বিতর্কিত এপস্টেইনের সম্পর্কের বিষয়টাও তুলে এনেছে।
ম্যাসাজ থেরাপিস্ট চান্তে ডেভিস জানিয়েছেন, ছবিটি বিদঘুটে লাগতে পারে। কিন্তু সেই ভ্রমণে প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন একজন নিপাট ভদ্রলোক ছিলেন। সেই সময় তিনি কোনো অশোভন আচরণ করেননি। ২০০২ সালের সেপ্টেম্বরে এপস্টেইনের সঙ্গে আফ্রিকা যাচ্ছিলেন তিনি। বিমানে ঘুমিয়ে যাওয়ার পর ক্লিনটন ঘাড়ে অস্বস্তিবোধ করছিলেন। সেই সফরে ছিলেন ব্রিটিশ সমাজকর্মী বর্তমানে জেলবন্দি গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল। ওই ম্যাক্সওয়েলই ডেভিসকে বলছিলেন ক্লিনটনের ঘাড় একটু ম্যাসাজ করে দিতে। এরপর ক্লিনটন নিজেই ডেভিসকে বলেন, ‘আপনি আমার ঘাড়টা একটু ম্যাসাজ করে দিতে পারেন?’ ‘তিনি আমার দিকে পিছন ফিরে ঘুরে বসেন। আমি তার কাছাকাছি গিয়ে গলা ও ঘাড় মালিশ করতে থাকি…।’
ডেভিস জানান, তিনি ক্লিনটনকে একটি বেফাঁস কথাও বলে ফেলেছিলেন। আসলে ম্যাসাজ করতে বেশ অসুবিধা হচ্ছিল ডেভিসের। তখন ক্লিনটনকে মুখ ফসকে বলে ফেলেছিলেন, ‘যদি কিছু মনে না করেন আপনি হাঁটু গেড়ে বসতে পারেন?’ স্মৃতি হাতড়ে ডেভিস বলেন, ‘আমি নিজেই হতচকিত হয়ে পড়লাম। মুহূর্তের জন্যে রুমটা একেবারে চুপ। আমিও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, এটা কীভাবে বললাম? এটা শুনে ক্লিনটনের মুখ লাল, কিন্তু তিনি হাসলেন। রুমের সবাই হেসে উঠলেন। তিনি এমনভাবে বসলেন যেন আমি সুবিধাজনক অবস্থানে দাঁড়াতে পারি।’
জেফরি এপস্টেইনের ব্যক্তিগত জেট ‘ললিটা এক্সপ্রেস’-এ চেপে আফ্রিকায় যাচ্ছিলেন ক্লিনটন। সফরের জন্য এয়ারফিল্ডে আসার পর ডেভিসকে ইউনিফর্ম পরতে বলা হয়, যেন দেখে পেশাদার ক্রু বলে মনে হয়। ওই ভ্রমণে ডেভিস এয়ার হোস্টেসের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ডেভিস দাবি করেছিলেন, ম্যাক্সওয়েল তাকে এই চাকরিতে আনার পর এপস্টেইন তাকে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেন। কয়েক বছর ধরে এই নির্যাতন চলতে থাকে। অবশেষে ২০০৫ সালে ডেভিস এপস্টেইনের কবল থেকে মুক্তি পান। ২০১৯ সালে ডেভিসের ইন্টারভিউ নেয় এফবিআই এবং নিউ মেক্সিকোর অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল। এপস্টেইনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেলে বন্দি অবস্থায় এপস্টেইন আত্মহত্যা করেন।