শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৩২ অপরাহ্ন

নতুন বছর বাজারে আসবে পুরুষের জন্মবিরতিকরণ পিল!

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ২২০ বার

নতুন বছরে বাজারে আসতে চলেছে পুরুষের জন্মবিরতিকরণ পিল। সর্বশেষ গবেষণা অনুযায়ী, পুরুষের হরমোন টেস্টোস্টেরন এবং সেজেস্টেরোন এসিটেটের সংমিশ্রণ আবিষ্কার করা হয়েছে, যার মাধ্যমে জন্মরোধ সম্ভব।

তবে, পুরুষের জন্মবিরতিকরণ পিল আবিষ্কারের এ ধারাটি নতুন নয়। ৬০ বছর আগে থেকেই বিজ্ঞানীরা এটি উদ্ভাবনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। প্রথমে এটি ব্রিটেনে উত্থাপন করা হয়েছিল। গত ২৫ বছর ধরে এমন কিছুর জন্য চেষ্টা করছিলেন গবেষকরা। এমনকি পিল প্রস্তুত আছে বলেও তারা জানিয়েছিলেন। ২০২১ সালে এটি আসবে কিনা, তা নিয়ে আশা করা হচ্ছে।

সর্বশেষ গবেষণা অনুযায়ী, পুরুষরা শীঘ্রই জন্মনিরোধের পিল গ্রহণ করতে পারবেন। জেল, পিল, মাসিক ইনজেকশনসহ বন্ধ্যাকরণ অস্ত্রোপচার- সবকিছুই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আওতায় রয়েছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণ চোখে পুরুষদের প্রজননতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ অপেক্ষাকৃত সহজ বলে মনে। অনেকে মনে করেন, এটি তাত্ত্বিকভাবে জৈবিক সরঞ্জাম হিসেবে নারীদের চেয়ে কম জটিল। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।

একজন পুরুষের জৈবিক উদ্দেশ্য হলো তার জিনগুলোকে ছড়িয়ে দেওয়া, বংশবিস্তার করা। সারাদিনজুড়ে একজন প্রজননে সক্ষম পুরুষ প্রতি সেকেন্ডে এক হাজার শুক্রাণু উৎপাদন করে, জৈবিক ক্রিয়ার সময় নির্গত করেন ২৫০ মিলিয়ন শুক্রাণু-এই বিপুল পরিমাণ শুক্রাণুর কৃত্রিমভাবে নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করা কার্যকরভাবেই কঠিন। অন্যদিকে প্রাকৃতিকভাবে একজন নারী প্রতি মাসে মাত্র একটি অথবা দুটি ডিম্বাণু নিঃসরণ করেন।

বিজ্ঞানীরা সর্বপ্রথম ১৯৫০ সালে পুরুষদের জন্য পিল তৈরির চেষ্টা করেন। স্টার্লিং ড্রাগ নামে একটি মার্কিন কোম্পানি এটি তৈরির চেষ্টা করে। গবেষকরা একটি পরজীবী বিরোধী চিকিৎসার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের চেষ্টা করেন। তারা এতে অনাকাঙ্ক্ষিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখতে পান। পুরুষ ইঁদুরের উপর করা পরীক্ষা তারা দেখতে পান, পরজীবীটি শুক্রাণু উৎপাদনের প্রক্রিয়াকে পুরোপুরি অক্ষম করে তোলে।

কারাগারে থাকা কয়েকজন পুরুষ বন্দীর উপর করা পরীক্ষায় গবেষকরা দেখতে পান, যৌগটি প্রয়োগের পর বন্দীদের শুক্রাণুর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। বন্দীদের চোরাইপথে হুইস্কি সরবরাহ করা হয় এবং সেটি পানে তাদের ভয়াবহ পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হয়। তাদের প্রচন্ড বমি হয় এবং হৃদস্পন্দন বেড়ে যায় অনেকগুণ। ফলশ্রুতিতে স্টার্লিং সেবার তাদের সেই ঔষধের প্রয়োগ বন্ধ করে দেয়।

বর্তমানে পুরুষদের কাছে জন্ম নিয়ন্ত্রণের বিকল্প হিসেবে দুটি পদ্ধতি রয়েছে। একটি কনডমের ব্যবহার অন্যটি স্থায়ী বন্ধ্যাকরণ অস্ত্রোপচার। বন্ধ্যাকরণ অস্ত্রোপচারে পুরুষের শুক্রাণু বহনকারী টিউবটি কেটে ফেলা হয় বা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞান নতুন আশা দেখাচ্ছে, যেখানে গর্ভনিরোধের জন্য আবিষ্কৃত জেল নতুন আশা দেখাচ্ছে।

ইতিমধ্যেই জেলটি ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের কিছু দম্পতির মাঝে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। জেলটি মূলত পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরন এবং সেজেস্টেরোন এসিটেটের সংমিশ্রণ। নেস্টোরন টেস্টিসে শুক্রাণুর উৎপাদন এমন প্রক্রিয়াতে কমিয়ে ফেলে যে তা পুরুষের লিবিডোকে (যৌনক্রিয়া) প্রভাবিত না করেই শুক্রাণুর উৎপাদন কার্যকরভাবে প্রতিহত করে। এটি ব্রিটেনের এডিনবরা ইউনিভার্সিটি এবং ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট কর্তৃক পরীক্ষিত হচ্ছে।

পরীক্ষায় বলা হয়েছে, পুরুষরা জেলটি তাদের কাঁধে এবং বাহুতে প্রতিদিন মাখবেন। এতে করে ত্বকের নিচে হরমোন শোষিত হবে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সেটি ধীরে ধীরে রক্তস্রোতে মিশে যেতে থাকবে। পরে সেটি বীর্যের কার্যকারিতা বন্ধ করে দেবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com