বিশ্বজুড়ে মানুষের মধ্যে এখন একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। আর তাহলো – কে হতে যাচ্ছেন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট?
আমরা এখনো জানি না, কারণ এখনো যথেষ্ট সংখ্যায় ভোট গণনা শেষ হয়নি। ডোনাল্ড ট্রাম্প কিংবা জো বাইডেন – এদের কাউকেই বিজয়ী ঘোষণা করার সময় এখনো আসেনি।
সাধারণত নির্বাচনের রাতে জানা যায় নতুন প্রেসিডেন্টের নাম। কিন্তু এবার এক নতুন প্রেক্ষাপটে হচ্ছে নির্বাচন। মহামারির মধ্যে চলছে নির্বাচন, যে কারণে অনেক পোস্টাল ভোট দাখিল হয়েছে। যা গণনা করতে দিন পার হয়ে যেতে পারে।
আবার যদি এই নির্বাচন নিয়ে কোনো আইনি চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়, সেক্ষেত্রে সপ্তাহও পার হয়ে যেতে পারে।
কোনো ইঙ্গিতই কি নেই?
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হতে জনপ্রিয় ভোটে জেতার প্রয়োজন নেই। কিন্তু একজন প্রার্থীকে ইলেকটোরাল কলেজের ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হবে।
এখানে কিছু ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্য আছে, যেখানকার ভোটাররা নির্বাচনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন।
বাইডেন এবং ট্রাম্পের যেসব রাজ্যে জয়ের কথা, এখন পর্যন্ত প্রায় সবগুলো রাজ্যেই তারা জয় পেয়েছেন।
কিছু রাজ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে, সেখানে নির্বাচনী দৌড়ে বেশ টানটান উত্তেজনা।
যেসব জায়গায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে, সেখানকার কর্তৃপক্ষ এখনো পোস্টাল ভোট গণনা শুরুই করেনি।
এসব ভোটও খেলার পুরো চিত্র পরিবর্তন করে দিতে পারে।
কিছু রাজ্যের অবস্থা
ফ্লোরিডায় ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায় জিতে যাচ্ছেন, এখানে ডেমোক্র্যাটরা আগে থেকেই কোনঠাসা।
অ্যারিজোনায় ১৯৯৬ সালের পরে কোন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জেতেনি – এখানে বাইডেন জিতছেন। এখানকার তরুণ লাতিনরা বাইডেনের প্রধান টার্গেট ভোটার।
উইসকনসিন এবং পেনসিলভানিয়া এখনও পোস্টাল ভোট গণনা শুরু করেনি এবং এক্ষেত্রে কয়েকদিন লেগে যেতে পারে।
জর্জিয়া, মিশিগান এবং নর্থ ক্যারোলাইনায় এখন পর্যন্ত মোটামুটি সমতা বজায় আছে।
এখন তবে কিসের অপেক্ষা?
মনে করা হচ্ছে, পুরো লড়াইটা শেষ পর্যন্ত পোস্টাল ভোটের গণনা পর্যন্ত গড়াতে পারে।
তবে এক্ষেত্রে আইনি জটিলতা তৈরি হতে পারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই বলেছেন, তিনি সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারেন। এর মানে হলো, একটা ফলাফল পেতে সপ্তাহও লেগে যেতে পারে।
এখানে বেশ অনিশ্চয়তা আছে। আমেরিকানরা নিজেদের শঙ্কা ব্যক্ত করেছেন যে একটা অরাজকতাও তৈরি হতে পারে।
বাইডেন ইতোমধ্যে বলে দিয়েছেন যে তার দল জয়ের পথে আছে। পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পথে ট্রাম্পকে আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে ফ্লোরিডায় জয়। তবে শুরু থেকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ট্রাম্প বাইডেনকে পেছনে ফেলতে পারেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর জয়ী হতে মোট ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে ২৭০টি পেতে হয়।
অ্যারিজোনা বাইডেনের দিকে গেলেও জর্জিয়া, পেনসিলভানিয়া, উইসকনসিন, মিশিগানএবং নর্থ ক্যারোলাইনার ভোট এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।
সবার নজর যখন এক জায়গায় – ফলাফলের দিকে। কিন্তু শেষ ফলাফল এখনই নাও পাওয়া যেতে পারে।
মঙ্গলবারের আগে পর্যন্ত প্রায় ১০ কোটি ভোটার অগ্রীম ভোট দিয়েছেন – মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে গত শত বছরের ইতিহাসে এই প্রথম এতো ভোট আগেই পড়লো।
হোয়াইট হাউজের লড়াই তো আছেই, লড়াই জমে উঠেছে কংগ্রেস নিয়েও।সিনেটে কোলোরাডোতে একটি আসন হারিয়েছে রিপাবলিকানরা, আবার অ্যালাবামায় একটি পেয়েছেও। মিচ ম্যাককনেল এবং লিন্ডসে গ্রাহাম ইতোমধ্যে পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদ ডেমোক্র্যাটদের দখলেই থাকবে।