দুঃসময় যেন পিছু ছাড়ছে না বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। নিজে কোনো ধরণের ফিক্সিংয়ে জড়াননি। তবে জুয়াড়ির দেয়া ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন করায় মাত্র কয়েকদিন আগে দুই বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞায় পড়লেন। এর মধ্যে এক বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা। এ ঘটনা নিয়ে কেবল বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বেই তোলপাড় আর আলোড়ন তো আর কম হলো না।
সেই রেশ কাটতে না কাটতেই সাকিব আল হাসান পেলেন আরেক দুঃসংবাদ। তবে এবারের দুঃসংবাদ ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে নয়। সম্প্রতি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরে সাকিব আল হাসান বিপুল টাকা বিনিয়োগ করে গড়ে তুলেছিলেন কাঁকড়া আর চিংড়ির খামার। তবে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল সাকিবের সাধের সেই খামার একেবারে লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেছে।
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার যে চিংড়ি আর কাঁকড়ার ব্যবসায় নাম লিখিয়েছেন সেটা অনেকেরই অজানা ছিল। তিনি নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পর এ বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে আসতে শুরু করে। সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনীর পোড়াকটলা দাতনেখালী এলাকায় ৫০ বিঘা জমির ওপর এই খামার। নাম ‘সাকিব অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড’। ইতোমধ্যে খামারের ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
আগামী বছরের যেকোন সময় এটা উদ্বোধন করার কথা ছিল। সাতক্ষীরার ক্রিকেটার সগীর হোসেন পাভেল এই খামারের দেখাশোনা করেন। খামারে শ্রমিকদের থাকার জন্য ও চিংড়ি-কাঁকড়া প্রসেসিং করার জন্য ফ্রিজিং রুমও তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কাঁকড়ার জন্য বসানো হচ্ছিল প্রায় ৩০ হাজার বক্স। ৩০ বিঘা জমিতে ছিল চিংড়ির ঘের। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এসে এসব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। ঠিক কত টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকার কম নয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জানা যায়, আইলা দুর্গত মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দাতিনাখালীতে ৫০ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা হয় কাঁকড়া উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ খামার। খামারটিতে ৩০ হাজার বাক্সে কাঁকড়া মোটাতাজা শুরু করলেও এখন তা চার লাখে উন্নীত হয়েছে। কাজ করছে দুইশ শ্রমিক। গত দুই বছরে এ খামার থেকে অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, জার্মানি, ব্রিটেন ও সিঙ্গাপুরে রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৪শ মেট্রিক টন কাঁকড়া।
চার বছর আগে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দাতিনাখালীতে সাকিব আল হাসান গড়ে তোলেন ‘সাকিব অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড’ নামের কাঁকড়ার খামার। চার বছর ধরে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এখনো পূর্ণতা পায়নি খামারটির। চলছে নির্মাণকাজ। আর তা শেষ হলেই আগামী বছরের যেকোন সময় সাকিব আল হাসান নিজে উপস্থিত হয়ে খামারটির উদ্বোধন করার কথা।