সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন নাহার রুনি হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত প্রশ্ন রেখে বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের ৮ বছর পার হলেও এখনো তদন্ত শেষ হল না। এটা কি তাহলে চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবেই তালিকাতে থেকে যাবে?
সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ হতাশা প্রকাশ করেন।
শুনানির শুরুতে আদালতের তলবে হাজির হয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খোন্দকার শফিকুল আলম বলেন, ‘এখনো তদন্ত চলমান রয়েছে। এই মামলার জব্দকৃত আলামতের ডিএনএ টেস্টের জন্য আমেরিকার একটি ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ’
তখন আদালত বলেন, ‘তাহলে কি আমেরিকায় ডিএনএ টেস্টের রেজাল্টের উপর এ মামলার ভবিষ্যত নির্ভর করছে।’ এসময় তদন্ত কর্মকর্তা হ্যা সূচক জবাব দেন।
আদালত বলেন, ‘আট বছর পার হয়ে গেল, এখনো এ মামলার তদন্ত শেষ হলো না। এদিকে এ মামলার কারণে তানভীর রহমান বিয়ে করতে পারছে না। যখনই শোনে সাগর-রুনি মামলার আসামি তখন তো কেউ বিয়ে দিতে চায় না। এ অবস্থায় আমরা কী করতে পারি?’ এমন প্রশ্ন রাখেন আদালত।
তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরোয়ার হোসেন বাপ্পী আদালতে বলেন, ‘আপনারা এই মামলার তদন্ত শেষ করতে একটা সময় সীমা বেঁধে দিতে পারেন।’
তখন হাইকোর্ট হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আট বছরের মামলার তদন্ত শেষ হলো না। এ মাসে আর কি হবে?’ পরে আদালত এই মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেন হাই কোর্ট। মামলার নথি (সিডি) নিয়ে তাকে হাজির হতে বলা হয়।
এ হত্যা মামলার আসামির তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহার চেয়ে তানভীর রহমানের নামের এক ব্যক্তির আবেদনের শুনানিতে আদালত এ আদেশ দেন।
আবেদনকারীর ক্ষেত্রে ওই মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল করা হবে না- সে বিষয়ে রুলও জারি করেন আদালত।
আদালতে তানভীরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন নাহার রুনি। দুজনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।