করোনাভাইরাস নিয়ে শুরু থেকেই উদ্ভট সব মন্তব্য এবং দিকনির্দেশনা দিয়ে সমালোচিত হয়ে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ শুক্রবার ট্রাম্প এবং তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ পায়। এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে অনেকে মন্তব্য করেন, করোনাভাইরাসকে খাটো করে দেখার খেসারত দিচ্ছেন ট্রাম্প।
এর আগে মাস্ক নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনকে ক্রমাগত উপেক্ষা করেছেন ট্রাম্প। তিনি নিজে জনসমাগমে মাস্ক পরা থেকে বিরত ছিলেন। ট্রাম্প বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য মুখে মাস্ক পরার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করার প্রয়োজন নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের বিরোধী প্রার্থী জো বাইডেনের জনসমক্ষে মাস্ক পরার সিদ্ধান্তেরও কড়া সমালোচনা করেন ট্রাম্প। গত বুধবার প্রথম প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্ক চলাকালীন ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তার মতো মাস্ক পরি না। সে সবসময় একটি মাস্ক পরে থাকে। সে ২০০ ফুট দূর থেকে কথা বলে এবং আমার দেখা সবচেয়ে বড় মাস্কটি সে পরে।’
গত মে মাসে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে তিনি ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন গ্রহণ করতে পরামর্শ দেন। তার কাছে এর কোনো প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও তিনি এ বিষয়টি তুলে ধরেছেন। এমন পরামর্শের পর বিশেষজ্ঞ মহল থেকে তীব্র সমালোচনা আসে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট করোনাভাইরাস রোধে জীবাণুনাশক ব্যবহারের পরামর্শও দেন। এর পরদিনই মানব শরীরে জীবাণুনাশক ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রধান জীবাণুনাশক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।
অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম সেভেন নিউজ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, বরাবরই করোনা ছড়ানোর পেছনে চীনকে দায়ী করে আসছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি কখনো দাবি করেন, চীনের ল্যাব থেকে এই ভাইরাসের উৎপত্তি। আবার কখনো বলেন, দেশটির একটি বাজার থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।
চীনের সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের এডিটর ইন চিফ হু জিজিন লিখেছেন, কোভিড-১৯ শুরু থেকেই গুরুত্ব দেননি ট্রাম্প। এটিকে সাধারণ ফ্লু হিসেবে বলে আসছিলেন তিনি। মাস্ক ব্যবহারেও তার অনীহা ছিল। যারা মাস্ক পরতেন তাদের নিয়ে হাসিঠাট্টা করতেন ট্রাম্প। করোনাকে খাটো করে দেখার যে জুয়া ট্রাম্প খেলেছেন, তার মূল্য দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রমাণ করে যুক্তরাষ্ট্রে মহামারির পরিস্থিতি কতটা গুরুতর।