সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৬ অপরাহ্ন

জাতিসংঘের ৭৫ বছর: ‘যুদ্ধ বন্ধে জন্ম হলেও দ্বন্দ্বই বাস্তবতা’

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ১৯১ বার

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বে যুদ্ধ-বিগ্রহ রোধ করার লক্ষ্যে জাতিসংঘের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এ বছর আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটির ৭৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। গত সোমবার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ অনলাইনে একত্রিত হয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার থেকে অধিবেশন শুরু হয়েছে। করোনার কারণে এবার কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধান জাতিসংঘের সদর দপ্তরে যাচ্ছেন না। তাদের রেকর্ড করা ভাষণ ধারাবাহিকভাবে অধিবেশনে প্রচার করা হবে। আন্তর্জাতিক সংস্থাটির এ দীর্ঘ পথপরিক্রমায় অর্জনের চিত্র কিছু অংশে কম নয়। বিশ্বের অনেক সংকট জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে সমাধান হয়েছে।

যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অনেক দেশ সংস্থাটির সহায়তায় নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে সেবা বা ত্রাণসহায়তার মধ্য দিয়ে সংস্থাটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। তবে বিশ্ব রাজনীতির চিত্র দেখছে দেখা যাবে এখানে ঐক্য নেই, বিভক্তিই মূল সুর। মিলন নেই, দ্বন্দ্বই বাস্তবতা। জাতিসংঘ এমন সময় ৭৫ বছর পূর্ণ হয়েছে যখন গোটা বিশ্বই করোনা মহামারীতে আক্রান্ত। লাখ মানুষের মৃত্যু, কোটি মানুষ আক্রান্ত। বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিক মন্দা চলছে, লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে বসে আছেন। এ মহামারী নিয়েও বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো রাজনীতি শুরু করেছে। একে অপরকে দোষারূপ করছে। সংবাদমাধ্যম এপি গতকাল নিবন্ধ প্রকাশ করেছে যার শিরোনামা হলো- যুদ্ধ প্রতিহত করার লক্ষ্যে জন্ম কিন্তু ৭৫ বছরে জাতিসংঘ গভীর মেরুকরণের মুখে’। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চীন-মার্কিন দ্বন্দ্ব প্রকট হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইয়েমেন, সিরিয়া, লিবিয়া, লেবাননে সংঘাত-সংঘর্ষ নিত্যদিনের চিত্র। আর ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে বছরের পর বছর ধরে রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে না।

সোমবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, বৈশ্বিক বিষয়গুলোয় প্রভুত্ব করা, অন্য দেশের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ কিংবা অগ্রগতির সুযোগ কেবল নিজেদের কাছে রাখার অধিকার কোনো দেশের নেই। সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতো প্রতিষ্ঠান এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও ইরান চুক্তির মতো বহুপাক্ষিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্প নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অমর্যদার নজির তৈরি করেছে। এ পরিস্থিতিতে এককেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে চীন বহুকেন্দ্রিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছে।

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের উপরাষ্ট্রদূত শেরিথ নরম্যান শ্যালেট সাধারণ পরিষদকে বলেছেন, বৈশ্বিক এ সংস্থা অনেকভাবেই নিজেদের সফলতার প্রমাণ দিলেও ‘অনেকগুলো কারণ নিয়ে উদ্বেগ রয়েই গেছে’। ডব্লিউএইচও থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ও যুক্তরাষ্ট্র সংস্থাটিকে ‘চীনের পুতুল’ বলে বর্ণনা করেছে। যদিও ডব্লিউএইচও সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সোমবার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভও যুক্তরাষ্ট্রের নাম না নিয়ে বলেন, বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ ও এক তরফা নিষেধাজ্ঞা আরোপের মধ্য দিয়ে বিশ্বে বিভেদ উসকে দিচ্ছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মহামারী বিশ্বের ক্ষত উন্মোচন করে দিয়েছে। এখন আমাদের বহুপাক্ষিক চ্যালেঞ্জের উদ্বৃত্ত থাকলেও বহুপাক্ষিক সমাধানের ঘাটতি রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com