আসন্ন নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এতে হেরে গেলে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সহজে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এমনকি পরাজিত হলে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন কিনা এ ব্যাপারেও কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি তিনি। ট্রাম্প বলেছেন, হেরে গেলে আগে আমি দেখবো কি ঘটেছে।
মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, ডাকযোগে ভোটের ব্যাপারে ট্রাম্পের সন্দেহ এখনও কমেনি। ফল দেখেই নাকি তিনি পারবেন ক্ষমতা ছাড়বেন কিনা।
গতকাল বুধবার হোয়াইট হাউসের সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, তিনি কি শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেন? জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার বিশ্বাস মহামারির সময় ডাকযোগে বর্ধিত ভোট না হলে ক্ষমতা হস্তান্তরেরই কোনো দরকারই হতো না।’
যুক্তরাষ্ট্রে সাপ্তাহিক কর্মদিবসে নির্বাচন হয় বলে অনেক মানুষ স্বশরীরে ভোট দিতে পারেন না। কাজের সূত্রে দূরে থাকার কারণেও কারো কারো ভোট দিতে সমস্যা হয়। এমন সব মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে সেদেশে ডাকযোগে ব্যালট পাঠানোর বিধান রয়েছে। এ বছর করোনা সংকটের কারণে অসংখ্য ভোটার সেই সুযোগ গ্রহণ করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ থেকে ডাকযোগে বা মেল-ইন ভোটের দাবি জানানো হলেও ট্রাম্প শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করছেন। এমনকি ভোট-জালিয়াতি হতে পারে বলে ডেমোক্র্যাটদের দিকে আঙুলও তুলেছেন তিনি। ডাকযোগের ব্যালট সরিয়ে নিলে সবই শান্তিপূর্ণ হতে পারে বলে উল্লেখ করেন ট্রাম্প।
বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প জানান, সে ক্ষেত্রে ক্ষমতা হস্তান্তরেরই কোনো প্রয়োজন হবে না। অর্থাৎ তার পরাজিত হওয়ার কোনো কারণই নাই। ডেমোক্র্যাটরা অন্যদের চেয়ে বেশি জানেন যে ডাক ব্যালট নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে উঠেছে।
ডাক ভোটের কারণে ফলাফল চূড়ান্ত হতে বিলম্ব হলে এ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঝামেলা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রায় ছয় মাস আগে থেকেই ডাকযোগে ভোট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে আসছেন তিনি। তবে বিশেষজ্ঞ এবং ভোট কর্মকর্তারা ট্রাম্পের অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে বলছেন এই প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি কিংবা ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেও এই প্রক্রিয়া নিয়মিত ব্যবহার করেছেন।
সর্বশেষ জনমত জরিপে দেখা গেছে, জাতীয়ভাবে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন এখনো বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় এগিয়ে আছেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোতেও দুই প্রার্থীর অবস্থান খুব কাছাকাছি। এর ফলে এবারের নির্বাচনের ফলাফল খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে এবং ডাকযোগে ভোট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।