বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৮ পূর্বাহ্ন

রোববার ঘড়ির কাটা এক ঘন্টা পিছিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ‘ডে লাইট সেভিং’ কার্যক্রম শুরু

বাংলাদেশ রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৯
  • ৫৪৫ বার

আমেরিকার ‘ডে লাইট সেভিং’ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে ৪ নভেম্বর রোববার থেকে। ফলে শনিবার দিবাগত রাত দুইটায় ঘড়ির কাঁটা এক ঘণ্টা পিছিয়ে যায়। অর্থাৎ রোববার থেকে ঘড়ির কাঁটা যখন তিনটার ঘর ছুঁয়ে যায় তখন এটিকে এক ঘন্টা পিছিয়ে দুইটার ঘরে নিয়ে আনা হয়। ঘড়ির কাঁটা প্রতিবছর এভাবে একবার এগিয়ে নেওয়া আর একবার পিছিয়ে নেওয়ায় দিনের আলোর কী সাশ্রয় হয়, এ নিয়ে খোদ আমেরিকানরাও নিশ্চিত নয়। তবে গ্রীষ্মকালের আগেই ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে নেওয়ার ফলে ঘুমের সময়ের যে কাটতি পড়ে, এ ব্যাপারটি অধিকাংশ আমেরিকান মনে করে।
ইতিহাস বলে: ‘ডে লাইট সেভিং’ নামে ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে নেওয়া বা গ্রীষ্মকালের পর এক ঘণ্টা পিছিয়ে নেওয়া আমেরিকার শতাব্দী-প্রাচীন ঐতিহ্য। প্রথম মহাযুদ্ধের সময় আমেরিকা এবং ইউরোপের একাংশজুড়ে দিনের আলো সাশ্রয়ের জন্য ‘ডে লাইট সেভিং’ চালু হয়। ১৯১৮ সালে ইউএস কংগ্রেসে এ নিয়ে বিল উপস্থাপন করে দিনের আলো সাশ্রয়ের এ নিয়ম গৃহীত হয়।
‘ডে লাইট সেভিং’-এর ফলে আমেরিকার কৃষিকাজে এবং খামারে কাজের জন্য দিনের আলো এক ঘণ্টা বেশি পাওয়া যায়- এমন একটা কথা চালু আছে। যদিও তথ্যমতে কথাটি ঠিক নয়। ‘ডে লাইট সেভিং’ চালুর সময় আমেরিকার কৃষক ও খামারিরা এর বিরোধিতা করেছেন। কারণ হিসেবে তাঁদের যুক্তি ছিল, কৃষিপণ্য বাজারজাত করার জন্য সময় কমে যায়। এমনকি দুগ্ধখামারে কাজের পালাবদলে সমস্যা সৃষ্টি হয় বলেও এর বিরোধিতা করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রে ‘ডে লাইট সেভিং’ চালু করার প্রথম চিন্তা করেন ১৭৮৪ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন। এ অঞ্চলে কানাডার থানডার নগরে ১৯০৮ সালে প্রথম ‘ডে লাইট সেভিং’ চালু করা হয়। ইউরোপের জার্মানি প্রথম দেশ, যারা ‘ডে লাইট সেভিং’ চালু করে ১৯১৬ সালে। একই বছরে যুক্তরাজ্যও চালু করে ‘ডে লাইট সেভিং’। ১৯১৮ সালে তা যুক্তরাষ্ট্রে চালু হয়। আমেরিকায় দীর্ঘদিন এটি চালু ছিল এপ্রিলের শেষ রোববার থেকে অক্টোবর মাসের শেষ রোববার পর্যন্ত। ২০০৫ সালে প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের সময়, জ্বালানি আইনের সঙ্গে ‘ডে লাইট সেভিং’ সময় আরও চার সপ্তাহ বাড়িয়ে দেন। এখন যা মার্চ মাস থেকে শুরু হয়ে নভেম্বর মাস পর্যন্ত চালু থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র এটি মানা হয় না। ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে অ্যারিজোনা এবং হাওয়াই ছাড়া ৪৮টি অঙ্গরাজ্যে ‘ডে লাইট সেভিং’ চালু আছে। বর্তমানে বিশ্বের ৭০টি দেশে পুরো না হলেও আংশিকভাবে এটি চালু আছে।
ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে নেওয়া, পিছিয়ে নেওয়ার ঝক্কি পোহাতে হয় আমেরিকার লোকজনকে বছরে দুইবার। এক ঘণ্টা ঘুম কম হওয়ার কারণে ‘ডে লাইট সেভিং’ শুরু হওয়ার পরদিন সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনা ৬ শতাংশ বেড়ে যায় বলে ‘ট্রিপল এ’ নামের সংগঠন জানিয়েছে। প্রযুক্তিময় বর্তমান বাস্তবতায় ঘড়ি, টেলিভিশন, ফোনসহ অনেক কিছুরই সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বদলে যায়। তারপরও ঘরের চুলা, দেয়াল ঘড়ি, পুরোনো সব অ্যালার্ম ঘড়ির সময় বদলে নেওয়ার ঝক্কি পোহাতে হয় ‘ডে লাইট সেভিং’ শুরু হওয়ার আগের রাতটিতে। ‘ডে লাইট সেভিং’ নিয়ে সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে মাত্র ৩৩ শতাংশ আমেরিকান বছরে দুবার ঘড়ির কাঁটা আগে পিছে নেওয়া নিয়ে বিকারহীন। অন্যদের কাছে বিষয়টি অপ্রয়োজনীয় একটি কাজ বলে মনে করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com